অংশগ্রহণমূলক না হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা নেই: সিইসি

প্রকাশিত: ০৪ অক্টোবর ২০২২, ০২:৩৮ পিএম

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন যদি অংশগ্রহণমূলক না হয় তবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কিংবা ব্যালট পেপার প্রয়োজন পড়বে কিনা সেটার নিশ্চয়তা নেই। মঙ্গলবার (০৪ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের (ইএমএফ) সঙ্গে এক বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন।

সিইসি বলেন, আমরা যেটা চাচ্ছি ইভিএম বা ব্যালট মূল কথা নয়। মূল কথাটা হচ্ছে সবাইকে চেষ্টা করতে হবে একটা সুন্দর, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বিঘ্নে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্পন্ন করার। এবং ওখানে ইভিএম থাকল কি ব্যালট থাকলো সেটা বড় কথা নয়। নির্বাচন যদি অংশগ্রহণমূলক না হয় এবং ইফেক্টিভ প্রতিদ্বন্দ্বিতা যদি না নয়, ইভিএম কিভাবে বিহেভ করবে, ব্যালট কিভাবে বিহেভ করবে সেটার নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। ইভিএম, ব্যালটের প্রয়োজন পড়বে কিনা সেটারও নিশ্চয়তা নেই। আমরা প্রথমেই বলেছি আপনারা নির্বাচনে আসুন, অংশগ্রহণ করুন। অংশগ্রহণ করে নির্বাচনটাকে ফলপ্রসু করুন, যাতে নির্বাচনটা সুন্দর হয়, জনমানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।

তিনি বলেন, আমরা ইএমএফ-এর আলোচনা শুনেছি। উনারা এসেছিলেন, জানলাম যে আমাদেরর কাছে নিবন্ধিত এবং ইভিএম নিয়ে যে পারসেপশন আছে তার ব্যাখ্যা উনারা জানতে চাইলেন। নেগেটিভ যে পারসেপশন বিরাজ করছে সেটাকে দূরীভূত করার জন্য সচেষ্ট উনারাও।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, জাতীয় নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ এটা ডিপেন্ড করবে যদি সরকার প্রকল্প অনুমোদন করে। এর যে আর্থিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, সেটা যদি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গিতে যথার্থ মনে না হয় সরকার এই প্রকল্প নিয়ে একমত নাও হতে পারে। তবে আমাদের যে বিচার বিশ্লেষণ, প্রথমেই বলেছি আমরা এসেই কিন্তু ইভিএম সমর্থন করিনি। দীর্ঘদিন সময় নিয়ে বিভিন্ন পদ্ধতিতে যন্ত্রটাকে বোঝার চেষ্টা করেছি এবং ব্যাপক আলোচনা করেছি, এতে ব্যাপক অংশগ্রহণ পেয়েছি।

তিনি বলেন, ইভিএমে কারচুপি করার সম্ভব তার প্রমাণ কেউ দেখাতে পারেনি। ইভিএম দিয়ে হ্যাংকি সম্ভব নয়, এই ধারণাটাও ছিল না। কেননা, এটা একক মেশিন। আমরা উনাদের বলেছি, আপনারা আপনাদের কাজ করে যান। ভোটার এডুকেশনের একটা প্ল্যান আমাদের আছে। সেটাও আমরা বাস্তবায়ন করবো।

ইএমএফের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলীর নেতৃত্বে সংগঠনটির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয়।

আবেদ আলী বলেন, ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম (ইএমএফ) সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেয়েছে। আমরা ইভিএম এর পজেটিভ দিকগুলো তুলে ধরার জন্য বিভাগীয় শহরগুলোতে যাবো। এগুলো বিষয়ে আমরা কমিশনের সাথে আলোচনা করেছি এবং আগামী সংসদ নির্বাচনে ১৫০টি আসনে ইভিএমে নির্বাচন হবে বলে তারা জানিয়েছে। সরকার বরাদ্দ দিলে ইভিএমে ১৫০ আসনে ভোট করা সম্ভব তা না হলে এই সংখ্যাটা কমে আসবে।
ইভিএম নিয়ে আপনারা যেই প্রচারণা চালাবেন এতে আপনাদের স্বার্থটা কি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের স্বার্থের জায়গা গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং মানবাধিকার। যার ভোট সে যেন দিতে পারে সেজন্য আমরা ইভিএম নিয়ে প্রচারণা করবো। আমরা মনে করছি, ইভিএমে ভোট ভালো হবে।

সংগঠনের পরিচালক ও ডুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান বলেন, এদেশে দীর্ঘদিন ধরে ব্যালট পেপারে ভোট হয়েছে, ইভিএমেও হয়েছে। আমরা টেকনিক্যাল পারসন হিসেবে দেখছি ইভিএমে ম্যানুপুলেশন করার সুযোগ নেই। কিন্তু ব্যালট পেপারে ম্যানুপুলেট করার সুযোগ আছে। এই জায়গায় জনগণ হিসেবে আমার স্বার্থ আছে।

আপনাদের প্রচারণার বাজেট কে দিচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কাজ হচ্ছে ইলেকশন মনিটরিং করা। এটা সম্পূর্ণ এনজিও। আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই কাজটা করে আসছি। আমরা বিভিন্ন নির্বাচনে মনিটরিং করেছি। এটা আগামী নির্বাচনের সাথে কোন সম্পর্ক নেই।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: