আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে চোখ উঠা রোগ

প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০২২, ০৪:৩২ পিএম

মো. রিয়াদ হোসাইন, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) থেকে: গাজীপুরের কালীগঞ্জে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ। শেষ সপ্তাহে এ রোগের প্রকোপ এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, সকল বয়সী নারী পুরুষের পাশাপাশি শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায়। প্রায় প্রতিদিনই চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। তবে এ রোগে আক্রান্ত পরুষের সংখ্যাই বেশি।

জানা গেছে, উপজেলার প্রায় সর্বত্রই এ রোগে আক্রান্ত রোগী রয়েছে। এমনকি প্রায় প্রতিটি পরিবারেই দেখা মিলছে চোখ উঠার রোগীর। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, গ্রাম্য চিকিৎসক ও চক্ষু বিশেষজ্ঞদের কাছে চোখ ওঠা রোগীরা ভিড় করছেন। বাড়ির একজন সদস্য আক্রান্ত হলে পরিবারের প্রায় সব সদস্যই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

বেশ কিছু লক্ষণ নিয়ে রোগীরা চিকিৎসকের দারস্ত হচ্ছেন। তার মধ্যে চোখে ব্যাথা হওয়ার পাশাপাশি চোখ লাল হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখে ময়লা হওয়া ও খচখচ করা, রোদে অস্বস্তি লাগা অন্যতম।এ রোগে আক্রান্ত শিশুরা ৪-৫ দিনের মধ্যে ভালো হলেও বড়দের ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে।

এদিকে হঠাৎ করে এ রুগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় চোখের ড্রপের সংকটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। চাহিদার তুলনায় ড্রপ সাপ্লাই দিতে পারছেনা ঔষধ প্রতিষ্ঠান গুলো। এতে করে চাহিদা মতো ড্রপ না পেয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে রোগীরা। চিকিৎসকরা বলছেন, ভাইরাসজনিত চোখ ওঠা রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তবে আতঙ্কিত না হয়ে এ রোগে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

কালীগঞ্জ বাজারের ঔষধ ব্যাবসায়ী মো. ইমতিয়াজ রানা বলেন, গত প্রায় কিছুদিন ধরেই হঠাৎ করে চোখ উঠা রোগীর সংখ্যা দারুণ ভাবে বেড়ে গেছে। এই রোগের জন্য সাধারণত যে পরিমান ঔষধ লাগত তার দ্বিগুণ অর্ডার করেছিলাম ঔষধ প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে কিন্তু তার সাপ্লাই দিতে পারেনি। প্রতিদিন বহু মানুষকে ফেরৎ দিতে হচ্ছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মঞ্জুর-ই-এলাহী বলেন, চোখ উঠা রোদ হচ্ছে চোখের ভাইরাসজনিত ইনফেকশন, যা আসলে চোখের কনজাংটিভার প্রদাহজনিত সমস্যা। যে মৌসুমে বাতাসে আদ্রতা বেশি থাকে, সে সময় এ রোগটা বেশি হয়। এটি অতিমাত্রায় ছোঁয়াচেও। কখনো কখনো ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হলে চোখের কিনারে পুঁজ জমতে পারে ও সমস্যা জটিল হতে পারে। যেসব সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে তা হলো-ধুলাবালি, আগুন-আলো-রোদে কম যাওয়া, ময়লা-আবর্জনাযুক্ত স্যাতসেঁতে জায়গায় না যাওয়া, পুকুর বা নদী-নালায় গোসল না করা, চোখে কালো চশমা ব্যবহার করা, টেলিভিশন না দেখা। সম্ভব হলে ১০ থেকে ১৫ দিন সম্পূর্ণ বিশ্রাম নেয়া এবং চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া। সংক্রমিত রোগীদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা।

তিনি আরো বলেন, চোখের পানি বা ময়লা মোছার জন্য আলাদা তোয়ালে বা রুমাল ব্যবহার করা, পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। অপরিষ্কার রুমাল ব্যবহার করা যাবে না, এই সময়ে কালো চশমা পরা যেতে পারে, এতে বাইরের ধুলাবালু বা বাহ্যিক আঘাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, বাইরের পানি দিয়ে ঝাপটা দেওয়া যাবে না, চোখের পাতা বেশি ফুলে গেলে বরফ দেওয়া যেতে পারে, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু ওষুধ খাওয়া উচিত, হাত না ধুয়ে যখন-তখন চোখ ঘষা বা চুলকানো যাবে না, ওঠা শিশুদের আলাদা বিছানায় শোয়াতে হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: