ক্যানসারে মাকে হারিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে চার শিশুর

প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:৫৪ এএম

মাকে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন চার শিশু। শিশুরাই অন্য শিশুদের দায়িত্বে নিয়ে কাজ করছেন। আনুমানিক ৬ থেকে ৭ বছর বয়সের একটি মেয়ে থালা-বাসন ধুয়ে ঘরের দিকে হেঁটে যাচ্ছে। তার পেছন পেছন ঘরে ঢুকতে চোখে পড়ল আরও হৃদয়বিদারক এক দৃশ্যের। মাস দেড়েক আগে চার ভাই-বোন তাদের মাকে হারিয়েছে। সেই থেকে প্রতিদিন অনেকটা এমন দিন কাটে তাদের।

৫ম শ্রেণি পড়ুয়া সজল জানায়, আগে স্কুলে যেতাম। মা মারা যাওয়ার পর থেকে আর স্কুলে যাই না। আমি নিজেই ভাত তরকারি রান্না করি। কোনোদিন না খেয়েও থাকতে হয়। কি করব, আর তো কোনো উপায় নেই। স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণির শিক্ষার্থী স্বর্ণালী ব্রক্ষ্মা আস্তে আস্তে বলতে থাকে, স্কুলে যেতে ইচ্ছা করলেও পারি না। ভাই বোনদের সঙ্গে থাকি। আর থালা-বাসন ধুয়ে রাখি।

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে প্রায় দেড় মাস আগে মারা গেছেন ঝরনা বিশ্বাস (৩০)। এরপর তার মৃত্যুতে চরম অসহায় হয়ে পড়েছে রেখে যাওয়া চার শিশুসন্তান। স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেকটা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন সুদাস।

শিশুদের বাবা সুদাষ ব্রক্ষ্মা জানান, এক বছর আগে ক্যানসারে আক্রান্ত হন স্ত্রী ঝরনা। দিনমজুর সুদাসের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। তাই খুব একটা চিকিৎসা করাতে পারেননি স্ত্রীর। প্রায় দেড়মাস আগে অনেকটা বিনা চিকিৎসায় মারা যায় ঝরনা। মূলত এরপরেই দুর্বিষহ জীবন শুরু হয় সুদাস ও তার চার সন্তানের।

তিনি আরও জানান, তেমন কোনো সহায় সম্পত্তি নেই। দিনমজুরি করে সংসার চালাতে হয়। স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে চার সন্তানকে নিয়ে খুব অসহায় অবস্থায় আছি। না পারছি কাজে যেতে, না পারছি বাচ্চাদের খাবার দিতে। দুই ছেলে-মেয়ে স্কুলে যেত, তাও বন্ধ হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা বলেন, এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারটিরকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে শিশুদের জন্য দুধ কিনে দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের একটি ভিজিডি কার্ড করে দেওয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: