ফরিদপুরে পেঁয়াজ চাষে অনিশ্চয়তা, আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি

প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০২২, ০৯:১২ এএম

ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে পেঁয়াজ চাষে অনিশ্চয়তায় পড়েছে ফরিদপুরের কৃষকগোষ্ঠী। ফরিদপুরে নিম্নাঞ্চলের মাটি পেঁয়াজ উৎপাদনে ভালো হওয়ায় পেঁয়াজ-ই এই অঞ্চলের প্রধান ফসল। কিন্তু হঠাৎ ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে পানির নিচে পেঁয়াজের জমি একই সাথে পেঁয়াজের বীজতলাগুলোও পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে। এমনই এক মুহূর্তে পেঁয়াজ চাষে অনিশ্চয়তায় রয়েছে ফরিদপুরের নিম্নাঞ্চলের জমিগুলো, অপরদিকে উচু জমিগুলোতে পেঁয়াজের ফলন ভালো না হওয়ায় সেখানে অন্যান্য ফসলের চাষ করা হয়।

এদিকে ফরিদপুরের নগরকান্দা,সালথা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে জানা যায়, অধিকাংশ কৃষক পেঁয়াজ চাষে জমি প্রস্তুুতি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন , ঠিক এই মুহূর্তে ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে পানি নিচে সকল জমি, বিপাকে কৃষক। চড়া মূল্যে পেঁয়াজের বীজ ক্রয় করে তা নষ্ট হওয়ায় পথে বসার উপক্রম কিছু কৃষক। অধিকাংশ জমিতে হাটু পানি আবার কিছু জমিতে কোমড় পানি হয়েছে বলে জানা যায়। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এপানি কমতে অনক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার ততোক্ষণে পেঁয়াজ চাষের মৌসুম থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সঠিক সময়ে পেঁয়াজের বীজতলা দিতে না পারলে সঠিক সময় পেঁয়াজের চারা রোপন করাও সম্ভব নয়। আবার সঠিক সময়ে পেঁয়াজের চারা রোপন করা সম্ভব না সময়মত পাটের বীজ ও বোপন করা সম্ভব হবে না। সব মিলিয়ে কৃষকদের আশায় যেন গুড়েবালি হওয়ার উপক্রম। এসময় কৃষকরা জানান, ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং এর পরে এখনও পানি বাড়তেছে তবে অল্প, কিন্তু খুব শীঘ্রই পানি না কমলে পেঁয়াজ চাষ করা হয়তো সম্ভব হবে না।

অপরদিকে ফরিদপুরের সালথায় বৃষ্টিতে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। সোমবার (২৪ আগস্ট) ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর সারাদিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ফসলের মাঠে পানি জমে গেছে তলিয়ে গেছে জমির পাকা ধান। এ অবস্থায় ফলন কম হওয়ার পাশাপশি উৎপাদন খরচ উঠবে কিনা, সে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকের কপালে।

সালথা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ১০হাজার ৭শত ৬২ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ ভাগ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। কৃষকের ঘরে পৌঁছেছে ১৫ ভাগ জমির ধান। বাকি ১০ ভাগ কাটা ধান ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে হওয়া বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানান। সালথা সদরের কৃষক কৃষ্ণ চন্দ্র মন্ডল বলেন, আমাদের খেতের প্রায় সব ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। কেউ কেউ ধান কেটে জমিতে গাদি মেরে রাখছে। সেই গাদির ধানও ডুবে গেছে। এবারের বৃষ্টিতে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে।

উপজেলার ভাওয়াল গ্রামের ফরিদ মোল্লা বলেন, কৃষি শ্রমিকের অভাবে ৩ বিঘা জমির ধান কাটতে পারি নাই। ১ বিঘার ধান কেটেছি। কিন্তু বাড়ি আনতে পারি নাই। খেতে ধান ভাসছে। পুরুরা গ্রামের মহিদ মোল্লা ৬ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছেন। এ কৃষক বলেন, খেতের ধান এখনও পুরোপুরি কাটা হয়নি। যা কাটা হয়েছে খেতেই পড়ে আছে। বৃষ্টি একদম শেষ করে দিল। কি করব এখন বুঝতি পারছিনা। একই গ্রামের কৃষক নাছির উদ্দীন বলেন, বৃষ্টিতে ধান তো গেলোই সঙ্গে বিচেলিগুলোও নষ্ট হয়ে গেল। ধান বিক্রির পাশাপাশি বিচেলিগুলো বিক্রি করতে পারলে লাভ একটু বেশি হয়। এখন বিচেলিগুলো পঁচে যাচ্ছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: