শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আন্দোলন স্থগিত

প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:০৪ এএম

আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে: চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি ইউনুস স্মরণী স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ,ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, অফিস সহকারী ও ল্যাব সহকারীর বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এ উপলক্ষে শিক্ষার্থীরা এক প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র শাহাদাৎ, দশম শ্রেণীর ছাত্র দেওয়ান, সুমন, লিজা ও সাবরিনা।

প্রতিবাদ সমাবেশ, দীর্ঘদিন থেকে স্কুল মাঠে জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ভূমিকা না থাকা, স্কুল মাঠে হাট বসিয়ে পরিবেশ বিনষ্ট করা, অতিরিক্ত ফি আদায় ও প্রাণপ্রিয় প্রভাষক রফিকুল ইসলামকে অনিয়মের প্রতিবাদ করার কারণে অন্যায়ভাবে শোকজ, প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ লাইনের অচলাবস্থা, সুপেয় পানির সমস্যা সহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরা হয়।

এছাড়া সভাপতি, অধ্যক্ষ সহ কয়েকজনের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিরকথা তুলে ধরা হয়। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে দ্রুতই পুলিশ ফোর্স নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন গোমস্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আলমাস আলী সরকার ও বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম। তারা উত্তেজিত ছাত্রদের বিক্ষোভ প্রশমিত করতে চেষ্টা করেন।এক পর্যায়ে তারা শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে শ্রেণীকক্ষে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই শিক্ষার্থীরা আবার একত্রে জড়ো হয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনের রাস্তায় স্লোগান দিতে থাকলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ওসি ও ইউপি চেয়ারম্যান আবারো শিক্ষার্থীদের কাছে যান এবং পরিবেশ শান্ত করার চেষ্টা করেন। এরই মাঝে সেখানে উপস্থিত হন গোমস্তাপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আসমা খাতুন। তিনি সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ,অধ্যক্ষ ও অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে কথা বলেন। তাদের সকলের সাথে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয় যে, শিক্ষার্থীদের দাবি সমূহ পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে পদক্ষেপ গ্ৰহণ করা হবে। ইউএনও এবং ওসির আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা অবশেষে তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেন।

শোকজ প্রাপ্ত প্রভাষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাকে অন্যায়ভাবে দেয়া শোকজ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইউএনও মহোদয় বিষয়টি সমন্বয় করতে অধ্যক্ষকে বলেছেন। আমি ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাশে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।

বাঙ্গাবাড়ি ইউনুস স্মরণী স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি সমূহ আমার নজরে এসেছে। তাদের উত্থাপিত দাবি সমূহ যদি যৌক্তিক হয় অবশ্যই সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি আরও বলেন শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি সমূহ বাস্তবায়নের জন্য কারো উসকানিতে পরে এ আন্দোলন করেছে। তাদের দাবি সমূহ আদায়ে শিক্ষার্থীরা আমাদের শরনাপন্ন হতে পারতো।

এবিষয়ে কথা বলার জন্য বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

গোমস্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমাস আলী সরকার জানান, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে তাদের এবং প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। উভয়পক্ষ সমাধানে আগ্ৰহী হওয়ায় উত্তেজনা প্রশমিত করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা খাতুন (ইউএনও) বলেন, আমি সেখানে উপস্থিত হয়ে ম্যানেজিং কমিটি, অধ্যক্ষ,শিক্ষকমন্ডলী ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলি। শিক্ষার্থীদের দাবি সমূহ যাচাই বাছাই করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেই। শিক্ষার্থীরা আমাদের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তাদের চলমান আন্দোলন বন্ধ করে।

উল্লেখ্য, একই দাবিতে ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: