বন্ধুকে বাচাতে গিয়েই কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় খুন লিখন, মূল হোতাসহ গ্রেফতার ৪

সাভারের আশুলিয়ায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় নিহত লিখন (১৮) হত্যা মামলার মূলহোতাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান। এর আগে মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) রাতে আশুলিয়া থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলো- কিশোর গ্যাং গ্রুপের লিডার মোঃ রনি (১৯) এবং তার অপর তিন সহযোগী রাকিব (১৮), মোঃ জিলানী (১৮) ও মোঃ সোহাগ (১৯)।
আসামী রনি কাইচ্চাবারি কিশোর গ্যাং গ্রুপের লিডার এবং তার দলে ১০/১৫ জন সক্রিয় সদস্য রয়েছে। ভুক্তভোগী মেহেদী অপর কিশোর গ্যাং গোচারটেক ভাই বেরাদার গ্যাং গ্রুপের সদস্য এবং নিহত লিখন মেহেদীর বন্ধু এবং পূর্ব পরিচিত।
র্যাব জানায়, ঘটনার কিছুদিন পূর্বে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোচারটেক ভাই বেরাদার গ্যাংয়ের কয়েকজন সদস্য কাইচ্চাবাড়ি গ্যাংয়ের সদস্য আদরকে মারধর করে। বিষয়টি আদর কাইচ্চাবাড়ি কিশোর গ্যাং লিডার রনিকে জানালে রনি এবং তার গ্রুপ এই ঘটনার প্রতিশোধ গ্রহণের পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ৪ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে আশুলিয়া পলাশবাড়ি গোচারারটেক ইস্টার্ন হাউজিং মাঠের পাশে লোহার রড ও ধারালো দেশীয় অস্ত্রসহ রনির দল অবস্থান করে। সে সময় মেহেদীকে ঘটনাস্থলের পাশ দিয়ে যেতে দেখে তারা। পরে মেহেদীর পথরোধ করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে বেদম মারপিট করতে থাকে। ঘটনস্থলের পাশে মাঠে বসে মোবাইল ব্যবহার করছিল নিহত লিখন।
এসময় তার বন্ধু ভিকটিম মেহেদী’কে মারধর করতে দেখে তার জীবন বাচাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে মেহেদীকে বাচানোর চেষ্টা করে। এসময় কাইচ্চাবাড়ি কিশোর গ্যাং সদস্যরা রনির নেত্বেত্বে মেহেদীর সাথে নিহত লিখনকেও এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে।
এক পর্যায়ে লোহার রডের আঘাতে লিখন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। পরে হামলাকারীরা গুরুতর আহত লিখন এবং মেহেদীকে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় জনগণ গুরুতর আহত অবস্থায় উভয়কে উদ্ধার করে লিখনকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এবং মেহেদীকে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। আহত মেহেদী চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠলেও গুরুতর আহত লিখন গত ৫ জুলাই সকালে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুরণ করেন।
এ ঘটনায় নিহতের চাঁচা শরীফুল ইসলাম বাবু বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় রনি, এনায়েতসহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উক্ত চাঞ্চল্যকর হত্যা ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে ও জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে র্যাব-৪।
ঘটনার পর থেকেই কাইচ্চাবাড়ি গ্রুপের কিশোর গ্যাং লিডার রনিসহ অন্যান্য আসামীরা দিনাজপুর, রংপুর, পটুয়াখালী, বরিশাল, ঝালকাঠি ও গাজীপুরে আত্মগোপনে ছিল এবং এসময় তারা কোন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেনি। একপর্যায়ে তাদের টাকা-পয়সা শেষ হয়ে গেলে টাকা-পয়সা সংগ্রহের জন্য গোপনে আশুলিয়া এলাকায় এলে র্যাব-৪ এর চৌকস টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীরা সকলেই মারপিটের সাথে জড়িত মর্মে র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান জানান, গ্রেফতার আসামীদেরকে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সেই সাথে উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামীদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: