বড়াইগ্রামে গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে ভিজিডির চাউল আত্মসাতের অভিযোগ
মোতালেব হোসেন, বড়াইগ্রাম (নাটোর) থেকে: নাটোরের বড়াইগ্রামে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ২১ মাসের ২ টি ভিজিডি কার্ডের (৪২ বস্তা) চাউল আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে বেলাল হোসেন নামে এক গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে। এক ভুক্তভোগী এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ওই গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগের বিবরণ ও ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার ২নং বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড দাঁইড়পাড়া গ্রামের মোছাঃ আছিয়া বেগম ও চকপাড়া গ্রামের মইফুল বেগম নামে দুই জনের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ভিজিডি কার্ড তাদের কাছে না দিয়ে তা গোপন রেখে গত ২১ মাস যাবৎ উক্ত কার্ডধারীদের চাউল তুলে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত গ্রাম পুলিশ বিল্লাল হোসেন। যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৪২ বস্তা বা ১২৬০ কেজি চাউল।
ভুক্তভোগী আশিয়া বেগম ও তার স্বামী শমসের আলী তাদের জন্য বরাদ্দ চাউল ফেরত চেয়েছেন। বিষয়টি জানতে পেরে আছিয়া বেগমের স্বামী শমসের প্রামানিক উপজেলা খাদ্য অধিদপ্তর অফিসে যোগাযোগ করলে তার স্ত্রীর নামে কার্ড আছে বলে নিশ্চিত হন।
ভুক্তভোগীর স্বামী শমসের প্রামানিক জানান, তার তিনটি সন্তান যার একজন খুবই অসুস্থ। তাদের নিজস্ব কোন জায়গা জমি না থাকায়, উপলশহর আশ্রয়ন প্রকল্পের সরকারের দেওয়া ঘরে তারা বসবাস করেন। করোনা কালীন সময়ে তারা খুবই কষ্টের সহিত দিনযাপন করেছেন।
তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া তাদের প্রাপ্য চাউল যারা চুরি করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এবং সরকারের দেওয়া তার স্ত্রীকে প্রাপ্য চাউল ফেরত চাই। এ ব্যাপারে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।
আছিয়া বেগমের ভিজিডি কার্ডের বিষয়ে বর্তমান ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, আছিয়া বেগমের কার্ডটি সাবেক মেম্বার করে গিয়েছিল। তিনি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর এই জঘন্য বিষয়টি জানতে পারেন, পরে তিনি ভুক্তভোগীকে কার্ডটি পাইয়ে দেয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করেন,এবং ২৬/১০/২০২২ তারিখে চেয়ারম্যান ভুক্তভোগীর হাতে কার্ডটি হস্তান্তর করেন। তবে, গ্রামপুলিশ বেলালের নামে এধরনের আরও অভিযোগ আছে।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে খোঁজখবর নিতে গিয়ে একই ওয়ার্ডের চকপাড়া গ্রামের মইফুল বেগমের ভিজিডি কার্ডের চাউল আত্মসাৎ এর বিষয়টি উঠে আসে। এই কার্ড ধারী শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এক মাসেরও চাউল উত্তোলন করতে পারেননি। এমনকি তার নামে কার্ড ছিল এটা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ওই গ্রাম পুলিশ না জানিয়ে এতদিন ভোগ করেছেন।
উল্লেখ্য, ওই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম স্টোক জনিত কারণে অসুস্থ হওয়ায় কার্ডধারীদের কাছে কার্ড পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব ছিল গ্রাম পুলিশ বেলাল হোসেনের উপর। কিন্তু তিনি সুবিধাভোগীদের কার্ড পৌঁছে না দিয়ে গোপন রেখে নিজেই তা ভোগ করেছেন এতো দিন।
এ বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, গ্রাম পুলিশ বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে এ ধরনের অসংখ্য অভিযোগ অনেক পূর্বে থেকেই ছিল। চেয়ারম্যান সাহেবকে এ বিষয়ে অবহিত করলে উনি তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি।
মুঠোফোনে অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ বেলাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।
বড়াইগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মমিন আলী এলাকার বাহীরে থাকায়,কার্ড টি কিভাবে উদ্ধার উদ্ধার হল, বা কোথায় তিনি কার্ড টি পেলেন, এ বিষয়ে জানতে চেয়ে তার ফোনে বার বার কল দিলে তিনি রিসিভ করেন নি।
বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ মারিয়াম খাতুন জানান, উক্ত বিষয়ে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতি মধ্যে অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশকে ডেকে তার বক্তব্য নেয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষ পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: