নিজের হারিয়ে যাওয়া ১৫ মহিষ নিলামে কিনলেন সেন্টু!

প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:৩৮ পিএম

রাজশাহীর গোদাগাড়ীর মহিষ খামারি সেন্টু। তার খামারে ছিল ২১ মহিষ। এর মধ্যে ৭ সেপ্টেম্বর রাতে বাথান থেকেই নদীতে নেমে যায় তার ১৬টি মহিষ। পরে তা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা উদ্ধার করেন। উদ্ধার হওয়া ১৫টি মহিষ কাস্টমসে জমা দেওয়া হয়। তদন্ত কমিটির মাধ্যমে গত বুধবার সন্ধ্যায় ১৫টি মহিষ নিলামে তোলা হয়। সেখানে সেন্টু মহিষগুলো কিনে নেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সাংবাদিকদের বলেন, নিজের মহিষ তিনি নিজেই কিনছেন। কেনার পর যখন নিয়ে যাবেন তখন মহিষগুলোকে বাড়ি চেনাতে হবে না। মহিষগুলো ঠিকই তাঁর বাড়ি চলে যাবে। মহিষগুলো চেনা পথ ধরে তাঁর সেন্টুর বাড়ি গিয়ে ওঠে। তখন বাড়ির নারীরা কান্না শুরু করেন। আশপাশের লোকজন মহিষগুলো দেখতে এসে জানান, এগুলো সেন্টুরই মহিষ। এগুলোই হারিয়ে গিয়েছিল।

সেন্টু বলেন, তাঁর ১৬টি মহিষের বাজারমূল্য এখন অন্তত ২৫ লাখ টাকা। তিনি ১৫টি মহিষ কিনলেন সাড়ে ১৩ লাখে। এই সাড়ে ১৩ লাখ আর হারানো একটা মহিষের ক্ষতি তাঁর কাঁধে এলো। তিনি বলেন, ‘১৬টা মহিষের মধ্যে একটা কোথায় তা জানি না। নিলামে আসা ১৫টা মহিষের মধ্যে দুটি বলদ, ১৪টিই গাভী। এর মধ্যে নয়টি গর্ভবতী। ১০ দিনের মধ্যে চারটার বাচ্চা হবে। সবগুলোর বাচ্চা হওয়ার পর সাড়ে ১৩ লাখ টাকার ক্ষতিটাও উঠে যাবে। নিখোঁজ মহিষটার ক্ষতিও পুষিয়ে যাবে।’ কিন্তু এরপরও একটা ক্ষতি থেকেই গেল! এই ক্ষতিপূরণ আদায়ে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন সেন্টু।

তিনি আরও জানান, বিজিবির দুই ক্যাম্প থেকে মহিষগুলো বিজিবির ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে নেওয়া হয়। এরপর নিলামে বিক্রির জন্য বিজিবি সেগুলো কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের গুদামে পাঠায়। সেন্টু সেখানে গিয়েও মহিষগুলোর মালিকানা দাবি করে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন জানান। মহিষগুলো যে তার সে ব্যাপারে এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল প্রত্যয়নও দেন। এরপর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তদন্ত শেষে মতামত দেয়- এই মহিষ সেন্টুর নয়।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার হাসনাইন মাহমুদ। সদস্য সচিব সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহাফুল ইসলাম। সদস্য ছিলেন বিজিবির রাজশাহীর সহকারী পরিচালক নজরুল ইসলাম, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার কৌশিক আহমেদ এবং কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা ছাবেদুর রহমান। হাসনাইন মাহমুদ ও কৌশিক আহমেদের উপস্থিতিতে বুধবার বিকালে রাজশাহী মহানগরীর দাসপুকুরে শুল্ক গুদামে ১৫টি মহিষের প্রকাশ্যে নিলাম শুরু হয়। সেদিন ৮টি মহিষ নিলাম দিয়ে কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

তবে সেন্টুর পালের মহিষ নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কার্যালয়ের রাজশাহীর যুগ্ম কমিশনার হাসনাইন মাহমুদ। তিনি মহিষের মালিকানা তদন্তে গঠিত কমিটি এবং নিলাম কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: