দেশি মুরগির ১ পিস ডিমের দাম সাড়ে ১৭ টাকা, চিনি ৮৮

প্রকাশিত: ১৪ আগষ্ট ২০২২, ০৮:১৪ পিএম

জ্বালানী তেলের দাম বাড়ার পর থেকেই হুহু করে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। এ যেন দাম বাড়ানোর প্রতিযোগীতা। ঘন্টায় ঘন্টায় পণ্যের দাম বাড়ছে। ময়মনসিংহেও চলছে এই প্রতিযোগী। এক হালি দেশি মুরগির ডিম ৭০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি দেশী পিস মুরগির ডিমের দাম সাড়ে ১৭ টাকা। চিনি দশ দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৮ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮৮ টাকায়। এছাড়াও সবপ্রকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। ঊর্ধ্বগতির বাজার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন-আয়ের মানুষ। এজন্য বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোড়দার করার দাবি জানিয়েছেন অনেকে।

রবিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে ময়মনসিংহ মহানগরীর প্রধান কাঁচাবাজার মেছুয়া বাজারে ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। ওই বাজারের ডিম বিক্রেতা নিতাইপাল বিডি২৪লাইভকে বলেন, গত সপ্তাহের ব্যবধানে সবপ্রকার ডিমের দাম হালিতে ১০ টাকা করে বেড়েছে। তিনি বলেন, দেশী মুরগীর ডিমের হালি ৭০, ফার্মের মুরগীর ডিমের হালি ৫০, হাসের মুরগীর ডিম ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

একই বাজারের সবজি বিক্রেতা তামিম হাওলাদার বলেন, জ্বালানী তেলের দাম বাড়ার পর থেকে বাজারে পণ্যের দাম অটো বেড়ে যাচ্ছে। এক কথায় ঘন্টায় পণ্যের দাম বাড়ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে বেশ কয়েক প্রকার সবজির দাম বেড়েছে।

তিনি বলেন, কাঁচা মরিচ ২০০, পেপে ২৫ টাকা, মুখি কচু ৫০ টাকা, পাতা কপি ২০ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা, করলা ২০ টাকা বেড়ে ৮০, দুন্ধল ৪০, কাকরুল ৫০, সিম ২০০, শশা ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, গাজর ২০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকা, টমেটো ২০ টাকা ১৪০ টাকা, বরবটি ৬০, কুমড়া ৪০, লাউ ১০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা, ফুলকপি ৪০, ঝিঙা ৬০, চিচিঙ্গা ৫৫, লেবু ১০ হালি বিক্রি হচ্ছে।

ওই বাজারের সুরুজ আলী বলেন, গত কয়েকদিন যাবত আমদানী কম। তাই দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, দেশী পেয়াজ ৫ টাকা বেড়ে ৪০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেয়াজ ৫ টাকা বেড়ে ৩৫, দেশি আলু ৫ টাকা বেড়ে ৩৫ টাকা, ইন্ডিয়ান আলু ৩০, আদা ১০ টাকা বেড়ে ৮০, রসুন ১০ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা, জাম আলু ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

মিলন বালা পাল স্টোরের বিক্রেতা কাঞ্চন পাল বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সব প্রকার পণ্যের দাম বেড়েছে। তাই, কাঁচামাল আমদানী করতে পারছে না ব্যবসায়ীরা। তাই, সয়াবিন তেলের দাম ১০ টাকা বেড়েছে। তবে, সরকার থেকে দাম বাড়ানোর কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। তিনি বলেন, সয়াবিন তেল ১৯৬ টাকা, পাম তেল ১৫৩ টাকা, কোয়ালিটি ১৭০ টাকা, সরিষার তেল ২৬০ টাকা, নারিকেল তেল ৬০০ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন তেল ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

ওই বাজারের ইব্রাহিম বলেন, বাজারে সব প্রকার পন্যের দাম বেড়েছে। কি কারণে দাম বেড়েছে তা সবারই জানা। তা আবার নতুন করে বলার কিছু নাই।

তিনি বলেন, মাসকলাই ১০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা, ভাঙা মাসকলাই ২০ টাকা বেড়ে ১৩০ টাকা, ভাঙা মসুর ডাল ৫ টাকা ৯৫ টাকা, হাইব্রীড মসুর ডাল ৫ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ৮ টাকা ১৩০, মুগডাল ১২০ টাকা, ছোলা বুট ৫ টাকা ৬৫ টাকা, মটর ৫ টাকা বেড়ে ৬৫ টাকা, বুটের ডাল ৬ টাকা বেড়ে ৭০, জিরা ৭০ টাকা ৪৭০ টাকা কেজি, লং কেজিতে ৩০০ টাকা বেড়ে ১৩০০ টাকা, মিষ্টি সজ ১০ টাকা বেড়ে ২১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

মোহাম্মদ আলী বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে সব প্রকার মুরগির দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, ব্রয়লার ৪০ টাকা বেড়ে ২০০ টাকা, সোনালী ৩০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকা, সাদা কক ৩০ টাকা বেড়ে ২৭০ টাকা, লেয়ার ৩০ টাকা বেড়ে ৩০০ টাকা।

মাছ বাজারে মাছ বিক্রেতা সফিকুল ইসলাম বলেন, তেলের দাম বাড়ার পর গাড়ি ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় মাছের আমদানী কম। তাছাড়া, মাছের খাদ্যের দাম বাড়ায় চাষিরাও মাছ বাজারে আনছেন না। এই কারণে সব প্রকার মাছেই কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে।

তিনি বলেন, প্রতি কেজি চিকরা মাছ ৭০০ টাকা, বাতাসি মাছ ৭৫০ টাকা, কাচকি মাছ ৪০০ টাকা, ছোট বোয়াল ৫০০ টাকা,বাইম মাছ ৮০০ টাকা, ছোট চিংড়ি ৬০০, রুই মাছ ৪০০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০ টাকা, পাঙ্গাস মাছ ১৩০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০ টাকা, গুলসা মাছ ৫০০ টাকা, টেংরা মাছ ৪০০ টাকা, শিং মাছ ৩৫০ টাকা, কই মাছ ১৫০ টাকা, সিলভার মাছ ২২০ টাকা, রাজপুটি ২৪০ টাকা, বাউশ মাছ ৪০০ টাকা, মৃগেল মাছ ৩০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

মাংস বিক্রেতা মোঃআকবর মিয়া বলেন, গরুর মাংসের দাম বাড়েনি। তবে, খাসির মাংসের দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, গরুর মাংস ৬৫০, খাসির মাংস ৯৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

জেলা ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের বলেন, দ্রব্য মুল্য নিয়ন্ত্রনে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছ। এই সপ্তাহেও অভিযান পরিচালনা করা হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: