শহীদ মিনারে মাসুম আজিজের মরদেহে সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদন

প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২২, ০২:৫৭ পিএম

প্রয়াত একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনয়শিল্পী, নাট্যকার ও নির্মাতা মাসুম আজিজের মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন সর্বস্তরের মানুষ। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁর মরদেহ নেওয়া হলে সেখানে সব বয়সী মানুষ তাকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর আগে বনশ্রীতে সকাল ৯টায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ২য় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে নিজ জন্মস্থান পাবনার নিজ গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার কথা রয়েছে এই গুণী শিল্পীর। এখানে সর্বস্তরের মানুষের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় সিক্ত হন তিনি। এই প্রবীণ অভিনয় শিল্পীকে এরপর বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নেয়া হবে।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাবেক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমি তাকে কখনো মনোবল হারাতে দেখিনি। অঙ্গীকারবদ্ধ নাট্যকর্মী যারা, তাদের মধ্যে একজন প্রধান ব্যক্তি আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।

অভিনেত্রী দিলারা জামান বলেন, মাসুম ভাই অত্যন্ত কাজপাগল মানুষ ছিলেন। বড় অসময়ে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। এতে আমাদের অপূরনীয় ক্ষতি হয়ে গেল।

চলতি বছরের শুরুর দিকে মাসুম আজিজের ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে। ১০ মাস ধরে তার চিকিৎসা চলছে। এরপর কেমোথেরাপি ও রেডিও থেরাপি নিচ্ছিলেন তিনি। এর মধ্যে হঠাৎই শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে গত সপ্তাহে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। সোমবার (১৭ অক্টোবর) চিকিৎসার অবনতি ঘটেলে বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে মারা রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই গুণী অভিনেতা।

১৯৫৩ সালের ২২ অক্টোবর হবিগঞ্জ বানিয়াচংয়ে জন্ম এ গুণী শিল্পীর। তাঁর বাবা আখতারুজ্জামান এবং মা সৈয়দা আজিজা সুলতানা। হবিগঞ্জ বানিয়াচংয়ে জন্মস্থান হলেও আদি নিবাস পাবনা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি থিয়েটারে কাজের মাধ্যমে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর ১৯৮৫ সালে তিনি প্রথম টিভি নাটকে অভিনয় করেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি চার শতাধিক নাটকে অভিনয় করেন। পরবর্তীতে বহু দর্শকপ্রিয় নাটকে দেখা গেছে তাকে।

আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে তিনি টিভিতে কাজ করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাটক হলো- ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’, ‘সাকিন সারিসুরি’, ‘তিন গ্যাদা’, ‘দুই দুকুনে চার’ ইত্যাদি।

বহু সিনেমায়ও অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন মাসুম আজিজ। ‘ঘানি’ সিনেমায় অভিনয় করে ২০০৬ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রের অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। চলতি বছর তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে সরকার।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: