রাবি শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন, শোডাউন আর ব্যানার-পোস্টারে প্রাণচাঞ্চল্য ক্যাম্পাস

প্রকাশিত: ০৮ নভেম্বর ২০২২, ০৮:৪৩ পিএম

দীর্ঘ ৬ বছর পর আগামী ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বহুল কাঙ্খিত সম্মেলন। আর এই সম্মেলনকে ঘিরে পদপ্রত্যাশীদের ব্যানার-পোস্টার এবং অনুসারী নেতাকর্মীদের নিয়ে শোডাউনে ক্যাম্পাস জুড়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফেরার পাশাপাশি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস রাজনীতিও। শীর্ষ দুই পদে কারা আসছেন এনিয়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, সম্মেলনের দিন ঘোষণার পর থেকে রাবি শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতারা ক্যাম্পাসে বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। ক্যাম্পাসে নিজ অনুসারীদের নিয়ে দিচ্ছেন শোডাউন। মোটরসাইকেলে চড়ে ক্যাম্পাসে চলছে নেতাদের নামে স্লোগান। ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক, প্যারিস রোডসহ বিভিন্ন চত্বর ছেঁয়ে গেছে ব্যানারে, আবসিক হলের ব্লকে ব্লকে চলছে পোস্টার সাঁটানো। এছাড়া পদপ্রত্যাশীরা নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই আবার অনুসারীদের নিয়ে বিভিন্ন মিছিল, মিটিং, সমাবেশ করছেন। কেউ সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিভিন্ন ধরনের কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সমাবেশ থেকে।

এর আগে ২৫ অক্টোবর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের স্বাক্ষর করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ আগামী ১২ নভেম্বর রাবি ও রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করেন। নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন আয়োজন করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেয়া হয়। সাথে নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দেয়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

এ লক্ষ্যে গত শনিবার (৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত জমা নেন কেন্দ্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। নতুন কমিটির জন্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৯২ জন প্রার্থী জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছে। বর্তমান কমিটির দপ্তর সম্পাদক বাশার এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। তবে কোন পদের জন্য কতটি জীবনবৃত্তান্ত জমা হয়েছে সেটি এখনো জানা যায়নি।

বর্তমান রাবি ছাত্রলীগ শাখার সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মেজবাহুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সমসাময়িক যেসব বিষয়ে তীব্র সমালোচনার শিকার হয়েছে, সেগুলোর বিপক্ষে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করবো। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে ক্যাম্পাসের সমস্যাগুলো নিয়ে সভাপতির সঙ্গে বৃহৎ পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করবো এবং তা লিপিবদ্ধ করে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সমাধানের চেষ্টা করবো।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী চিরন্তন চন্দ্র বলেন, আসলে রাবি ছাত্রলীগের সম্মেলন তো আমাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার ফল। আমাদের পূর্বসূরিদের রক্ত, শ্রম, ঘামের উপর এ সংগঠন দাঁড়িয়ে আছে। এখন এ সংগঠনে এতোদিন পর সম্মেলন হচ্ছে, আমাদের মধ্যে প্রাণসঞ্চার হচ্ছে। আমি যেটা চাই যে, যারা নিয়মিত ছাত্র এবং যারা সততার সাথে রাজনীতি করছে তারা যেন নেতৃত্বে আসে।

সম্মেলনের সার্বিক বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে রাবি ছাত্রলীগ শাখার বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২৬তম সম্মেলন উপলক্ষে ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ এবং সেই সাথে ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। আশা করছি ২৬তম সম্মেলনের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্বের হাতে আমরা দায়িত্ব তুলে দিতে পারবো এবং সেই সাথে উৎসবমুখর পরিবেশে আমরা সম্মেলন শেষ করতে পারবো।

তিনি আরো বলেন, আমরা চাই যারা ছাত্রলীগের সাথে দীর্ঘদিন জড়িত, ছাত্রলীগের জন্য যারা অবদান রেখেছে, ছাত্রদের মধ্যে যার গ্রহণযোগ্যতা আছে, জাতীয় নির্বাচনে যারা ভূমিকা রাখতে পারবে, যারা আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান এমন নেতৃত্বের কাছে আমরা আগামী দিনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃত্ব তুলে দিতে চাই।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর রাবি শাখা ছাত্রলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পরে ১১ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হয় নতুন কমিটি। প্রায় ৬ বছর যাবৎ সেই কমিটিই নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: