৫ দিন পর সবজি ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার, মামলা

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:৫৫ পিএম

নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জে নিখোঁজের দুইদিন পর বিবিয়ানা নদী থেকে লিটন মিয়া (৪৮) নামে এক সবজি ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধারের ৫ দিন পর বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে নবীগঞ্জ থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বাদী হয়েছেন নিহত লিটন মিয়ার ভাই মোঃ সালেহ আহমদ। এদিকে লিটন মিয়ার মৃত দেহ উদ্ধারের সময় স্থানীয় চেয়ারম্যান নোমান হোসেনকে নিহতের আত্মীয়-স্বজনরা মারপিট হামলার কথিত গনপিটুনির ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হামলায় আহত চেয়ারম্যান সিলেট একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন গত ৪দিন। গতকাল বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান অফিস করেছেন বলে তার ফেসবুকে একটি ছবি আপলোড করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যসমত গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের পুত্র। লিটন মিয়া ইনাতগঞ্জ বাজারের প্রতিষ্ঠিত সবজি ব্যবসায়ী। গত বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ব্যবসা বন্ধ করার পর আর বাড়ি ফিরেনি। তার মোবাইল ফোন ও বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন’সহ আত্মীয়স্বজন অনেক খোঁজাখঁজি করেও কোথাও তার সন্ধান পাননি। এ ব্যাপারে নিখোঁজ লিটনের ভাই নবীগঞ্জ থানায় শুক্রবার রাতে সাধারন ডায়েরী করেন। এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাত ১.৩৫ ঘটিকায় কসবা গ্রামের রুবেল মিয়া নামের এক ব্যক্তি ইনাতগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান নোমান হোসেনকে মোবাইল ফোনে জানান, সবজি ব্যবসায়ী লিটন মিয়া তার ভাই জুবেল মিয়ার দোকানে আটক রয়েছে।

অবশেষে শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টায় নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের কসবা গ্রামের ভিতর দিয়ে বিবিয়ানা নদীতে স্থানীয় লোকজন ভাসমান অবস্থায় লিটন মিয়ার লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ডালিম আহমেদ, ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ কাওসার আহমেদসহ একদল পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌছে লাশ উদ্ধার করেন।

এ সময় স্থানীয় চেয়ারম্যান নোমান হোসেন ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষুব্ধ নিহতের পরিবার পরিজন হত্যাকান্ডের সাথে চেয়ারম্যান পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ তার উপর হামলা করেন। হামলার এক পর্যায়ে চেয়ারমানকে প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় দেখা যায়। উক্ত দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করে। ঘটনার পরপরই নিহত লিটন মিয়ার পরিবার এই হত্যাকান্ডের সাথে চেয়ারমান নোমান হোসেন এর মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

নিহত লিটনের ভাই সালেনুর মিয়া জানান, পুর্ব আক্রোশে তার ভাই’কে পরিকল্পিতভাবে অপহরন করে একদল দুর্বৃত্ত হত্যা করেছে। তিনি আরও বলেন, চেয়ারম্যান নোমান হোসেন নিখোজের প্রথম দিন রাতেই জানতেন নিহত লিটন মিয়া কসবা বাজারে জুবেল মিয়ার দোকানে রয়েছে। এই খবর চেয়ারম্যানকে জুবেল মিয়ার ভাই রুবেল ফোনে জানিয়েছেন। খবরটি জানার পর চেয়ারম্যান নোমান হোসেন লিটন মিয়ার বাড়িতে জানালে অথবা নিজে দায়িত্ব নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে হয়তো বা লিটনের হত্যাকান্ডের ঘটনা সংঘটিত হতো না।

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান নোমান হোসেন বৃহস্পতিবার রাত ১.৩৫ ঘটিকায় রুবেল মিয়া ফোনে তাকে লিটন মিয়া জুবেল মিয়ার দোকানে আটকের খবর দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন আমি খবরটি জেনে তাৎক্ষনিকভাবে কাউকে এতো রাতে পাইনি। পরদিন তার আত্বীয় স্বজনকে জানিয়েছি। হামলার বিষয়ে তিনি বলেন এটা তার পরিকল্পিত হামলা তিনি এবিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
এদিকে অনেক নাটকীয়তা শেষে লাশ উদ্ধারের ৫ দিন র নিহতের ভাই নবীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় চেয়ারম্যানকে আসামী না করায় চেয়ারম্যানের উপর হামলা, মারপিট এর ঘটনা নিয়ে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। চেয়ারম্যান নিরাপরাধ হলে তার উপর হামলা করার নেপথ্যে কারন কি ছিল তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে এলাকাবাসীর দাবী।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: