মৌলভীবাজারে চা বাগানের আঁকা বাঁকা পথে দৌড়ালেন দৌড়বিদরা

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০২২, ০৭:৩৭ পিএম

মৌলভীবাজারে ভোরে ঘন কুয়াশায় অচেনা চা বাগানের আঁকা বাঁকা পথে দৌড়ালেন সাড়ে ছয়শো দৌড়বিদ। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) ভোরে মৌলভীবাজারে অনুষ্ঠিত হলো হাফ ম্যারাথন। মৌলভীবাজার সাইক্লিং সোসাইটি ও রানার্স ক্লাব তৃতীয়বারের মতো এই হাফ ম্যারাথনের আয়োজন করেছে। সকাল ৬টায় এর উদ্বোধন করেন মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান। এরপরই শহরের শ্রীমঙ্গল রোডের বেঙ্গল কনভেনশন হল থেকে শুরু হয় ম্যারাথনের দৌড়।

এবাররের এই ম্যারাথনকে উৎসর্গ করা হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠহামিদুর রহমানকে। মৌলভীবাজার ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা এবং ভারত, নেপালের অনেক দৌড়বিদ এই ম্যারাথনে অংশ নেন।

আয়োজকরা জানান, করোনা পরবর্তী সময়ে অনেকের মধ্যে নানা রকম বিষন্নতা তৈরি হয়েছে। অনেকের মধ্যে স্থবিরতা এসেছে। এই অবসাদ, স্থবিরতাকে ভেঙে আবার সবাইকে চাঙা করে তোলাই এই ম্যারাথনের উদ্দেশ্য। এই জেলার সৌন্দর্য দেশ-বিদেশের পর্যটকদের সামনে তুলে ধরাও ম্যারাথনের অন্যতম একটা দিক। তবে এর সঙ্গে এবার যুক্ত করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে।

সেই লক্ষ্যে এবার হাফ ম্যারাথনে মৌলভীবাজার জেলার ম্যাপের ভেতর বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধের ছবি সংবলিত টি-শার্ট ও মেডেল তৈরি করা হয়েছে। এই স্মৃতিসৌধটি রয়েছে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তে। এ ছাড়া ম্যারাথন উপলক্ষে তৈরি করা হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানকে নিয়ে তথ্যচিত্র।

মৌলভীবাজার রানার্স ক্লাব সূত্রে জানা যায়, গত ৪ অক্টোবর থেকে ম্যারাথনে অংশ নেওয়ার জন্য নিবন্ধন শুরু হয়েছিল। ৭ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধনের লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ হয়েছে। নিবন্ধন ফি ছিল ১ হাজার ৫০ টাকা। ১৮ নভেম্বর সকাল সোয়া ছয়টায় শহরের শ্রীমঙ্গল সড়কের বেঙ্গল কনভেনশন হল থেকে এই দৌড় শুরু হয়। দুই রকম দূরত্বে এই দৌড় অনুষ্ঠিত। এর একটি ১০ কিলোমিটার দূরত্বের। এই দূরত্বের অংশগ্রহণকারীরা শহরতলির কমলগঞ্জ উপজেলার কালেঙ্গা বাজারের দক্ষিণ প্রান্ত ছুঁয়ে মৌলভীবাজার স্টেডিয়ামে ফিরেছেন।

অপরটির দূরত্ব হবে ২১ দশমিক ১ কিলোমিটারের। এই দূরত্বের অংশগ্রহণকারীরা প্রেমনগর চা-বাগান থেকে মৌলভীবাজার স্টেডিয়ামে ফিরে আসেন। এই হাফ ম্যারাথনকে সুশৃঙ্খল, সুন্দর ও সফল করতে নিয়োজিত ছিলেন ১২০ জন স্বেচ্ছাসেবক। এক কিলোমিটার পরপর পানির বুথ, সড়কের বিভিন্ন মোড়ে দৌড়ের দিকনির্দেশনা, প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল।

ম্যারথনে অংশ নেয়া নওশিন জাহান ঢাকা পোস্টেকে বলেন, আমার খুব ভাল লেগেছে। আমি প্রথমবার অংশ গ্রহণ করে ১০ কিলোমিটার সম্পূন্ন করতে পারবো এটা ভাবতেও পারিনি। অন্যরকম একটা অনূভূতি।

মুজাহিদ আহমদ বলেন, আমি প্রথমবারের মতো ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করেছি। আমার খুব ভাল লেগেছে। বিশেষ করে শরীর ও স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য এটা খু্বই প্রয়োজন।

মৌলভীবাজার সাইক্লিং কমিউনিটির এডমিন আহমেদ বলেন, এবার হাফ ম্যারাথনের তৃতীয় আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের এই আয়োজনে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। চার দিনেই সাড়ে ছয়শো রেজিস্ট্রেশন শেষ হয়ে গিয়েছিলো। ভবিষতে এই ম্যারথনকে আরো বড় পরিসরে আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান বলেন, এভাবে বড় বড় আয়োজন করার মাধ্যমে আমাদের এই জেলাকে তুলে ধরতে পারবো। এখানে সারাদেশ থেকে মানুষ এসে অংশগ্রহণ করেছেন। সত্যিই এ‌ ধরনের মিলনমেলা প্রশংসার দাবি রাখে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: