জেলা পরিষদ নির্বাচন: তথ্য গোপনরে রাখায় এক জনের মনোনয়রপত্র বাতিল

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:৫৩ এএম

সিরাজগঞ্জে জেলা পরিষদ নির্বাচনে তথ্য গোপন করার দায়ে আমিনুল ইসলাম আল আমিন ওরফে লাল বাবুর মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষনা করলেন রাজশাহী অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশন ও আপিল কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ সময় মনোনয়নপত্র যাচাই বাচাই ও শুনানীর শেষে এই আদেশ প্রদান করেন।

আদেশের অনুলিপি থেকে জানা যায় : সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৮ নং ওয়ার্ড বেলকুচি ও শাহজাদপুর এলাকায় সাধারন সদস্য পদে আমিনুল ইসলাম আল আমিন ওরফে লাল বাবু তার মনোনয়ন পত্রে তথ্য গোপন করে প্রথমে মনোনয়ন পত্র বৈধ করেছিলেন। হলফনামায় তার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই বলে উল্লেখ করেছিলেন। অথচো তার বিরুদ্ধে সরকারী গুরুত্বপুর্ন স্থাপনায় ধ্বংসাত্মক ও নাশকতা মূলক কার্যকলাপের নিমিত্তে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার মামলা চলমান রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের জেলা পরিষদ আইন ২০০০ এর ধারা ২০(২)(উ) ৩ মোতাবেক অতীতে তাহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত কোন ফৌজদারি মামলার রেকর্ড আছে কিনা থাকিলে উহার রায় কি ছিল তা উল্লেখ করতে হবে। কিন্তু আল আমিন বিধি ১২ এর উপবিধি (৩) এর দফা (গ) এর উপদফা (উ) এর অধীণ হলফনামা দাখিল করেনন নাই বা দাখিলকৃত হলফনামায় অসত্য বা অসম্পূর্ন তথ্য প্রদান করেছিলেন যা নির্বাচনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে।

আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আকারে শুনানীতে সিরাজগঞ্জ সদর থানার পুলিশ পরির্দশক (তদন্ত) সুকোমল চন্দ্র দেবনাথ জানান, ডি.এম.পি মোহাম্মদপুর থানায় ১১৮/৭৯৩ তারিক: ৩০-০৮-২০১৭, ধারা ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(১)(ক)/১৫(৩) বর্তমান মামলাটি বিজ্ঞ মহানগর বশেষ ট্রাইবুনাল নং ১০, যুগ্ন মহানগর দায়রা জজ ৫ম আদালতে সাক্ষ্য গ্রহনের জন্য রয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে যে ২০১৭ সালের ২৯ আগষ্ট রাতে মোহাম্মদপুর থানাধীন মিরপুর রোড সানরাইজ প্লাজা নামক মার্কেটের ৫ম তলার টাইম স্কয়ার নামক চাইনিজ রেষ্টুরেন্টের ভিতর কতিপয় জামাত শিবিরের নেতাকর্মীরা গত সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নাশকতামূলক কার্যকলাপের ষড়যন্ত্র মুলক গোপন বৈঠকে অংশগ্রহনকারী ২০/২৫ জন জামাত শিবিরের নেতা কর্মীদের পুলিশ ঘিরে ফেললে ৮/১০ জন পালাইয়া যায়। আটক কৃতদের মধ্যে ৫ নং আসামী আমিনুল ইসলাম আল আমিন ও একই মামলায় ১১ নং আসামী তার আপন ছোটভাই ইয়ামিন ইসলামকে আটক করে পুলিশ। চারশিটেও তাদের নাম উল্লেখ রয়েছে।

অভিযোগ প্রদানকারী কামরুল ইসলাম বলেন, আমার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম আল আমিন ওরফে লাল বাবু তার হলফনামায় তথ্য গোপন করে মনোনয়ন বৈধ করে চেষ্টা করেছেন। অথচো তার বিরুদ্ধে ঢাকা মোহাম্মদপুর থানায় সরকারী গুরুত্বপুর্ন স্থাপনায় ধ্বংসাত্মক ও নাশকতা মূলক কার্যকলাপের নিমিত্তে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার মামলাটি যুগ্ন মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আল আমিন এবং তার ভাই ইয়ামিন সেই সময় জামাত শিবিরের নেতা হিসেবে গ্রেফতার হয়ে ছিলেন।

কেন তিনি এই তথ্য গোপন করেছেন। তার জন্য আমি সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচন আপিল কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আবেদন করেছিলাম। আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে মামনীয় আপিল কর্তৃপক্ষ তার এই মনোনয়নপত্রটি নতুন করে আবার যাচাই বাচাই ও দীর্ঘ সময় শুনানী শেষে মনোনয়নটি অবৈধ ঘোষনা করেছেন। আমি আপিল কর্তৃপক্ষের এই আদেশে অনেক খুশি।

সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনের আপিল কর্তপক্ষ ও রাজশাহী অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু তাহের মো: মাসুদ রানা আদেশ অনুলিপিতে জানান, আমিনুল ইসলাম আল আমিন কোনক্রমেই তার নামে মামলার বিষয়টি অস্বীকার করতে পারেন নাই।

তিনি হলফনামায় জেনে শুনে তথ্য গোপন করেছেন মর্মে বিবেচিত হয়েছে। এক্ষেত্রে তিনি তার হলফনামায় মামলা সংক্রান্ত তথ্য গোপন করায় এর দ্বারা জেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ১৪ এর উপবিধি (৩) এর দফা (ঙ) অনুযায়ী বিধি লংঘিত হয়েছে বলে বিবেচিত হয়েছে। ফলে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত হস্তক্ষেপযোগ্য ও এ আপিল আবেদন মঞ্জুরযোগ্য বলে বিবেচিত হওয়ায় আদেশ হলো যে আপিলকারীর আপিল আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে যে সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচন ২০২২ প্রার্থী আমিনুল ইসলাম আল আমিন এর মনোনয়নপত্র গ্রহন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিল করা হলো।

তবে এ আদেশের বিষয়ে জানতে আমিনুল ইসলাম আল আমিননের সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হননি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: