ঢাবিতে শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহাম্মদ মুহসিন হলের বরাদ্দকৃত কক্ষে এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে উঠতে আসতে এলে তাঁকে, বরাদ্দকৃত কক্ষে উঠতে না দিয়ে গলাধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রাতে হলের ৫৬২ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ফারহান সাইফুল, তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় হল প্রাধ্যক্ষকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফারহান সাইফুল বলেন, “বৃহস্পতিবার দুপুরে আমাকে হল থেকে এই রুমে সিট বরাদ্দ দেয়া হয়। আমি বিকেলের দিকে বিছানাপত্র নিয়ে সিটে উঠি। সন্ধ্যার দিকে অভিযুক্তদের কয়েকজন এসে বলে, তোরা এই রুমে কেন? এই রুম তো আমাদের। আমি বলি, হল প্রশাসন আমাকে বরাদ্দ দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এ সময় তারা বলে- হল কীভাবে চলে তুই জানস না? হল কি প্রশাসন চালায়? এর কিছুক্ষণ পর অভিযুক্ত বাকিরাও চলে আসে। পরে তারা সবাই মিলে সঙ্গে থাকা অন্যান্য হলের বন্ধুদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। শেষে আমাকেও টেনে বের করে দেয়া হয়। এ সময় পেছন থেকে কয়েকজন লাথিও দেয়।”
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে সাতজনের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের তাওহীদুল ইসলাম, ম্যানেজমমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শরিফুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ২০১৮-১৯ সেশনের শাখাওয়াত ওভি, ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শেখ ইমরান ইসলাম ইমন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের মুনতাসীর হোসেন, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মুহাম্মদ সামিন চৌধুরী এবং মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস মোল্লা তাজ।
তারা সবাই হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেনের অনুসারী। অন্যদিকে মোহাম্মদ হোসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী।
এ বিষয়ে হাজী মুহাম্মদ মুহসিন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ওই রুমে তিন মাস আগে আমাদের ছেলেরা উঠছিল। এক বড় ভাই তাদের সিট দিয়ে গেছে। পরে রকি নামে এক বড় ভাই নাকি বহিরাগত ছাত্র তুলতে গিয়ে ঝামেলা হয়। এর বেশি কিছু আমি জানি না৷
তবে শিক্ষার্থীরা জানান, এই রুমে এতদিন পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থী অবস্থান করতেন। তিনি চলে যাওয়ার পরই হল থেকে রুম বরাদ্দ নিয়ে রুমে উঠেন সাইফুল।
পরবর্তীতে রাত পৌনে ৮টা নাগাদ হলের আবাসিক শিক্ষক আইনুল ইসলাম ও মো. ইমাউল হক সরকার (টিটু) গিয়ে রুমটিকে তালাবন্ধ করে দেন।
এর আগে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ হলের আবাসিক শিক্ষক আইনুল ইসলাম ও মো. ইমাউল হক সরকার (টিটু) ৫৬২ নম্বর রুমে গিয়ে দরজা খুলতে বললেও ছাত্রলীগ কর্মীরা দরজা খুলেনি৷ এসময় তারা শিক্ষক পরিচয় দিলেও ভেতরে থাকা ছাত্রলীগ কর্মীরা দরজা খুলেনি। এসময় শিক্ষকরা রুমে তালা দেওয়ার কথা বললে প্রায় ৪০ মিনিট পর ভেতরে থাকা ছাত্রলীগের কর্মীরা দরজা খুলে।
এ সময় রুমের ভেতরে ছাত্রলীগের ছয়জন কর্মী অবস্থান করছিলেন। তারা হলেন, ইংলিশ ফর স্পিকার অব আদার ল্যাংগুয়েজের আরাফাত হোসেন মাহিন, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এনামুল হক পলাশ, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের মারুফ, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শরীফুল ইসলাম, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিবলী সাদিক, ইসলামিক স্টাডিজের মুনতাসির হোসেন৷ এরা সকলেই ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে আবাসিক শিক্ষক ও কক্ষ বরাদ্দ বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক আইনুল ইসলাম বলেন, নিঃসন্দেহে শিক্ষকদের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা একটি অপরাধ। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে জানানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিশ্চয় ব্যবস্থা নেব।
এদিকে হাজী মুহাম্মদ মুহসিন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাসুদুর রহমান বলেন, হল কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে রুমটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে রুমটি বৈধ শিক্ষার্থীর কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: