প্রচ্ছদ / জেলার খবর / বিস্তারিত

শামীম হোসেন সামন

দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

শীতের আগাম প্রস্তুতি, ফুটপাতে জমেছে শীতের পোশাক বিক্রি

   
প্রকাশিত: ৫:১৯ অপরাহ্ণ, ১২ নভেম্বর ২০২২

ছবি - প্রতিনিধি

পৌষ মাস আসতে এখন অনেক বাকি তবে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে শীতের পোশাক কিনতে অনেকই আসতে শুরু করেছে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ফুটপাত থেকে শুরু করে বিপণি বিতানগুলোতে। তবে বিপণি বিতানের তুলনায় ফুটপাতে ক্রেতাদের সমাগম একটু বেশি দেখা যাচ্ছে। দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ বেশিরভাগ ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করে থাকবে।

তবে এবারের চিত্র একটু আলাদা। গেল কয়েক বছর করোনা মহামারী কারণের এমনিতেই অনেকের আর্থিক অবস্থা খারাপ। তার উপর রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি। আয় ব্যয়ের অসঙ্গতির কারণে মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকেই আসছেন ফুটপাতের দোকানগুলোতে।

সল্পমুল্যে সকল বয়সের মানুষ কেনাকাটা করবে এটা মাথায় রেখে উপজেলার বাগমারার কোর্ট বিল্ডিং মাঠে ভ্যান গাড়ি, চৌকি পেতে অস্থায়ী শীতের পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। শীতে ভালো লাভের আশায় সব দোকানে নতুন নতুন পোশাক তুলেছেন বিক্রেতারা। সাধ্য অনুযায়ী পোশাক কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারাও।

সরেজমিন উপজেলার বাগমারা, নবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে বিপণিবিতান ও ফুটপাতে দেখা মিলেছে নতুন পোশাকে ভরপুর। কোর্ট বিল্ডিং মাঠে উপচে পড়া ভিড় না থাকলেও দেখা যায় অস্থায়ী সব দোকানে ক্রেতার উপস্থিতি।

কথা হয় বিক্রেতা মো: আসলামের সাথে তিনি জানান, ‘‘অনেক স্বপ্ন নিয়ে একটা ভ্যান গাড়ি কিনেছি শীতের কাপড় বিক্রি করার জন্য। ১০-১২ জন ব্যাবসায়ী মিলে মাঠ পরিষ্কার করে দোকান খুলেছি। প্রথমে মানুষ না আসলেও এখন অনেকে আসছে। বিক্রিও শুরু হয়েছে।
আশাকরি শীত বাড়লে ব্যবসায় লাভবান হবে।’’

আরেক বিক্রেতা মো: মেহেদী জানান, এই বার প্রথম এই ব্যবসায় নামছি। এমনিতে অটো রিক্সা চালাই। ঠান্ডার সমস্যার কারণে গাড়ি চালাতে কষ্ট হয়। তাই পুরনো শীতের কাপড় বিক্রি করতে আসছি। প্রতিদিন এখন ৫ শ থেকে হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। আরো বাড়বেবলে আশা রাখি।’’

ফুটপাতের বিক্রেতা মো: হাসান আলী জানান, ‘‘মানুষের একটা ভুল ধারণা ফুটপাতে শুধু পুরনো কাপড় বিক্রি হয়। কিন্তু আমি ১২ মাস ফুটপাতে নতুন কাপড় বিক্রি করি। বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে অর্ডার বাতিল হওয়া কাপড়গুলো আমি কম দানে এনে বিক্রি করি। আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। তবে শীত বাড়লে বিক্রি আরো বাড়বে। তখন আরো লাভবান হতে পারবো ইনশাআল্লাহ।’’

ক্রেতা সুফিয়া আক্তার বলেন, ‘‘আমার বাচ্চাদের জন্য আমি নিয়মিত ফুটপাত থেকে কাপড় কিনে থাকি। শীত আসতে শুরু করছে। তাই বাচ্চাদের জন্য পোশাক কিনে নিলাম।’’ আরেক ক্রেতা মো: মুসলেম উদ্দিন বলেন, ‘‘আমি পেশায় দিন মজুর মার্কেটে গিয়া কাপড় কিনার সাধ্য নাই। তাই ফুটপাত থেকে পরিবারের সবার জন্য শীতের কাপড় কিনতে আসছি।”

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী শিমুল দাস বলেন, ‘‘বাজারের কাছে ফুটপাতে শীতের পোশাক বিক্রি করায় আমাদের ব্যাবসায় কিছু ক্ষতি হয়। একই পোশাক আমাদের দোকান ভাড়া, কর্মচারী বেতন, বিদ্যুৎ বিলের কারণে কিছু বেশি বিক্রি করতে হয়। বাড়তি খরচ না থাকায় ফুটপাতের দোকানিরা কমে দিতে পারে।’’

ক্রেতাদের অভিযোগ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার দোহাই দিয়ে বিপণিবিতান বা ফুটপাতে পোশাকের দাম বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে বিক্রেতারা বলছেন এবার সব পোশাকের দাম গতবারের তুলনায় বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তবে দাম খুব বেশি মানতে নারাজ বিক্রেতারা। দামা-দামী ব্যবসার একটি অংশ। সকলের প্রত্যাশা ক্রেতা বিক্রেতা মধুর তর্কে যেনো শীতের উষ্ণতার ছড়ায়।

আশরাফুল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: