শিক্ষিকার মৃত্যুর জন্য দায়ী কে, ফেসবুকে তুমুল আলোচনা

প্রকাশিত: ১৪ আগষ্ট ২০২২, ১১:২৫ এএম

আলোচিত নাটোরের সেই অসম প্রেমের পরিসমাপ্তি ঘটল আজ। বিয়ের প্রায় ৬ মাসের মাথায় খাইরুন নাহার নামে সেই শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে শহরের বলারিপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওই শিক্ষিকার স্বামী মামুনকে (২২) আটক করেছে পুলিশ।

শিক্ষিকা খাইরুন নাহার জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় পৌর এলাকার মো. খয়ের উদ্দিনের মেয়ে এবং উপজেলার খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। মামুন আমার খারাপ সময় পাশে থেকে উৎসাহ দিয়েছে এবং নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছে। পরে দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই।

হঠাৎ করেই আজ থেমে গেলো তাদের সুখের গন্তব্য। মাত্র ছয় মাস আগে মামুন নামের কলেজছাত্রকে বিয়ে করা অধ্যাপক মোছা. খাইরুন নাহারের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এখন এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা জানতে আটক করা হয়েছে স্বামী মামুন হোসাইনকে। এর আগে গত ৩১ জুলাই তাদের বিয়ের ব্যাপারটি জনসম্মুখে এলে সামাজিকমাধ্যমসহ দেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় খবরটি প্রচার কার হয় এবং দেশজুড়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এবার সেই শিক্ষিকার মৃত্যু নিয়েও ফেসবুক বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

রাজিব হাসান তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, কলেজ ছাত্রকে বিয়ে করা সেই শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি হয়তো আত্মহত্যা করেছেন।

প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। মামুন আমার খারাপ সময় পাশে থেকে উৎসাহ দিয়েছে এবং নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছে। পরে দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই। নতুন করে বাঁচতে শেখার সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার কে করল? আমার কেবলই মনে হচ্ছে, তার মধ্যে হতাশার পুরোনো ক্ষত খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে আবার রক্তাক্ত করেছে সামাজিক মাধ্যমের ইতরগুলো। যারা ছাত্রকে বিয়ে করল শিক্ষিকা—এটা নিয়ে হাস্যরসিকতা করেছে। বিদ্রুপ করেছে। অপমানের বিষমাখা তির ছুড়েছে একের পর এক। চারপাশ থেকে ভেসে আসা কটু কথাগুলো হয়তো আর নিতে পারেননি তিনি।

ফেসবুকে এখন চলছে ইতরপনার মহা-উৎসব। এখানে একটা শ্রেণি আসেই অন্যকে অপমান করে মজা লুটতে। একবারও ভেবে দেখে না এর পরিণতি কী হতে পারে। একেক দিন একেকজনকে বানানো হয় শিকার। এরা অসভ্য, বর্বর, আমার চোখে আজ থেকে এরা খুনি।
শেষ পর্যন্ত হয়তো পুলিশের রিপোর্টে লেখা থাকবে ওই শিক্ষিকা আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু আমি বলব, খুব ঠান্ডা মাথায় তাকে খুন করা হয়েছে। আর খুনিরা ঘুরছে আপনার-আমার আশপাশেই।

এছাড়া বিডি২৪ লাইভের ফেসবুক পেজে অনেকে নানা ধরনের মন্তব্য করেছেন এর মধ্যে- রহুল আমিন নামে একজন লিখেছেন, এর জন্য দায়ী আমাদের নিকৃষ্ট মন মানসিকতা ও সমাজ ব্যবস্থা। মোহাম্মদ ইকবাল নামে একজন লিখেছেন, ফেইসবুক না থাকলে মানুষটি হয়তো আরো কিছু দিন পৃথিবীর আলো দেখতো। এখন ট্রল করা মানুষগুলো এসে নীতি বাক্য শুনাবে। সানোয়ার হোসাইন নামে একজন লিখেছেন, এ সমাজ উনাকে বাঁচতে দিল না! খুবই দুঃখজনক বিষয়!

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: