এমপির বাবুর্চি হয়ে কোটি টাকা মালিক, শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কার

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:২৮ পিএম

কামরুল হাসান নিরব, ফেনী থেকে: ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপির বাসায় বাবুর্চি হিসেবে কর্মরত মইন উদ্দিন সাদেক শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে তাকে সকল প্রকার কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিজাম উদ্দিন হাজারি ব্যক্তিগত প্রেস সচিব এস আলম সবুজ এবং ফটোগ্রাফার তৃপ্তি তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে এই তথ্যটি নিশ্চিত করেন। তারা উল্লেখ করেন শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ বিভিন্ন জালিয়াতি কর্মকান্ড এবং এমপির নাম ভাঙ্গিয়ে লবিং তদবিরের কাজে লিপ্ত থাকার প্রমান পাওয়ায় সাদেককে বাবুর্চির কাজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সাদেক এর বাড়ি নোয়াখালী অঞ্চলে। ছয় বছরেরও অধিক সময় সাদেক ফেনীতে নিজাম হাজারীর নিজ বাড়িতে কর্মরত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কথিত অভিযোগে তৃনমুলের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দাবি' বাবুর্চি সাদেক বিভিন্ন ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড থেকে আগত তৃণমূল কর্মীদেরকে নেতা বানিয়ে দিবে পদ-পদবীর বিষয়ে এমপিকে সুপারিশ করবেন। এমন আশ্বস্ত করে বিকাশ এবং ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বহু টাকা হাতিয়েছেন। কথিত আছে নোয়াখালীতে ৮০ শতাংশ জায়গা ডুপ্লেক্স করে বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ বিষয়ে সোনাগাজীর আকবর হোসেন মিল্লাত নামে আওয়ামী লীগের একজন নেতা দাবি করেন 'এমপি নিজাম হাজারী ঘাটলায় যখন দলীয় নেতা কর্মীরা দেখা করতে যেত, তখন নিজের কাছের লোকদেরকে আগে বসার সুযোগ করে দিয়ে তৃণমূল কর্মীদেরকে ধাক্কা দিয়ে বাইরে চলে যেতে বলত।

তখন তার পকেটে কিছু টাকা বকশিশ দিলে সাথে সাথে তাদেরকে ভিতরে ঢুকার সুযোগ করে দিত। গাজী মাসুদ রানা নামে পরশুরামের এক আওয়ামী লীগ কর্মী জানান' কমিটিতে স্থান পেতে এবং পরশুরাম ফুলগাজির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে এমপির সাথে কথা বলতে আসলে, সাদেক বিভিন্ন অসহায় এবং সরল প্রকৃতির কর্মীদেরকে বিকাশের মাধ্যমে বকশিশ পাঠাতে বলতো। এছাড়াও স্পষ্ট বলতো এমপির পারিবারিক অবস্থান সম্বন্ধে সে খুব ভালো অবগত। সুতরাং সে কোন কথা বললে সেটা অবশ্যই এমপি রাখবেন।

ফুলগাজী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মিস্টার আলম ভূঁইয়া জানান 'তার কাছে এখন অনেক টাকা। খুব দেরিতে হলেও এ সিদ্ধান্ত নেয়াতে অনেক মানুষেরই উপকার হয়েছে। সে স্বাভাবিকভাবেই টাকা ছাড়া কিছুই বুঝতো না এবং তৃণমূল কর্মীদেরকে মানুষ বলেও বিবেচনা করত না। দাগন মিঞার ছাত্রলীগ কর্মী শহিদুল ইসলাম শাহীন দাবি করেন' আমরা যখন গ্রাম থেকে এমপি মহোদয়ের দেখা করতে আসতাম, তখন আমাদেরকে সুযোগ করে দেয়া হতো না কিন্তু দেখা যেত অনেক বড় নেতা এবং ইউপি মেম্বার চেয়ারম্যানবৃন্দ তার সাথে ছবি তুলত এবং খুব অহরাম দহরম তার সাথে ভাব মিলাত। এসব দেখে আমার কাছে খুবই অসহ্যকর মনে হত।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান দাবি করেন 'সাদেকের সাথে দেখা করতো বা তার কাছে ঘেঁষত একমাত্র তারাই যারা সাদেকের পর্যায়ের লোক ছিল। সে কখনোই কাউকে পথ পদবী বা চেয়ারম্যান মেম্বার নমিনেশন পেতে সুযোগ করে দিতে পারে না।কারন সে একজন রান্নার লোক ছাড়া আর কিছুই নয়। সুতরাং সাদেকের সাথে কথা বলার কোন প্রশ্নই আসে না।

এ বিষয়ে সাদেকের সাথে কথা বলতে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে সাংবাদিক পরিচয় জানালে সাদিক ব্যস্ত আছি এবং পরবর্তীতে একটু গরম ভাব দেখিয়ে কল কেটে দেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: