ভিডিও কলে স্ত্রীকে রেখেই নিজের প্রাণ দিলেন স্বামী

প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০২২, ০৪:১১ পিএম

মাজহারুল ইসলাম, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে স্বামীর আত্নহত্যার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলায় পৌরসভা হাতকোপা এলাকার সাদেকুর রহমান ও সাহেলা দম্পতির একমাত্র ছেলে মাকসুদূর রহমান সোহান (৩৪) তার স্ত্রী স্মৃতি জামান (২৮) এর পরকীয়া সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেছেন বলে জানায় সোহানের পরিবার ও এলাকাবাসী।

গত ২৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেল আনুমানিক পৌনে পাঁচটায় সোহান তার নিজ বাড়ির তিনতলার শয়নকক্ষে ফ্যানের রডের সাথে রশি বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেন।

নিহত সোহানের মা সাহেলা রহমান বলেন, আমার ছেলে তার রুমেই ছিলো, আমি পাশের বাড়িতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ আমার ছেলের বউ স্মৃতি জামান তার বাপের বাড়ি ঢাকার খিলক্ষেত থেকে আমার মোবাইলে কল দিয়ে জানায় যে, আমার ছেলে তার রুমে কিছু একটা অঘটন ঘটাচ্ছে। আমিসহ আমাদের আশপাশের লোকজন নিয়ে দৌড়ে গিয়ে আমার ছেলেকে গলায় ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। সেখান থেকে সকলের সহযোগিতায় আমরা তাকে সোনারগাঁও স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার ছেলেকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

নিহত সোহানের মা বলেন, মৃত্যুর খানিকক্ষণ পূর্বেও আমার ছেলে তার স্ত্রী স্মৃতির সাথে ভিডিও কলে কথা বলছিলো। তার সাথে বাকবিতণ্ডা সহ্য করতে না পেরে ভিডিও কলে থেকেই আমার ছেলে ফাঁসিতে ঝুলে আত্নহত্যা করেছে।

জানা গেছে, নিহত সোহানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন তদন্তের জন্য সোনারগাঁ থানা পুলিশের হাতে রয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, পরকীয়ায় জড়িত স্ত্রী স্মৃতির সাথে প্রায়ই কথাকাটাকাটি হতো সোহানের। হয়তো ভিডিও কলে কথা বলার সময় স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয়ে ঝগড়া বিবাদ হয়, আর তখনই সহ্য করতে না পেরে সোহান গলায় ফাঁস দিয়ে ভিডিও কলে থেকেই আত্নহত্যা করেছে বলে তার পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি। যার কারণেই সোহানের স্ত্রী মোবাইল ফোনে তার শাশুড়ীকে নিশ্চিত করে (সোহানের মৃত্যু) অঘটনের ঘটনা জানাতে পেরেছে। এলাকাবাসী ও পরিবারের দাবী স্ত্রী স্মৃতি জামানই সোহানের মৃত্যুর জন্য দায়ী।

নিহত সোহানের ছোট খালা ডালিয়া বেগম বলেন, আমার বড় বোনের ছেলে সোহান তার স্ত্রী স্মৃতিকে যথেষ্ট ভালোবাসতো। সে পরিবারসহ সৌদি আরবের তাবু শহরে বসবাস করতো। সেখান থেকে আমাকে অনেকবার মোবাইল ফোনে জানিয়েছিলো তার স্ত্রী ম্যাসেঞ্জারে ছেলেদের সাথে রাতভর চ্যাটিং করে। এসব নিয়ে সেখানেও অনেক ঝগড়া বিবাদ হতো। গত দেড় বছর ধরে সোহান সৌদি আরব থেকে তাদের দুই মেয়েসহ স্বপরিবারে দেশে ফিরে আসে। দেশে আসার পর স্মৃতি পরকীয়ায় লিপ্ত হলে আমাকে সোহান কয়েকবার বিষয়টি জানায়। আমি স্মৃতিকে বোঝাতে চেষ্টা করি।

উল্লেখ্য, এর আগে সোহান সৌদিতে থাকাকালীন তার স্ত্রী ডাক যোগে সোহানকে একটি তালাক নামা পাঠায়। তারপর সোহান দেশে এসে স্ত্রীকে বুঝিয়ে আবার নতুন করে সংসার শুরু করে।

এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ওসি তদন্ত আহসান উল্লাহ বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই সোহানের মৃত্যুর কারন জানতে পারবো।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: