সাড়া ফেলেছে ভিন্ন স্বাদের ‘পোড়া চা’

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:৫৭ পিএম

রসমঞ্জুরীর জন্য বিখ্যাত গাইবান্ধায় এবার নতুন করে সাড়া ফেলেছে ভিন্ন স্বাদের "পোড়া চা"। মুখরোচক এই চায়ের গল্প এখন সবার মুখে মুখে। জেলা সদরের ৮কিমি: দূরে বোয়ালী ইউনিয়নের মধ্য রাধাকৃষ্ণপুর নামক স্থানে ফয়জারের স্টলে গিয়ে দেখা গেল চা পিপাসুদের ভিড়। পোড়া চায়ের গ্রাহক বেড়ে যাওয়ায় উন্মুক্ত জায়গায় বসানো হয়েছে কাঠ-বাঁশের টং বা মাঁচা। একাধিক লম্বা এই টঙয়ে বসে মাটির কাপে চায়ের চুমুক দিচ্ছেন তারা।

স্থানীয়রা জানান, রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ফয়জার রহমান (৬০) জীবিকার তাগিদে প্রায় ৩ যুগ ধরে ঢাকায় চা বিক্রি করে সংসার চালাতেন। এরই ধারবাহিকতায় দেড় বছর বছর আগে এলাকায় এসে নতুনভাবে শুরু করেন পোড়া চা বানানোর কাজ। চুলায় তাওয়া বসিয়ে এর ওপর পোড়ানো হয় মাটির কাপ। সেই কাপে ঢালা হয় গরম চা। ঘন দুধ-চা পাতা আর মাটির পোড়া গন্ধে ভিন্ন স্বাদ তৈরি হয় চা। এই চা সকাল শুরু করে রাত ১১টা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। প্রতি কাপ চা বিক্রি হয় ২৫ টাকা। নাম দিয়েছেন "পোড়া চা"। চায়ের দোকানে রয়েছে ৭ জন কর্মচারী এরমধ্যে ফয়জার মিয়ার ২ছেলে।

সাদুল্লাপুর থেকে পোড়া চা পান করতে আসা বিপুল চন্দ্র বলেন, লোকমুখে শুনে চা খেতে এসেছি। নতুন স্বাদের চা খেয়ে বেশ মজা পেলাম। ঘন দুধ, চা পাতা, পোড়া মাটির গন্ধ মিলেমিশে নতুন একটা স্বাদ পেলাম। গরম মাটির ভাড় টিস্যু পেপার বা রুমালে জড়িয়ে ধরে চায়ে চুমুক দিতে হয়। তবে ভিড়ের কারণে চা অর্ডার দিয়ে বেশ খানিকটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে।

চা খেতে আসা গাইবান্ধা নির্বাচন অফিস সহকারী আলামিন জানান, সাড়া দিন কর্ম ক্লান্তির সেরে বিকেলে পোড়া চায়ের স্বাধ নিতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।

ফয়জার মিয়া জানান, ‘পোড়া চা’ বিক্রিতে প্রথমে তেমন গ্রাহক ছিল না। কিন্তু এখন মুখে মুখে চায়ের গল্প ছড়িয়ে পড়ায় গাইবান্ধার বিভিন্ন গ্রাম-শহর, বগুড়া, রংপুর থেকে লোকজন আসছেন চা খেতে। আধা মণ চা পাতা দিয়ে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু এই চা।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দৈনিক ৪ মণ দুধে এক মণ চিনি জাল দিয়ে ঘন দুধ তৈরি করছি। পরে তাতে চা পাতা দেয়া হয়। এভাবে পোড়া চা বিক্রি করে সংসারে বেশ স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছি।

বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সাবু জানান, ফয়জার মিয়া দীর্ঘদিন ধরে চা বিক্রি করছে। তবে এখন শুরু করেছে পোড়া চা বিক্রি। এই চা অত্যান্ত মজাদার। তার এই ব্যবসায় গাইবান্ধা জেলাকে আরও পরিচিত বাড়িয়ে দিচ্ছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: