বাবা আমি পরীক্ষা দিয়ে এসেছি, তুমি চোখ খোলো

বাড়িতে বাবার মরদেহ। স্বজনরা কাঁদছেন। বুকে সেই কষ্ট জমা করেই পরীক্ষা হলের উদ্দেশে রওনা দিলেন সুমাইয়া। হলে বসে পরীক্ষা শেষ করে পৌঁছালেন বাড়িতে। বাড়িতে পৌঁছেই হাউমাউ করে কান্না শুরু। বাবা আমি পরীক্ষা দিয়ে এসেছি। তুমি চোখ খোলো। ও বাবা এভাবেই বাবার জন্য আর্তনাদ করছিলেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার নোয়াপাড়ার এসএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার সুইটি। কনেশতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি। আজ ছিল তার বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা। সুমাইয়ার বাবা আবুল কাশেম ছিলেন গাড়িচালক। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সুমাইয়া সবার বড়।
কনেশতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, সুমাইয়া খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী। তিনি স্টুডেন্ট কেবিনেটের প্রতিনিধি। ভালো শিক্ষার্থীর পাশাপাশি একজন ভালো সংগঠক। গতকাল রাতে হঠাৎ করেই সুমাইয়ার বাবা আবুল কাশেম মারা যান। সকালে পরীক্ষা দেবেন কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। পরে সহপাঠীদের সহযোগিতায় নিজেকে সামলে নিয়ে বাড়ি থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে চৌয়ারা গালর্স স্কুলের উদ্দেশে রওনা দেন। ওই স্কুলে সুমাইয়ার পরীক্ষা কেন্দ্র। বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত পরীক্ষা দেন সুমাইয়া।
পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে যান কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশিস ঘোষ। তিনি বলেন, ‘আমি যখন জানতে পারি মেয়েটির বাবা মারা গেছেন, বাড়িতে বাবার মরদেহ রেখেই পরীক্ষা দিতে আসছে তখন হলের শিক্ষকদের বলেছি মেয়েটি যেন নার্ভাস না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে। পরীক্ষা শেষে যেন সুমাইয়াকে বাড়ি পৌঁছে দেয়া হয়।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সুমাইয়া বলেন, ‘বাবার স্বপ্ন ছিল আমি যেন শিক্ষক হই। বাবার স্বপ্ন পূরণে আমি বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখেই পরীক্ষা দিতে যাই। আপনারা আমাদের জন্য, আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।’
শাকিল/সাএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: