ট্যুরিস্ট পুলিশের বিরুদ্ধে পর্যটককে ‘মারধরের’ অভিযোগ

প্রকাশিত: ১২ আগষ্ট ২০২২, ০৩:২৭ পিএম

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ‘মোটর সাইকেল নিয়ে সৈকতে প্রবেশ’ করায় এক পর্যটককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ট্যুরিস্ট পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী নাজমুল হাসান নামের এ পর্যটক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। নাজমুল হাসান কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালী থানার সুজানগর এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে।

শুক্রবার (১২ আগষ্ট) বেলা ১২ টায় সাংবাদিকদের এ ধরণের অভিযোগের তথ্য নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান।

অভিযোগপত্রের বরাতে আবু সুফিয়ান বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালী থানার সুজানগর এলাকার নাজমুল হাসান নামের এক কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে মোটর সাইকেল নিয়ে ঘুরতে যান। এ সময় ট্যুরিস্ট সদস্যরা বাধা দিলে ওই পর্যটকের সঙ্গে বাদানুবাদ ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা মারধর করেছেন বলে অভিযোগ ওই পর্যটকের।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকালে ভূক্তভোগী পর্যটক জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

আবু সুফিয়ান জানান, অভিযোগের বিষয়টি ট্যুরিস্ট পুলিশের সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে। ঘটনার ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতেও পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার ব্যাপারে ভূক্তভোগী পর্যটক নাজমুল হাসান এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও কোন ধরণের সাড়া দেননি। তবে প্রশাসনের নিকট দেওয়া লিখিত একটি অভিযোগপত্র প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, নাজমুল তার এক ভাগিনা মো. শান্ত’কে নিয়ে কক্সবাজার আসেন বুধবার (১০ আগস্ট)। পরে হোটেল-মোটেল জোনের ‘ড্রিম গেস্ট’ নামের এক আবাসিক হোটেলে উঠেন। পরদিন বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫ টায় তারা মোটর সাইকেল নিয়ে সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট ঘুরতে যান। এসময় জনৈক ফটোগ্রাফার তাদের জানায়, সৈকতে মোটর সাইকেল নিয়ে প্রবেশ ও ঘুরাঘুরি করা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

“এরপরই নাজমুল ও তার ভাগিনা মোটর সাইকেল সহ সৈকত এলাকা থেকে ফিরছিল। এসময় সেখানে দায়িত্বরত জনৈক ট্যুরিস্ট পুলিশের কর্মকর্তা নাজমুলের কাছ থেকে হেলমেট এবং ফটোগ্রাফারের ক্যামেরা নিয়ে নেন।”

অভিযোগে আরও বলা হয়, “ঘটনার প্রেক্ষিতে নাজমুল ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেও তাকে ট্যুরিস্ট পুলিশের কর্মকর্তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে ৪/৫ টি আঘাত করেন।”

ট্যুরিস্ট পুলিশের এ ধরণের ন্যাক্কারজনক আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগে ভূক্তভোগী নাজমুল মন্তব্য করেন, অনাকাঙ্খিত ভুলের ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে পুলিশ সদস্যের কাছে তিনি ক্ষমা চান। এরপর ওই পুলিশ সদস্য উত্তেজিত হয়ে হাতে লাঠি দিয়ে পর্যটককে বেদড়ক মারধর করেছেন।

এদিকে ঘটনার ব্যাপারে ভূক্তভোগী পর্যটকের লিখিত অভিযোগটি জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা অবহিত করেছেন বলে স্বীকার করেছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।

রেজাউল বলেন, “বৃহস্পতিবার সকালে জনৈক পর্যটককে মোটর সাইকেল সহ সৈকত এলাকায় ঘুরতে দেখে দায়িত্বরত ট্যুরিস্ট সদস্যরা বিধি-নিষেধের ব্যাপারে অবহিত করেন। এরপরও নির্দেশনা অমান্য করে ওই পর্যটক মোটর সাইকেল নিয়ে সৈকতে ঘুরতে চেষ্টা করেন। পরে ট্যুরিস্ট সদস্যরা ওই পর্যটককে বাধা দিলে এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা ওই পর্যটককে জোর করে সৈকত এলাকা থেকে তুলে দেন।”

তারপরও পর্যটককে হয়রানির অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: