মৃত্যুর আগে ছেলেকে ফোনে যা বলেছিলেন ছাত্রকে বিয়ে করা কলেজ শিক্ষিকা

প্রকাশিত: ২০ আগষ্ট ২০২২, ১১:০১ এএম

নাটোরের গুরুদাসপুরে কলেজছাত্র মো. মামুন হোসেনকে (২২) বিয়ে করা সেই শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের (৪০) মৃত্যুর দিন রাতে শেষবারের মতো ছেলে সালমান নাফিস বৃন্তের সঙ্গে কথা  বলেছিলেন । ছেলের সঙ্গে ৪০ সেকেন্ডের কথোপকথনে তিনি ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছিলেন। এরপর ছেলে তার সৎবাবা মামুন হোসাইনের (২২) সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। এতে শেষ পর্যন্ত কোনো কাজ হয়নি।

গত শনিবার (১৩ আগস্ট) ঘটনার ওই দিন রাত ১১টার কিছু সময় আগে মাকে ফোন দিয়েছিলো  বৃন্ত। এ সময় তার মা জানান, তিনি দুই এমজি পাওয়ারের আটটি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়েছেন। এর বাইরে মা আর কথা বলতে পারেননি। এরপর সংযোগ কেটে মামুনকে ফোন দেন বৃন্ত। এ সময় মামুন তাকে বলেন, দুই-চারটা কথা হলেই খায়রুন ঘুমের ট্যাবলেট খায়। বৃন্তকে মায়ের সঙ্গে কথা বলতে বলেন মামুন। পরদিন সকালে মামুন তাকে ফোন দিয়ে আত্মহত্যার বিষয়টি জানান।

মামুনের কথাগুলোকে মিথ্যা বলেও দাবি করেছে মা হারানো এই ছেলে। বৃন্ত আরো বলে , মামুন যে কথাগুলো বলেছেন তা মিথ্যা। মূলত তার মায়ের কাছ থেকে মোটরসাইকেল কেনাসহ সব কিছুর জন্য টাকা নিতেন মামুন। এছাড়া সবসময় তার মাকে মানসিক চাপে রাখতেন। তার মা তাকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দিতে চাইলে মামুন নিষেধ করেন। ওই বিষয় নিয়ে ওই রাতে তার মায়ের সঙ্গে মামুনের ঝামেলা হয়েছিল। মামুন হয় তার মাকে হত্যা করেছেন অথবা আত্মহত্যায় উৎসাহ দিয়েছেন। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের দাবি জানান তিনি।বৃন্ত জানান, তিনি রাজশাহী সিটি কলেজে এইচএসসি প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী। তার ছোটভাই অর্ক তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।

তবে খায়রুনের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেছে অভিযুক্ত কলেজছাত্র মামুন। আসামিপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার স্বপন জানান, খায়রুনের সঙ্গে মামুনের স্বাভাবিক সম্পর্ক ছিল এমন দাবি করেছেন মামুন। কিন্তু কী কারণে কীভাবে খায়রুন মারা গেলেন তা মামুন জানেন না। তিনি আদালতে বিষয়গুলো তুলে ধরে জামিন চাইলেও বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে  নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, সিআইডির ক্রাইম ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ছায়া তদন্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এছাড়া জেলা পুলিশ ও র‍্যাব মাঠে কাজ করেছে। ময়নাতদন্তসহ সংশ্লিষ্ট তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা তা তদন্তের পর জানা যাবে।

এর আগে গত রোববার সকাল ৭টায় নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের (৪০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে হত্যা না আত্মহত্যা বিষয়টি নিশ্চিত হতে ভবনের অন্য বাসিন্দারা স্বামী মামুনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। মামুন-নাহার দম্পতি নাটোর শহরের বলারীপাড়ার হাজী নান্নু মোল্লা ম্যানশনের চারতলায় ভাড়া থাকতেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: