এ বছর দূর্গাপূজা হবে ১৮৯টি মন্ডপে, প্রতিমা তৈরিতে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর শুভ মহালয়া। এরই মধ্যে পূজাকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে ঢাকার নবাবগঞ্জের মৃৎশিল্পীদের। বিগত বছরগুলোতে করোনা মহামারীর কারণে শারদীয় দূর্গাপুঁজা উৎসবের আমেজ দেখা মেলেনি। কাঁশফুল শরতের শারদীয় দূর্গা উৎসবকে পরিপূর্ণ করতে মন্দির গুলোতে চলছে প্রতিমা তৈরীর শেষ মুহুতের কাজ। ইতোমধ্যে প্রতিমা কাটামোর মাটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এরপর শুরু হবে রং-তুলির ও সাজ-সজ্জার কাজ। উঁচু-নিচু ভেদাভেদ ভুলে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একত্র করে বলেই, এই পূঁজা কে বলা হয় সার্বজনীন পূঁজা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনে এবছর মা দুর্গা শান্তির বার্তা নিয়ে গজে (হাতির) পিঠে চড়ে শস্যপূর্না বসুন্ধরায় বাবার বাড়ীতে আগমন করবেন।
উপজেলার পূঁজা উদযাপন কমিটির সভাপতি নিতাই চাঁদ তালুতদার ও সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার সরকার সাথে কথা বলে জানা যায়, বিগত বছরগুলোতে মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষজন শারদীয় দুর্গা উৎসবের আনন্দ উপভোগ করতে পারেনি। উপজেলায় ১৮৯ টি পূঁজা মন্ডপে প্রায় ৮০ভাগ কাজ শেষ করেছে প্রতিমা তৈরির করিগররা। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে। পূঁজা চলাকালীন দিনগুলোতে উৎসবের আমেজ বজায় রাখতে নিরাপত্তার বলয় দিয়ে সার্বিক সহায়তা করবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করেন জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, পূজা উপলক্ষে সব বয়সের মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। ঘরে-ঘরে আনন্দের জোয়ার বইতে শুরু করেছে। শান্তির দেবী মা দুর্গাকে বরণ করে নিতে কেউ কেউ মার্কেটে যাচ্ছে পূজার নতুন কাপড় কিনতে। বাজারে এক প্রকারের ধুম পড়েছে। পিঠা, খই, মুয়া, মুরি, নারু তৈরির জন্য নারিকেল, মিঠাই, চিড়া, মুড়িসহ নানা উপকরণ কিনতে শুরু করেছেন। কেউ বা আবার অতিথি আপ্যায়নে ঘরে ঘরে চলছে সাজসজ্জা পরিপাটির কাজ।
নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা জানান, এবছর ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় ১৮৪টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার প মী পূজার মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্যাপন শুরু হতে যাচ্ছে। এবার মা দুর্গা গজে তথা হাতির পিঠে চড়ে শস্যপূর্না বসুন্ধরা বার্তা দিয়ে শ^শুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ীতে আগমন করছেন। এবং ৫ অক্টোবর বুধবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে নৌকায় চড়ে (শস্য বৃদ্ধি ও জল বৃদ্ধি) বার্তা দিয়ে ফের শ^শুর বাড়ীতে চলে যাবেন মা দুর্গা। মায়ের বিদায়েই সাথে সাথে শেষ হবে এবারের মহাউৎসব।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কথা হয় ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়নের গোবিন্দপুর সর্বজনীন দূর্গা মন্দিরের মৃৎশিল্পী কারিগরে স্বপর পালের সাথে, তিনি জানান এবছর আমি দোহার ও নবাবগঞ্জে ৬টি দূর্গা প্রতিমা গড়ার কাজ পেয়েছি। পূজার শুরু হওয়ার আর বেশি সময় নেই। তাই একটু আগেভাগেই মাটির কাজ শেষ করে প্রতিমায় বিভিন্ন রংঙ্গের আচড় কাটতে শুরু করেছি।
কথা হয় দুলাল পালের সাথে তিনি বলেন, বাপ-দাদার পেশা ছাড়তে পারছিনা। মৃৎশিল্পী বা মাটির কারিগরদের এখন আর আগের মতো কাজ নেই। দুর্গা পূজা আসলেই একটু কাজের চাপ বাড়ে। এমনিতেই সারা বছর বসে থাকি। এবছর ৫টি দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ পেয়েছি ৪০ হাজার থেকে শুরু করে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত মজুরি পাবো। আশা করি অন্যঅন্য কারিগরদের মজুরি দিয়ে ভালোই লাভ হবে। তবে এ টাকা দিয়ে তো আর সারা বছর সংসার চলবে না।
নবাবগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ চন্দ বলেন, এবছর আমাদের নবাবগঞ্জ উপজেলায় ১৮৯টি মন্ডপে মা দূর্গার পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আনন্দময় পরিবেশে সকলে যেন মা দূর্গার পূজাকে উদ্যাপন করতে পারি সেজন্য আমাদের কমিটির পক্ষ থেকে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মতিউর রহমান বলেন, দূর্গা পুজা উপলক্ষে খুব শিঘ্রই সরকারি সহায়তা প্রদান করা হবে। পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুর্গা মন্ডপে দায়িত্বে থাকবেন। পাশাপশি পূজা মন্ডপে যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরা বসানোর চেষ্টা চলছে।
শাকিল/সাএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: