অতিরিক্ত পানি পান করিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের শাস্তি, শিক্ষক বলছেন ফান

বাড়ির কাজ না করায় অতিরিক্ত পানি পান করিয়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শাস্তি দেওয়ার ঘটনায় বরিশাল কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলাম মামুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আজ বুধবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর খোন্দকার অলিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন ।
অভিযোগ প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। প্রফেসর খোন্দকার অলিউল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণের ঘটনায় বিদ্যালয় প্রশাসন খুবই মর্মাহত। বিদ্যালয়ের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মহোদয় ইতোমধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘটনা তদন্তে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রফেসর খোন্দকার অলিউল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও লেখাপড়ার পরিবেশ অটুট রাখতে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছি। তদন্তে ইংরেজি শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলাম মামুন দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) কালেক্টরেট স্কুলে তৃতীয় শ্রেণির শিমুল শাখায় ইংরেজি ক্লাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে অন্য দুই শিক্ষিকা অসুস্থ ওই শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে টিচার্স রুমে নিয়ে যায়। নির্যাতনের শিকার শিশু আফসানের মা মিসেস আব্দুল হালিম বলেন, তার ছেলে গত সোমবার স্কুলে যায়নি। আগের দিনের পড়া সে জানে না। মঙ্গলবার ইংরেজী ক্লাসে হোমওয়ার্ক না আনার অজুহাতে ৬ শিশুকে জোর করে অতিরিক্ত পানি পান করিয়েছে শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলাম মামুন। যতক্ষণ বমি না করেছে ততক্ষণ জোর করে পানি খাইয়েছে। এতে তার ছেলে আফসানসহ তিনজন বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।
এছাড়া এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনের মামলা হওয়া উচিত বলে মনে করেন উপ-সচিব মো. আব্দুল হালিমের সহধর্মিণী। পানি পানে অসুস্থ হয়ে পড়া আরেক শিশু শাহরিয়ানের বাবা মাহমুদুন্নবী বলেন, অসুস্থতাসহ নানা কারণে একজন শিশুর হোমওয়ার্ক না-ও হতে পারে। তাই বলে শিশুদের জোর করে দুই বোতল পানি খাওয়ানো অমানবিক।
নির্যাতনের শিকার আরেক শিশু আয়ানের মা আবিদা সুলতানা (ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক) মুঠোফোনে বলেন, ক্লাসে হোমওয়ার্ক না আনায় তার ছেলেসহ অন্যদের অতিরিক্ত পানি খাইয়ে শাস্তি দিয়েছে একজন শিক্ষক। অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলাম মামুন বলেন, শিশুদের সাথে তিনি ফান করেছেন। বিষয়টি যে এতটা সিরিয়াস হয়ে যাবে তা বুঝতে পারেননি। এ ঘটনায় তিনি অনুতপ্ত। বিষয়টি ভুল হয়ে গেছে বলে স্বীকার করেন তিনি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, শিশু নির্যাতনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রেজানুল/সা.এ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: