কালীগঞ্জে এক গ্রামের তিনজন বঙ্গুবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক পেলেন

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২২, ০৯:০৫ পিএম

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে কৃষিতে অবদান রাখায় এক গ্রামের তিনজন কৃষক কৃষানী বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক পেতে সক্ষম হয়েছেন। যা বাংলাদেশে এই প্রথম এক গ্রামের তিনজন পদক পেয়ে এলাকার গৌরব অর্জন করেছেন। এ ছাড়া এ গ্রামের নারী পুরুষ জৈব কৃষি কাজ করে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে সহযোগিতা করায় বেশ কয়েকজন জাতীয় ও স্থানীয় পুরস্তার পেয়েছেন। গ্রামের ১০০ নারী ও পুরুষ বাড়ির কাজের পাশাপাশি জৈব সার অর্গানিক সবজি এবং ফসল উৎপাদন করেছেন। ইতিমধ্যে এই গ্রাম কে কৃষি অফিসের পক্ষথেকে আদর্শ কৃষি গ্রাম হিসাকে সীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

গ্রামটি হল কালীগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের মহেশ^রচাদা। কৃষিতে অবদান রাখায় গত ১২ অক্টোবর ২০২২ বঙ্গবন্ধ জাতীয় কৃষি পদক পেয়েছেন মকবুল হোসেন নামের এক কৃষক। এর আগে এই গ্রাম থেকে কৃষিতে পদক পেয়েছিলেন মর্জিনা বেগম ও হেলাল উদ্দিন। পাশের গ্রামের মনোয়ারা বেগম কৃষিতে অবদান রাখায় তিনি ও জাতীয় পদক পেয়েছিলেন। তাদের কাজ জৈব কৃষি মাটি ও মাটির স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা। তাদের সব সময় চিন্তা ভাবনা করেন কেচোও কম্পোজ এবং কেচো উৎপাদন, নিরাপদ বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করা।

যা থেকে তারা প্রতি মাসে ৩৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয করে থাকেন। এ ছাড়া জৈবকৃষি নিয়ে কাজ করে ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন মর্জিনা,হেলাল ও মকবুল হোসেন। পরিবর্তন হয়েছে তাদের সংসারের স্বচ্ছতা। এলাকায় সাড়ে ৪০০ কৃষক কৃষানিকে উৎবুদ্ধ করেছেন কেচো কম্পোজ সার উৎপাদন করতে। পাশের অনেক গ্রামের নারী ও পুরুষদের অর্থ উপার্জনের পথ দেখিয়েছেন। একসময়ে তারা প্রতিদিন এক বেলা খেয়ে দিন কাটাতেন কিন্তু এখন তারা গাড়ি বাড়ির মালিক হয়েছেন। এসব করেছেন জৈবসার,কেচো ও জৈবকৃষি সার বিক্রি করে।

২০০৭/২০০৮ সালের দিকে নিয়ামতপুর ইউনিয়নের বলারামপুর গ্রামের মর্জিনা বেগম, সামছুল, মাজেদা, মহেশ^রচাদা গ্রামের হেলাল উদ্দিন, মকবুল হোসেন, মস্তবাপুর গ্রামের মনোয়ারা বেগম সুখজান বেগম, রেবেকা বেগম, মল্লিকপুর গ্রামের আসাদুল, জুথি জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ, কেচো কম্পোজ সার ও কেচো উৎপাদন আয়বর্ধন মুলক প্রশিক্ষন গ্রহন করেন। জাপান ও আমেরিকাসহ বিদেশি কয়েকজন তাদের প্রশিক্ষন দেয়। এরপর তারা নিজের বাড়তে জৈববালাই নাশক, কেচোসার ও কেচো উৎপাদন তৈরি শুরু করেন।

মর্জিনা বেগম জানান, হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড এর কাছ থেকে প্রশিক্ষন ও সহয়োগিতা নিয়ে এই কাজ শুরু করেন। এর পর নিজেই বড় একজন কৃষি উদ্যোক্তা হন। অনেক নারীদের কেচো কম্পোজ সার ও কেচো উৎপাদনের প্রশিক্ষন দিয়েছেন। যার স্বীকৃতি পেয়েছেন বঙ্গুবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক। মনোয়ারা বেগম বলেন, তিনি এলাকায় নারীদের নিরাপদ উপায়ে সবজি উৎপাদন,কেচো সার ও কেচো উৎপাদনের জন্য প্রশিক্ষন প্রদান করেছেন। নারীদের আতকর্মসংস্থানের তৈরিতে নানা ধরনের প্রশিক্ষন প্রদান করেছেন।

জাতীয় কৃষিপদক প্রাপ্ত মবকুল হোসেন বলেন, হাঙ্গার ফ্রে ওয়াল্ড থেকে কেচো কম্পোজ সার উৎপাদন, বাজারজাতকরন, নিরাপদ সবজি উৎপাদনের প্রশিক্ষন নিয়েছিলাম। সেই কাজ করতেকরতে সরকার জাতীয় সীকৃতি দিয়েছেন। হেলাল উদ্দিন বলেন মাটি ও মানুষের জন্য কাজ করছেন বলে তিনি অনেক খুশি। প্রোগ্রাম আফিসার শাহাজান আলী জানান, নিয়ামতপুর ইউনিয়নের ১৩ গ্রামের নারী পুরুষদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কেচোসার, জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ করনের জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিলন ২০০৬/২০০৭ সালের দিকে।

তখন ঐ এলাকায় ২০/২৫ জন কাজ শুরু করছিলেন। কিন্তু এখন তারা সফর উদ্যোগতা। নিয়ামতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যন রাজু আহমেদ রনি বলেন, তার ইউনিয়ন বাংলাদের সেরা ইউনিয়ন। এই ইউনয়নের ১৩ গ্রামের সাড়ে ৪০০ নারী পুরুষ জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ, কেচোসার ও কেচো উৎপাদন করেন। কালীগঞ্জ উপজেলা কুষি আফিসার মোহায়মেন আক্তার বলেন, এটা বাংলাদের মধ্যে একটা অহংকার ও গর্বের বিষয় বাংলাদেশে এই প্রথম বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক পেয়েছেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: