সিজারের সময় কিডনি নালী কর্তন, গুরুত্বর অসুস্থ প্রসুতি

ছবি - প্রতিনিধি
কামরুল হাসান নিরব, ফেনী থেকে: ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার এয়াকুবপুর ইউনিয়নের করমউল্যাহপুর গ্রামের শাহাদত হোসেনের স্ত্রীর প্রসূতির সময় ভুয়া ডিগ্রি ধারী চিকিৎসক কর্তৃক প্রসূতী নারীর মৃত্যু ঘটে। এ বিষয় একাধিক অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দায়ের করা হলেও তার কোন ফলাফল মিলে নি। অভিযোগ সূত্র এবং প্রসূতি নারীর স্বামীর বক্তব্যে জানা গেছে, গত ৩০ জুন রাতে শাহাদাত’র স্ত্রী প্রচন্ড প্রসব বেদনার সৃষ্টি হলে তিনি দ্রুত উপজেলাধীন ফাজিলের ঘাটে আয়েশা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসার জন্য তার স্ত্রীকে ভর্তি করান। এসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহুল ডিগ্রি ধারী চিকিৎসক চম্পা কুন্ডের পরামর্শ নিতে বলেন।
চম্পা কুন্ড দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। এরপর তিনি বলেন’ তার স্ত্রী র নরমাল ডেলিভারি সম্ভব নয়। তাকে দ্রুত অস্ত্র প্রাচার করতে হবে।’ সিজারের পর পরই তার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। প্রসাবের রাস্তা হতে ঘনঘন প্রসাব বের হয়, এরপর জ্বর, সর্দিসহ নানান রোগে উনার স্ত্রী দুর্বল হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিজার করতে গৃহবধূর স্বামীর কাছ থেকে একটি সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর নেন। গত ২৪ জুলাই ফেনী জেনারেল হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। এ সময় আলট্রাসনোগ্রাফিতে ধরা পড়ে কিডনির নালি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। পরে ৩ আগস্ট রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেখান থেকে রিলেজ দিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে গৃহবধূর স্বামী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘চিকিৎসক চম্পা কণ্ডু ডিগ্রিধারী বিশেষজ্ঞ নন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হলে এত বড় ভুল করতেন না। চিকিৎসকের ভুলের কারণে দীর্ঘদিন ধরে আমার স্ত্রীর অনবরত প্রস্রাব হচ্ছে এবং কোমরে ব্যথাসহ জ্বরে ভুগছেন। আমার স্ত্রী শারীরিকভাবে প্রায় অক্ষম। তাঁর চিকিৎসা করতে করতে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির মধ্যে রয়েছি।’
শাহাদত হোসেন আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে চিকিৎসক চম্পা কুণ্ডুকে জানালেও তিনি গুরুত্ব না দিয়ে ঢাকা বা চট্টগ্রামে নিয়ে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা দিতে বলেন। কিন্তু সেখানে কিডনিবিষয়ক চিকিৎসার খরচ ৪-৫ লাখ টাকার মতো পড়বে। তাই আর্থিক সংকটে চোখের সামনে স্ত্রীর এমন করুণ অবস্থা দেখতে হচ্ছে। কী করব বুঝতে পারছি না। আমার স্ত্রীর এই অবস্থার জন্য ওই চিকিৎসকের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।’
শাহাদত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘বর্তমানে ওই চিকিৎসক এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা সবাই একজোট হয়ে না না কথা বলে আমাদের হয়রানি করছেন। কিন্তু কী করলে আমার স্ত্রী ফের সুস্থ জীবনে ফিরবেন, সে বিষয়ে কোনো পরামর্শ দিচ্ছেন না।’
ভুক্তভোগীর মেয়ে ফাহমিদা নাজনিন ফারিন বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরামর্শে ওই ডাক্তারের কাছে সিজার করানো হয়। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা খারাপ আচরণ করে।
অভিযোগের বিষয়ে চিকিৎসক চম্পা কণ্ডু বলেন, ওই রোগীর বাচ্চা প্রসবের সময় প্রস্রাবে অতিরিক্ত চাপ এবং মাসিক রাস্তায় বাচ্চা আটকে থাকায় এমনটা হতে পারে। অস্ত্রোপচারে কোনো ভুল হয়নি। বর্তমানে আমি উচ্চতর ডিগ্রি নিতে কুমিল্লা মেডিকেলে অধ্যয়নরত।
দাগনভূঞা আয়শা জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু নাসের তুহিন বলেন, ‘গত ৩০ জুন রাতে রোগী আসার পর চিকিৎসক চম্পা কুণ্ডকে খবর দেই। সেখানে ভুল হলে চিকিৎসক দায়ী।’
সিভিল সার্জন রফিক উস সালেহীন বলেন, এ ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে গত ৩১ জুলাই একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আশরাফুল/সাএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: