একের পর এক চাকরির প্রস্তাব পাচ্ছেন ঢাবি ছাত্র রবি

প্রকাশিত: ১৯ আগষ্ট ২০২২, ০৩:১৬ পিএম

সম্প্রতি ফেসবুকে নিজের চা-শ্রমিক মাকে নিয়ে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সন্তোষ রবি দাস। যেখান থেকে জানা যায়, মৌলভীবাজারের শমসেরনগরে ফাঁড়ি কানিহাটি চা বাগানের এক শ্রমিক পরিবারে জন্ম রবি দাস অঞ্জনের। জন্মের মাস ছয়েকের মাথায় বাবাকে হারিয়েছিলেন। মা কমলি রবিদাস চা বাগানের শ্রমিক। তখন মজুরি পেতেন দৈনিক ১৮ টাকা। সেই সময় ছেলেকে অন্যের বাসায় রেখে তিনি চলে যেতেন চা বাগানে।

ক্যামেলিয়া ডানকান ফাউন্ডেশন স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন সন্তোষ। ২০১৩ সালে ভর্তি হন ঢাকার বিএএফ শাহীন কলেজে। সন্তোষের মায়ের মজুরি ছিল তখন ১০২ টাকা। তিনি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ছেলের ভর্তির টাকা, ইউনিফর্ম আর বই-খাতা কিনে দিয়েছিলেন। ২০১৪ ডিসেম্বরে ছিল সন্তোষের এইচএসসির নিবন্ধন। তার মা কমলি রবি দাস তখন ৫০ টাকার একটি নোট দিয়ে চোখের জল ফেলতে ফেলতে বলেছিলেন, ‘দেহি, কেউ ধার দেয়নি রে, বাপ। ’

কলেজের এক শিক্ষকের কাছ থেকে ধার নিয়ে সেবার নিবন্ধন ফি দেওয়া হয়। এইচএসসির পর ভর্তি পরীক্ষার কোচিং। কমলি তখন আবার ঋণ নিলেন ব্যাংক থেকে। লোনের কিস্তি পরিশোধে বাসা থেকে অনেক দূরে গিয়ে বালু শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এভাবে খেয়ে না খেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে পড়ার সুযোগ পেলেন সন্তোষ।

মা-ছেলের এই সংগ্রামের গল্প নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে তা ফেসবুকে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছে এটি। প্রতিবেদনটি শেয়ার দিয়ে অনেকে এই মাকে ‘স্যালুট’ জানিয়েছে।

এই ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন চাকরির প্রস্তাব পাচ্ছেন রবি। বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছে তিনি নিজেই। রবি বলেন, ‘স্নাতকোত্তর শেষ করার পর বিসিএসসহ বিভিন্ন ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা দিয়েছি। প্রাইমারি পরীক্ষায় লিখিততে উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষাও দিয়েছি। কিন্তু কোনোটারই ফল প্রকাশ হয়নি। আমার পোস্ট ভাইরাল হওয়ার পর জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আমাকে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে।’

ঢাবির এই ছাত্র আরও বলেন, আমার সঙ্গে জেলা প্রশাসন থেকেও যোগাযোগ করা হয়েছে। হয়ত কোনো উচ্চ বিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতার প্রস্তাব থাকতে পারে। আগামী রোববার বাড়ি গেলে জানতে পারব। এছাড়া আরও কিছু ব্যক্তি ও কোম্পানির পক্ষ থেকে চাকরি দিতে বায়োডাটা চাওয়া হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: