আড়াইহাজার ছাত্রলীগ নেশামুক্ত: বিডি২৪লাইভকে এমপি বাবু

প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:২৬ এএম

নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু বলেছেন, 'আজ থেকে ২৫ বছর আগে নেশা ও ধুমপানমুক্ত ছাত্ররাজনীতির সংকল্প নিয়েছিলাম। আমার হাত ধরে যারা ছাত্ররাজনীতিতে এসেছে, তাদের প্রতি আমার নির্দেশনা ছিল কোনো প্রকার সিগারেট বা নেশায় যুক্ত হওয়া যাবে না৷ আড়াইহাজার ছাত্রলীগ আমার নিজ হাতে গড়া। সেদিন সোনারগাঁয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে স্পষ্ট করে বলেছিলাম, আমার আড়াইহাজারের মুরব্বিরা আছেন, ছাত্রলীগের একটি ছেলে সিগারেট হাতে নিয়েছে, এই ইতিহাস কেউ দেখাতে পারলে আমার জায়গা থেকে পদত্যাগ করবো।

গতকাল শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বিডি২৪লাইভকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও টানা তিনবার নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য।

আলাপচারিতায় এমপি বাবু আরো বলেন, 'আমার সেদিনের বক্তব্য সুস্পষ্ট। আড়াইহাজার উপজেলা ছাত্রলীগের প্রতিটি ইউনিটের প্রত্যেকটি ছেলে মেধাবী ও প্রকৃত ছাত্র। ওদেরকে নিয়ে আমি গর্ব করি। তাদেরকে সিগারেট ও যেকোনো মাদক থেকে দূরে রেখে সুশিক্ষিত করে তুলেছি আমি। আমার মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ও নৈতিক সেই শিক্ষা রয়েছে বিধায়ই সেটি সম্ভব হয়েছে। দুই যুগেরও বেশি আগে করা আমার সেই সংকল্প থেকে আমি একবিন্দুও পিছু হাটিনি৷ অথচ আমার সেদিনের স্পষ্ট বক্তব্যকে নিয়েও মিথ্যাচার ও নোংরামি হয়েছে। অফলাইনে-অনলাইনে আওয়ামী বিরোধী শক্তি ভীষণ সক্রিয়৷ এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যেকোনো পোস্টের কমেন্ট বক্স তাদেরই দখলে থাকছে। এদিকটাতে আমাদের আরো বেশি মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে আমি মনে করি৷'

তিনি আরো বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো একজন কিংবদন্তিকে এদেশের মাটিতে মেরে ফেলা হলো, অথচ তার না কি বিচার হচ্ছে না, হবে না- এমন পরিস্থিতি দেখে সেই ক্ষোভ থেকে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হই। ছাত্ররাজনীতি করতে গিয়ে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধসহ বারবার হামলা-নির্যাতনের শিকার হই৷ বারবার হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছি। বঙ্গবন্ধুর খুনি ফারুক-রশিদ গংকে ৮০' ও ৯০' এর দশকে বারবার আমার নেতৃত্বে ঢাকার রাজপথে প্রতিহত করি। ২০০৪ সালে বর্বরোচিত ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলায় মানবঢাল তৈরি করে নেত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে গ্রেনেডের শত শত স্প্লিন্টার এখনও শরীরে বহন করে চলেছি।'

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, 'লন্ডন থেকে তারেক রহমান বক্তব্য দেয় আর তা শুনে বিএনপি নেতাকর্মীরা লাফালাফি করে। এভাবে রাজনীতি হয় না৷ আওয়ামী লীগ জনমুখী দল, জনসাধারণকে সাথে নিয়েই এইসব অপরাজনীতি প্রতিহত করা হবে৷'

এমপি বাবু বলেন, 'বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশ আজ এগিয়ে চলেছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলসহ এমন অনেক বিস্ময়কর স্থাপনা নির্মিত হয়েছে যা আমাদের কল্পনার বাহিরে ছিল। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। ফলে একজন কর্মজীবি মানুষ দিনে পাঁচশো টাকা আয় করে চালসহ অন্যান্য দ্রব্য কিনে বাসায় ফিরতে পারছেন।

নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমীকরণ সম্পর্কে এই সংসদ সদস্য বলেন, 'মাঝেমধ্যেই পত্রিকায় বিভেদের খবর আসে৷ আমরা কিন্তু নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কথা বলি না। আমরা বলি নেতার বিরুদ্ধে, নেতার ব্যবহার ও কর্মের বিরুদ্ধে। আমরা যদি মুখে এক, অন্তরে আরেকটা না রেখে সঠিক কথা বলি, তাহলেই একমুখী হয়ে যেতে পারি৷ কিন্তু আমি মনে করি, যা বলবো সেটিই হবে, নো৷ এটি তো আমি নজরুল ইসলাম বাবু মেনে নিবো না৷ শামীম ওসমান এমপিকে সবাই চিনেন, উনার পারিবারিক ইতিহাসও রয়েছে৷ তিনি যদি সবাইকে নিয়ে রাজনীতি করতে চান তাতে ক্ষতি তো নেই৷ ঠিক একইভাবে মেয়র বা উপজেলা চেয়ারম্যান কেউ না কেউ হবেন৷

বঙ্গবন্ধুকন্যা যাকে মনোনয়ন দিয়েছেন তাকে মেনে নিতে আমার সমস্যা কোথায়! আমরা যেন সেটি মেনে নিই। আমার এখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাকেই মনোনয়ন দিয়েছেন আমরা তাকে পাশ করিয়ে এনেছি। অন্যত্র কেন করছে না? কেন বন্দরে পাচ্ছি না? কেন নারায়ণগঞ্জের দুইটি উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি করবেন! আমাদের অভিন্ন কথা বলতে হবে৷ সবাই যার যার অবস্থান থেকে নিজের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান চালাতে হবে, ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে সুরক্ষিত করতে হবে, দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে। মিথ্যাচার, বড় বড় কথা ও কারো প্রতি অনাস্থা না রেখে আমরা সবাই যেন নিজের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান চালাই। তাহলেই বঙ্গবন্ধুকন্যার প্রত্যাশা পূরণে আমরা হবো সবচেয়ে বড় শক্তি, নারায়ণগঞ্জ হবে বাংলাদেশের প্রথম রাজনৈতিক হাতিয়ার।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: