প্রচ্ছদ / সারাবিশ্ব / বিস্তারিত

পাকিস্তানে বন্যা, ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার মানুষকে উদ্ধার সেনাবাহিনীর

   
প্রকাশিত: ১২:৩২ পূর্বাহ্ণ, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান। প্রবল মৌসুমি বৃষ্টির কারণে বন্যার ভয়াবহতা অনেক বেড়েছে। এছাড়া বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। যদিও বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে কাজ করছেন দেশটির কর্মীরা। আর এমন পরিস্থিতিতেই উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। পাশাপাশি, এই সময়সীমায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দেশজুড়ে ১৬৩ টন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর)  পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে দেওয়া এক বৃবৃতিতে জানানো হয়েছে এ তথ্য।

বন্যায় ইতিমধ্যে  দেশটির এক-তৃতীয়াংশ পানির নিচে। গৃহহীন হয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ। দেশটিতে চরম মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কায় দেশি ও বিদেশি সংস্থাগুলোর কাছে ত্রাণ সহায়তা চেয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান। সাধারণত উপমহাদেশের তিন দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশে বর্ষাকাল শুরু হয় জুন মাস থেকে। চলতি বছরের বর্ষাকালে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে খরা ও বাংলাদেশে বিগত বছরগুলোর তুলনায় কম বৃষ্টিপাত হলেও পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত জুলাই মাসেই বেলুচিস্তান ও খাইবার-পাখতুনওয়া প্রদেশের বেশ কিছু এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছিলনদেশটির জলবায়ুবিদদের মতে, চলতি বর্ষাকালে পাকিস্তানে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে—তা গত ত্রিশ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

এ বন্যার কারণে ইতোমধ্যে দেশজুড়ে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করছে পাকিস্তান সরকার।এ ছাড়া বর্ষা মওসুমের বিরামহীন এই বর্ষণকে ‘মহাকাব্যিক পর্যায়ের জলবায়ুজনিত মানবিক সংকট’ বলেও অভিহিত করেছে তারা।পাকিস্তান সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যেই বন্যায় নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ২০৮ জনে পৌঁছেছে। এই নিহতদের মধ্যে ৪১৬ জনই শিশু। জাতিসংঘ ইতোমধ্যে পাকিস্তানের বন্যাকে ‘নজিরবিহীন জলবায়ু দুর্যোগ’ বলে উল্লেখ করেছে। পাশপাশি, এই দুর্যোাগ মোকাবিলায় পাকিস্তানের জন্য সদস্যরাষ্ট্রগুলোর কাছে ১৬ কোটি ডলারও চেয়েছে জাতিসংঘ।পাকিস্তানের বন্যা উপদ্রুত প্রদেশ সিন্ধের দাদু জেলার অধিকাংশ গ্রাম বর্তমানে ১১ ফুট পানির তলায়। সিন্ধের বাসিন্দা বশির খান বলেন, ‘আমার বাড়ি এখন পানির নিচে। গত চারদিন ধরে আমি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আছি।’

বন্যা উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা শুরু করেছে সরকার। ত্রাণ নিয়ে শুক্রবার কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের বিমানও পাকিস্তানে নামার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে সেপ্টেম্বরজুড়ে আরও বৃষ্টি ও বন্যার আভাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সিন্ধু নদীর পানি বেড়ে দক্ষিণাঞ্চলের পরিস্থিতি খারাপ হবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রেজানুল/সা.এ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: