পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার প্রমাণ: স্পিকার
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক ও কারিগরি সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।আজ শনিবার (১৩ আগস্ট) জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে ইউএনডিপি’র এসিসটেন্ট সেক্রেটারি জেনারেল কানি ভিগনারাজাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণের সাথে বৈঠককালে স্পিকার এ সব কথা বলেন।
স্পিকার বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের স্ট্যাটাস থেকে উত্তোরণের পর বাংলাদেশের সাথে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার সম্পর্কে বহুমাত্রিকতা যোগ হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন আর বৈদেশিক সাহায্য নির্ভর নয়। বর্তমানে বাংলাদেশের সেক্টর ভিত্তিক দক্ষতা বৃদ্ধিসহ বহুমাত্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষে আরো বেশী কারিগরি সহযোগিতা প্রয়োজন। এসময় কানি ভিগনারাজা স্পিকারের সাথে একমত পোষণ করে বলেন, ইউএনডিপিও তাই জাতিসংঘের নীতির আলোকে বাংলাদেশে সেক্টর ভিত্তিক কারিগরি সহযোগিতা জোরদার করতে কাজ করে যাচ্ছে। নতুন পরিস্থিতিতে কার্বন ট্র্যাডিং, সকল প্রকার দূষণ প্রতিরোধ কিংবা সবুজ (পরিবেশ বান্ধব) উৎপাদন প্রক্রিয়া জোরদার করার ক্ষেত্রে দক্ষতা বিনিময়ের মতো ইস্যূগুলোতে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ একসাথে কাজ করতে পারে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। সংসদ সদস্যগণও এ সব কর্মকান্ডে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। সমকালীন বিশ্বব্যবস্থায় নতুন নতুন প্রযুক্তি আর জ্ঞান বিনিময়ের মতো বিষয়গুলোকে ত্বরান্বিত করার লক্ষে ইউএনডিপি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাথে কাজ করতে পারে। তিনি বলেন, সংসদ সদস্যগণ যার যার নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের লক্ষে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে সমকালীন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন এলাকার উন্নয়ন চাহিদাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে। আর এই লক্ষে সংশ্লিষ্ট এলাকার হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত সংসদ সদস্যগণের নিকট সহজলভ্য করতে হবে। এই লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা, বিশেষ করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সহযোগিতা নিয়ে ‘মাই কনস্টিটিউএনসি’ এ্যাপ প্রবর্তন করেছে। উক্ত এ্যাপ প্রবর্তনে ইউএনডিপি কারিগরি সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। এই জন্য স্পিকার ইউএনডিপি’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সভায় উপস্থিত ইউএনডিপি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ফ্রান্সিন পিকাপ স্পিকারকে অবহিত করেন যে, উক্ত এ্যাপ বাস্তবায়নের বিষয়ে ইউএনডিপি কারিগরি সহযোগিতা জোরালোকরণে কাজ করে যাচ্ছে। স্পিকার উক্ত এ্যাপ বাস্তবায়নের পেছনে চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বলেন, এই এ্যাপে নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক হালনাগাদ পরিসংখ্যানগুলোর প্রতিফলন থাকতে হবে। যাতে করে সংসদ সদস্যগণ উক্ত এ্যাপের মাধ্যমে স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকার সেক্টর ভিত্তিক তথ্য-উপাত্তগুলো পেতে পারেন।
নিজ নির্বাচনী এলাকার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে স্পিকার বলেন, জনশুমারী সংক্রান্ত তথ্যের পাশাপাশি রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ কিংবা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সম্পর্কিত পরিসংখ্যানও এই এ্যাপে থাকতে হবে। এতে করে সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য বুঝতে পারবেন, কোন এলাকার কোন রাস্তা বা ব্রীজের উন্নয়ন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করতে হবে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবকাঠামোর তুলনায় ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা কিংবা ছাত্র-ছাত্রীর ঝরে পড়ার হার-এসব হালনাগাদ তথ্য তার কাছে থাকলে তিনি সে সব পরিস্থিতি উন্নয়নে কাজ করতে পারবেন। এতে টিকা প্রদান, স্বাস্থ্য, মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত থাকাও জরুরী। সমকালীন পরিস্থিতিতে পরিকল্পনা হতে হবে তথ্য-উপাত্ত ভিত্তিক এবং সুনির্দিষ্ট চাহিদা ভিত্তিক। কোনভাবেই অনুমান নির্ভর নয় বলে মতামত ব্যক্ত করেন তিনি।
কানি ভিগনারাজা স্পিকারের সাথে একমত পোষণ করে বলেন, এই এ্যাপ বাস্তবায়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। জাতীয় সংসদের চাহিদার প্রেক্ষিতে এটিকে আরো ইউজার-ফ্রেন্ডলি করার লক্ষে কার্যক্রম নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, কার্বন নিঃসরণের মতো ইস্যূগুলো এখন খুব ভাইটাল হচ্ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ এ নিয়ে কাজ করছে। বিভিন্ন ফোরামে জলবায়ু অর্থায়ন সংক্রান্ত আলোচনা চলছে। বাংলাদেশকে এসব বিষয়ে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে হবে। পার্লামেন্টে এ সব বিষয়ে আলোচনাকে উৎসাহিত করতে হবে।
স্পিকার বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ এসব বিষয়ে সংসদ সদস্যদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। প্রতি বছর বাজেট অধিবেশন চলাকালীন সংসদ সদস্যগণকে সেক্টর ভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করার লক্ষে বাজেট এনালাইসিস ও মনিটরিং ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে। এই বছর এই ইউনিট আটটি বিষয়ের উপর ব্রিফিং করেছে। এই কাজে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করছে। ইউএনডিপি এই আদলে দক্ষতা উন্নয়নমূলক কোন কার্যক্রম গ্রহণ করলে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ স্বাগত জানাবে। উক্ত বৈঠকে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের যুগ্মসচিব এম এ কামাল বিল্লাহ এবং বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কাউন্সিলর শাহানারা মনিকা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: