যৌতুকের দাবিতে অন্তঃসত্তা স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০২২, ০৯:০৪ পিএম

নড়াইলে যৌতুকের দাবিতে অন্তঃসত্তা স্ত্রী মুক্তা মনি বেগমকে হত্যার অভিযোগে স্বামী মো. লাভলু মীরকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অপর ৪ আসামীকে খালাস প্রদানের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে নড়াইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সানা মো. মাহরুফ হোসাইন এ আদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত মো. লাভলু মীর জেলার লোহাগড়া উপজেলার চরবগজুড়ি গ্রামের লায়েব আলী মীরের ছেলে। রায় শোনার পর আসামী লাভলু মীর কাঠগড়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।

মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০০৭ সালে আসামী মো. লাভলু মীরের সাথে নিহত মুক্তা মনি বেগমের বিবাহ হয়। বিবাহের পর আসামী লাভলু মীরের ঔরষে ও নিহত মুক্তা মনির গর্ভে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। তার নাম মেহেরাব। এই পুত্রের জন্মের পর বিভিন্ন সময়ে আসামীরা নিহত মুক্তা মনি ও তার পরিবারের লোকজনের কাছে ২লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল।

বিগত ২০১২ সালের ২১ মে বেলা ১২টার সময় লোহাগড়া থানার চরবকজুড়ি গ্রামে স্বামীর বসতবাড়িতে আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে ও সহায়তায় ২লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে না পেয়ে ক্ষোভে বাদীর বোন মুক্তা মনি বেগমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং লাশ গুম করার জন্য মধুমতি নদীর পানিতে ফেলে দেয়। এ সময় মুক্তা মনি ৪ মাসের অন্তঃসত্তা ছিল। আসামীরা কিছু সময় পর নাটক সাজিয়ে নিহত মুক্তা মনির লাশ পানি থেকে তুলে এনে পানিতে ডুবে মারা গেছে বলে জানায়।

বাদীসহ তার আত্মীয় স্বজনরা আসামীদের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পায় যে, নিহত মুক্তা মনির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে এবং গলায় শ্বাসরোধ করে হত্যার চিহৃ দেখতে পায়। এ ঘটনায় নিহতের বোন সালেহা সুলতানা বাদী হয়ে নিহতের স্বামী মো. লাভলু মীরসহ ৫জনকে আসামী করে ২০১২ সালের ৪জুন লোহাগড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা নিহতের স্বামী মো. লাভলু মীর এবং লায়েব আলী মীর, লাভলী বেগম, মামুন মীর ও মোসা. লিজা বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতে ৯জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামী মো. লাভলু মীরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদন্ড ও ৫০হাজার টাকা জরিমানা এবং অপর ৪জন আসামীকে খালাস প্রদানের আদেশ দেন বিচারক। খালাস প্রাপ্তরা হলেন লায়েব আলী মীর, লাভলী বেগম, মামুন মীর ও মোসা. লিজা বেগম।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: