কউকের উচ্ছেদ অভিযানে দখলমুক্ত গণপূর্তের মাঠ, নির্মিত হবে পার্ক

প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:১৫ এএম

ক্ষতিপূরণের টাকা পায়নি দাবি করে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে কয়েক বছর ধরে কক্সবাজার শহরের কলাতলী রোড়ের হোটেল লং বিচের বিপরীত পাশে গণপূর্তের মাঠটি দখল করে রেখেছিল বাহারছড়ার অছিউর রহমানের ছেলে গিয়াস উদ্দিন। সেখানে অবৈধভাবে দেড়শতাধিক দোকান নির্মাণ করে ভাড়াও দিয়েছিল চক্রটি। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলা লড়েছে কক্সবাজার গনপূর্ত বিভাগ।

অবশেষে মামলার রায় নিজেদের পক্ষে এলে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) সাথে নিয়ে মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত যৌথ অভিযান চালিয়ে দেড় শতাধিক দোকানঘর গুঁড়িয়ে দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এবার দখলমুক্ত হওয়া মাঠে পার্ক নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন গণপূর্তের দায়িত্বরা।

কউক ও গণপূর্ত সূত্র জানায়, কলাতলী সড়কে আবাসিক ভবন নির্মাণে জন্য প্লট বরাদ্দের পর ওই এলাকায় ৩টি স্থানে ১ দশমিক ৫০ একর করে জমি খেলার মাঠ হিসাবে রাখা হয়। এরমধ্যে দুটি জমিতে পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু লং বিচের বিপরীত পাশের জমিটি প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় সেটিতে এতদিন পার্ক নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে গণপূর্তের কক্সবাজারস্থ নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, ১৯৬৩-৬৪ সালে অধিগ্রহণ করা জমি ব্যক্তি মালিকানা দাবি করে গিয়াস উদ্দিন আদালত থেকে স্থিতিবস্থা এনেছিল। কিন্তু তিনি সেখানে অবৈধভাবে দোকানপাট নির্মাণ করে এতদিন জোর দখল করে রেখেছিল। মালিকানার পক্ষে নিম্ন বা উচ্চ আদালতের কোথাও যথাযথ কাগজপত্র উপস্থাপন করতে না পারায় উচ্চ আদালত জমিটি মালিকানা গণপূর্তের বলে রায় দেন। একইসাথে সেখানে থাকা অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদে বাধা নেই বলেও অ্যাটর্নি জেনারেলকে লিখিতভাবে অবহিত করেছে আদালত। এই রায়ের পরেই মঙ্গলবার অভিযানটি চালানো হয়েছে।

প্রকল্প তদারক কর্মকর্তা কক্সবাজার গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ওমর ফারুক বলেন, আদালতের আদেশ পেয়ে আমরা কউকের সহযোগীতা চাই। পরে কউক, বিদ্যুৎ অফিস, আনসার বাহিনী ও পুলিশের সহযোগীতা নিয়ে ওই মাঠের চারপাশে নির্মিতি দেড় শতাধিক দোকান উচ্ছেদ করি। তারা আরও বলেন, ওই মাঠে এখন পার্ক নির্মাণ করা হবে। ওখানে পর্যটকসহ পথচারীদের বসার ব্যবস্থা থাকবে।

কউক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আবছার বলেন, কলাতলী সড়কের পূর্ব পাশের আবসিক এলাকার ব্লক ‘এ’ ও ‘বি’ এর মধ্যকার মাঠটির মালিক গনপূর্ত। তাদের নামে বিএস খতিয়ান ও গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু সেই মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে দখলে ছিল গিয়াস উদ্দিন। ২০১৮ সালে গণপূর্ত সেই মাঠে পার্ক নির্মাণ করতে গেলে গিয়াস উদ্দিন ক্ষতিপূরণের টাকা পায়নি দাবি করে কক্সবাজার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি মিথ্যা আবেদন করেন। পরে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেন আদালত। কিন্তু সেই আবেদনের তথ্য লুকিয়ে ফের উচ্চ আদালত থেকে ৬ মাসের স্থিতিবস্থা আনেন গিয়াস উদ্দিন। সেটিও ২০২২ সালের ২৩ আগষ্ট উচ্চ আদালত একটি আদেশে তুলে নেন এবং একইসাথে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চলমান মামলাটি বাতিল করেন। এছাড়া স্থিতাবস্থা তুলে নেওয়ায় অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদে কোন ধরনের আইনি বাধা নেই বলেও আদালত লিখিতভাবে জানিয়েজেন। আদালতের এমন আদেশ পেয়েই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সবুজায়নের মাধ্যমে পরিকল্পিত সমুদ্র নগরী নির্মাণে কক্সবাজার সকল ধরণের অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে কউকের উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: