দিনে দুপুরে ৪টি মোটরসাইকেল চুরি, মালিকদের মধ্য চরম আতংক

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২২, ১১:১৯ পিএম

নবীগঞ্জ শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ করে মোটর সাইকেল চুরি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই কোন না কোন স্থানে মোটর সাইকেল চুরির খবর পাওয়া। ফলে মোটর সাইকেল মালিকদের মধ্য চরম আতংক বিরাজ করছে। এপর্যন্ত নবীগঞ্জে প্রায় ৫০টি মোটর সাইকেল চুরি হয়েছে।

গতকাল ১৬ নভেম্বর উপজেলার আউশকান্দি বাজার সোনালী ব্যাংকের নীচ থেকে ৪টি মোটর সাইকেল চুরি হয়েছে। এঘটনাটি নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে, মোটর সাইকেল চুরির পর সোনালী ব্যাংকের ম্যানাজারের রহস্যজনক আচরণে নানা প্রশ্ন বিরাজ করছে। চুরির পর থেকে সোনালী ব্যাংকের ম্যানাজার গা ঢাকা দিয়েছেন। তিনি কাউকে তার ব্যাংকের সিসি টিভি ফুডেজ দেখাচ্ছেন না। লোকজন তাকে অসংখ্যবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সম্প্রতি যে হারে বিভিন্ন যানবাহন দিনে-দুপুরে চুরি হচ্ছে তাতে রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছে চুর চক্র। সচেতন মহল জানতে চায় পুলিশের এতো টহল এবং কার্যক্রম থাকা সত্বে কিভাবে বাড়ছে চুরি-ছিনতাই।
তারা আরো বলেন, হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি সর্বক্ষেত্রে এতো সফলতার ভুমিকা রাখছেন এবং প্রশংসিত হচ্ছেন হবিগঞ্জবাসীর কাছে। স্থানীয় সচেতন মহল পুলিশ সুপার এর বর্তমান সময়ে যানবাহন চুরির হিড়িক নিয়ে সু দৃষ্টির আহবান ও জানান অনেকে।

গত ১ বছরে নবীগঞ্জ শহরে প্রায় ২০/৩০’টি মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবহন চুরি হলেও সব চোরের নাগাল পায়নি পুলিশ। চুরির ঘটনা ঘটলেও কেউ থানায় মামলা বা জিডি করছে আবার কেউ করছেনা। কারন জানতে কয়েকজনের সাথে আলাপকালে তারা বলেন জিডি বা মামলা করেতো দৌড়াতে পাড়বোনা তাই নিরব রয়েছি। ভাগ্যে থাকলে পাবো না থাকলে নাই।

১৬ নভেম্বর বিকালে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি সোনালী ব্যাংকের নীচ থেকে তিনটি মোটর সাইকেল চুরি হয়। একই দিনে আউশকান্দি পূর্ব বাজার থেকে নবীগঞ্জ উপজেলা ট্রাক শ্রমিক মালিক সমিতির সভাপতি লিটন মিয়ার মোটর সাইকেল কে বা কারা নিয়ে যায়।আউশকান্দি সোনালী ব্যাংকের নীচ থেকে আশা এনজিও কর্মীদের তিনটি মোটর সাইকেল চুরি হয়। চুরি হওয়ার পর থেকে সোনালী ব্যাংকের ম্যানাজার হাবিবুর রহমান লাপাত্তা রয়েছেন।তাই লোকজন সিসি টিভির ফুডেজ দেখতে পারেননি।

১৬ নভেম্বর বিকালে আঊশকান্দি আশা ব্যাংকের কর্মী প্রদ্বীপ রায় ও মিজানুর রহমান তাদের ডিসকভার ১২৫ সিসি দুটি মোটর সাইকেল রেখে তাদের অফিসে কাজ করছিলেন। সন্ধ্যায় অফিস থেকে নেমে দেখেন মোটর সাইকেল দুটি নেই। তারা এবিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় জিডি এন্ট্রি করেছেন। গতকাল তার সাথে অসংখ্যবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাকে খুদে বার্তা পাঠালেও কোন উত্তর দেননি।গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নবীগঞ্জ শহর থেকে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধির মোটর সাইকেল চুরি হয়েছে।

জানা যায়, নবীগঞ্জে কর্মরত সিলকো ফার্মাসিউটিক্যাল এর এরিয়া ম্যানেজার নয়ন সরকার নবীগঞ্জ শেরপুর রোডের মা হোটেলের সামনে তার মোটর সাইকেলটি রেখে পাশে এটিএম বুথ টাকা উত্তোলন করতে যান। ফিরে এসে মোটর সাইকেলটি আর পাননি। পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা একটি সংঘবদ্ধ চোরের দল মোটর সাইকেলটি চুরি করে নিয়ে যায়।

সম্প্রতি নবীগঞ্জ ইসলামি ব্যাংকের সামন থেকে দুটি মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা সংঘঠিত হয়। গ্রাহকরা টাকা তোলার জন্য ব্যাংকের দ্বিতীয় তলা থেকে নেমে দেখেন তাদের মোটর সাইকেল নেই। মোটর সাইকেল মালিক লিটন মিয়া জানান, অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোথায়ও মোটর সাইকেলটির সন্ধান পাননি। বলেন আমি অফিসে কাজে ব্যস্ত ছিলাম রাত ৮টার সময় কে বা কারা আমার ডিস-কভার ১০০ সিসি মোটর সাইকেলটি নিয়ে যায়। আমি থানাকে জানিয়েছি,এবিষয়ে মামলা করবো।

এলাকাবাসী জানান, উপজেলা জোড়ে মোটর সাইকেল চোরের একটি সংঘবদ্ধ চোরের দল রয়েছে। যার ফলে অহরহ তারা এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তার প্রশাসনের নিকট এসব সংঘবদ্ধ চোরের দলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে হবিগঞ্জ ডায়াবেটিস হাসপাতাল এলাকার মাহমুদাবাদ থেকে ২ দুটি মোটর সাইকেল চুরি হয়। সালাউদ্দিন, ব্র্যাকের সিনিয়র অফিসার মোঃ সোহেল রানা ও এসকেএফ ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধি সাগর আহমেদ ওই দিন রাতে বাসার নিচে তালাবদ্ধ রুমে মোটর সাইকেল রেখে ঘুমিয়ে পড়েন।

১১ জানুয়ারী ২০২১ শহরতলীর তেঘরিয়া এলাকা থেকে সাংবাদিক সাইফুর রহমান তারেকের ডিসকভার মোটর সাইকেল নং (হবিগঞ্জ-হ-১১-৫৪২০) অজ্ঞাত চোরের দল নিয়ে যায়। ২৮ এপ্রিল ২০২১ হবিগঞ্জ শহরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকার হাসি-খুশি শো- রুমের সামন থেকে সিসি ক্যামেরা ও যথেষ্ট নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও দিনে দুপুরে মোটর সাইকেল চুরি হয়।

পরে ওই শো-রুমের প্রোপাইটর শাহীন মিয়া হবিগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা করেন। ১৩ আগস্ট শুক্রবার শহরের পুরাতন খোয়াই মুখ এলাকায় তারেক মাহমুদ নামে এক ব্যক্তির ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি চোরেরা নিয়ে যায়।

গত ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামন থেকে দৈনিক হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি ও চ্যানেল ২৪ এর জেলা প্রতিনিধি রাসেল চৌধুরীর ব্যবহৃত নীল রংয়ের পালসার (হবিগঞ্জ ল- ১১.০৬৭৭) মোটরসাইকেলটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চুরি হয়ে যায়।
এ ঘটনায় আদৌ সাইকেল দুটি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। ১১ জানুয়ারী ২০২১ শহরতলীর তেঘরিয়া এলাকা থেকে সাংবাদিক সাইফুর রহমান তারেকের ডিসকভার মোটর সাইকেল নং (হবিগঞ্জ-হ-১১-৫৪২০) অজ্ঞাত চোরের দল নিয়ে যায়। ২৮ এপ্রিল ২০২১ হবিগঞ্জ শহরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকার হাসি-খুশি শো-রুমের সামন থেকে সিসি ক্যামেরা ও যথেষ্ট নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও দিনে দুপুরে মোটর সাইকেল চুরি হয়।

তাক্ষণিকভাবে পুলিশ-ডিবি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও ঘটনার ৩দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও আদৌ উদ্ধার হয়নি মোটরসাইকেল।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ সদর থানার ওসি ডালিম আহমদ জানান,মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় আমরা বিভিন্ন ধরণের ব্যবস্থা নিচ্ছি।সাদা পোষাকের আমাদের বাহিনীর লোকজন নানা স্পটে টহল দিচ্ছেন। আশাবাদী দুই একদিনের ভিতরে সাইকেল চোরদের হোতাদের ধরতে পারবো। তিনি জানান মোটর সাইকেল চুরির ঘটনায় থানায় একাধিক জিডি ও মামলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যেসব স্থানে মোটরসাইকেল বেশি পার্কিং করা হয় সেসব জায়গার সিসিটিভিও নজরদারি জোরাদর করছি। চোর ধরতে ও চুরি হওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

স্থানীয় সচেতন মহল পুলিশ সুপার এর সম্প্রতি সময়ে যানবাহন চুরির হিড়িক নিয়ে সু দৃষ্টির আহবান ও জানান অনেকে। গত ১ বছরে হবিগঞ্জ শহরে প্রায় ৩০/৩৫টি মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবহন চুরি হলেও সব চোরের নাগাল পায়নি পুলিশ।

চুরির ঘটনা ঘটলেও কেউ থানায় মামলা বা জিডি করছে আবার কেউ করছেনা। কারন জানতে কয়েকজনের সাথে আলাপকালে তারা বলেন জিডি বা মামলা করেতো দৌড়াতে পাড়বোনা তাই নিরব রয়েছি। ভাগ্যে থাকলে পাবো না থাকলে নাই।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: