ভারতের সেই প্রেমাকান্ত এখন বরগুনার তালতলীতে

প্রেমের টানে ভারতের তামিলনাড়ু থেকে বাংলাদেশে চলে এসেছিলেন নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ার এবং নৃত্যশিল্পী প্রেমকান্ত। বাংলাদেশে আসার পর বরিশালে একবার দেখাও হয়েছিল ওই কলেজপড়ুয়া প্রেমিকার সঙ্গে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রেম ধরা দেয়নি প্রেমকান্তের কাছে। প্রেমিকার দেখা পেতে পুরো এক সপ্তাহ চষে বেড়িয়েছেন বরিশাল নগরীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। আর তাই আর একবার প্রমিকার দেখা পেতে প্রেমকান্ত এবার ‘প্রেমিকার’ জেলা বরগুনায় পৌঁছেছেন। শুক্রবার (৫ আগস্ট) তিনি বরগুনায় যান। বর্তমানে তালতলী উপজেলার জেলা পরিষদের ডাক বাংলোতে অবস্থান করছেন তিনি।
সম্প্রতি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতীয় এই যুবক জানিয়েছেন, প্রেমিকা ও তার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করা ছাড়া তিনি নিজ দেশে ফিরবেন না। তিনি দাবি করেন, ‘২৪ জুলাই বাংলাদেশে আসি কেবল প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করার জন্য। এরপর তিনবার আমাদের দেখা হয়। কিন্তু তারপর থেকেই সে আমাকে এড়িয়ে যেতে শুরু করে। কিন্তু কি কারণে তা আমি জানি না। বিষয়টি বিস্ময়কর। তিন বছরের সম্পর্ক কোনও ছেলেখেলা না। কেবল তার কথা ভেবেই আমি এ দেশে এসেছি। তাকে ছাড়া আমার ভারতে ফেরার কোনও সুযোগ নেই। আমার একমাত্র লক্ষ্যই হলো তার সঙ্গে দেখা করা। আমি তাকে বিয়ের জন্য জোর করছি না। আমাকে নির্মমভাবে মারা হয়েছে তারপরও আমি পিছু হটব না।’
প্রেমকান্তের অভিযোগ, মেয়েটির অন্য প্রেমিকের হাতেও মার খেতে হয়েছে তাকে। ছিনিয়ে নেওয়া হয় টাকা-পয়সাও। তবে ভারতীয় এই যুবক যাকে প্রেমিকা হিসেবে দাবি করছেন সেই তরুণী দাবি করেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কতজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়। সেভাবে ওই ছেলের (প্রেমকান্ত) সঙ্গেও বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিয়ের প্রস্তাব দিলে প্রত্যাখ্যান করি। তখন সে দেখা করতে বাংলাদেশ আসবে বলে জানায়। তাকে বারবার নিষেধ করি। কিন্তু কোনোভাবেই তা মানতে নারাজ। একপর্যায়ে বরিশালে এসে ঝামেলা শুরু করে। সে কলেজের সামনে এসে ঘোরাঘুরি করে খুঁজতে থাকে। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমে বলে, আমি নাকি তাকে লোক দিয়ে মারধর করিয়েছি। তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি যেমন মিথ্যা, তাকে অন্য লোক দিয়ে পিটিয়েছি সেটাও মিথ্যা।’
ওই তরুণী আরো দাবি করেন, এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ তাকে ডেকে নেন। সেখানে সে ও তার বাবা-মাও ছিলেন। পুলিশ প্রেমকান্তকে জিজ্ঞাসা করেছে, তার কোনও অভিযোগ আছে কি—না, সে বলেছে ‘না, কোনও অভিযোগ নেই’। এরপর পুলিশ তাকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়। ওই সময় থানায় অভিযোগ দেওয়ার জন্য বললে পুলিশ তরুণীকে সান্ত্বনা দিয়ে জানায়, প্রেমকান্তকে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে এ নিয়ে আর কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু সে ঢাকায় না গিয়ে বরিশালে ঘোরাফেরা করে মিথ্যা কথা রটাচ্ছে। ওই তরুণী ও তার বাবা ভারতীয় এই যুবকের শাস্তি দাবি করেন। তালতলী থানার ওসি সাখাওয়াত তপু বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে প্রেমকান্তের কথা হয়েছে। সে তালতলী থেকে তার দেশের উদ্দেশে চলে যাবে।’
জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই প্রেমকান্ত ওই তরুণীর সঙ্গে দেখা করতে ভারত থেকে বরিশাল নগরীতে আসেন। প্রেমকান্তের দাবি, ২০১৯ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বরগুনার কলেজপড়ুয়া তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয়। প্রথমে প্রেমকান্তের ভিডিওতে নিয়মিত লাইক ও কমেন্ট করতেন। এরপর দুজনের মধ্যে অনলাইনে যোগাযোগ হয়। সেখান থেকে প্রেম হয়। তরুণীর পরিবারের সঙ্গেও সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে। প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে অনেক আগেই তিনি বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে আর আসা হয়নি। গত ২৪ জুলাই তিনি বরিশালে আসেন। এরপর তিনি শহরের একটি হোটেলে ওঠেন। পরদিন দুপুর ১২টায় বরিশালের একটি কলেজের সামনে দুজন দেখা করেন। দুপুরে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় একসঙ্গে খাবার খান। ওই দিন বিকালে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে পুনরায় তারা দেখা করেন, কথা বলেন। এ সময় তরুণীর সঙ্গে তার কয়েকজন বান্ধবীও ছিল।
পরবর্তীতে ২৭ জুলাই তারা দুজন পুনরায় শহরে ঘুরতে বের হন। কাশিপুর এলাকায় গেলে এক যুবক দাবি করেন, তার সঙ্গে ওই মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক আছে। এরপর ওই যুবক প্রেমকান্তকে মারধর করেন। এ সময় তার কাছ থেকে টাকাও ছিনিয়ে নেন। মারধরের শিকার হয়ে তাকে তিন রাত থানায় থাকতে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: