ওয়ার্কশপ কর্মচারীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে ৫০ তরুণীর সঙ্গে প্রতারণা

প্রকাশিত: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:১৭ পিএম

মো. মামুন ইসলাম।পড়াশোনা করেছেন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত। তিনি পেশায় গ্রিল ওয়ার্কশপের কর্মচারী। কিন্তু ফেসবুকে নিজেকে পরিচয় দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। আবার কখনো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী উপসচিব, মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ইঞ্জিনিয়ারসহ সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। এসব ভুয়া পরিচয়ে মেয়েদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে প্রতারণা করতেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের সাইবার ইনভেস্টিগেশন বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুল আলম।

গতকাল বুধবার (৩১ আগস্ট) দিনাজপুর জেলার খানসামা থানার আমতলী বাজার থেকে মামুন ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ সময় তাঁর কাছ থেকে পাঁচটি নকল নিকাহনামা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে ভুয়া বদলির অফিস আদেশ, দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।

মামুন পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছে,তাঁর বাড়ি দিনাজপুর জেলার খানসামা থানার গোবিন্দপুর গ্রামে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১০ জন মেয়েকে বিয়ের পর ব্ল্যাকমেল করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। মামুনের মোবাইল ফোনে ৫০ জনেরও বেশি মেয়ের সঙ্গে কথোপকথন ও আপত্তিকর ভিডিও পাওয়া গেছে।

বিশেষ পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম আরও জানান, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে এক নারীর সঙ্গে মামুনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্ক গভীর হলেও মামুন কখনো সরাসরি দেখা করতেন না। সরকারি কাজে ব্যস্ততার অজুহাত দিতেন। সশরীরে বিয়ের অনুষ্ঠানে না থেকে মেয়ের নামে কাজী অফিসের সিলমোহরযুক্ত ভুয়া নিকাহনামা প্রস্তুত করে কুরিয়ারে পাঠিয়ে দিতেন।

সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে মামুন কিছুদিন পর মেয়ের বাসায় যান এবং বিয়ে করে কিছুদিন একসঙ্গে বসবাস করেন। এরপর মামুন মেয়েটিকে আপত্তিকর ও অশালীন অবস্থায় ভিডিও কলে আসতে বলতেন। মামুন ভিডিও কলের স্ক্রিন রেকর্ড করতেন। সেসব ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতেন।

ওই ভুক্তভোগী ডিএমপির পল্টন থানায় প্রতারক মামুনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের সাইবার ইনভেস্টিগেশন ও অপারেশনস টিম মামলাটির তদন্ত ভার পাওয়ার পর প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের পর মামুনকে শনাক্ত করে। পরে অভিযান চালিয়ে মামুনকে দিনাজপুর জেলার খানসামা থানার আমতলী বাজার থেকে গতকাল বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: