ঘাটাইলে বনের কাঠে পুড়ছে ইট

প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২২, ০৫:৪৯ পিএম

শফিকুল ইসলাম, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) থেকে: ছাড়পত্র নাই। অবৈধ। অনুমোদনহীন। স্কুল, কলেজ ঘেষে নিষিদ্ধ এলাকায় স্থাপনা। ফসলি ও আবাসিক অঞ্চলে দেদারসে চলছে ইটভাটা। বনের কাঠেই পুড়ছে ইট। নাই কোনো আইনের তোয়াক্কা। ভাটার মালিকের তালিকায় রয়েছে ইউপি সদস্যসহ এলাকার প্রভাবশালীদের নাম।

ভাটা মালিক সমিতি ও উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, ঘাটাইলে ৫৫টি ইট ভাটা চলমান রয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ১২টি ভাটার লাইসেন্স রয়েছে। বাকি ৪৩টি ইট ভাটার কোন বৈধ কাগজপত্র নেই।

টাঙ্গাইল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে লাইসেন্স ছাড়া ইট প্রস্তত করা ও পোড়ানোর কোন সুযোগ নেই। আইন অমান্য করলে ভাটা মালিককে ২ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ২০ লক্ষ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডই হতে পারে। কিন্ত আইনের কোন তোয়াক্কা না করে পরিবেশ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ছাড়াই ভাটা মালিকরা ইট পোড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

আইন অনুযায়ী বনবিভাগের তিন কিলোমিটারের মধ্যে ভাটা স্থাপন না করার বিধান থাকলেও উপজেলার ধলাপাড়া, পেচারআটা, রসুলপুর, সরাবাড়ীসহ বেশ কিছু এলাকায় বনের পাশেই স্থাপন করা হয়েছে ইটভাটা। এ রকম ১০-১২টি ইটভাটা রয়েছে বলে সরেজমিন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এর মধ্যে রসুলপুরের ঘোনারদেউলী এলাকার আকাশ ইট ভাটা, পেচারআটায় নাঈম ব্রিকস, সোহান ব্রিকস, বাংলা ব্রিকস, রূপসা এবং ধলাপাড়ায় সততা ব্রিকস, যমুনা ব্রিকস ও সাগর ব্রিকস অন্যতম। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে ইটভাটা স্থাপনের বিধি-নিষেধ থাকলেও উপজেলার চানঁতারা গ্রামের দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আশপাশে গড়ে উঠেছে আটটি ইটভাটা। এর অন্যতম পদ্মা ব্রিকস ও মৌ ব্রিকস-২।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘাটাইল উপজেলার রসুলপুর এলাকার আকাশ ইট ভাটা। যার নেই কোনো ছাড়পত্র, লাইসেন্স। তাছাড়া পাহাড়ি এলাকার লাল মাটি ও সংরক্ষিত বনের কাঠ পিল দিয়ে রেখেছে ভাটার পাশে। অন্যদিকে ধলাপাড়া কালামপুকুরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১শ গজ দূরে বাংলা ইট ভাটা ও সোহান ইট ভাটা।

হরিপুর এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে মডার্ন ব্রিকস এবং হেলনাপাড়া বিদ্যালয়ের সামনে এসআর ব্রিকস নামে দুটি ভাটা রয়েছে। এরা ইট প্রস্তুতের জন্য নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পাহাড়ের লাল ও ফসলি জমির মাঠি ব্যবহার করছে।

উপজেলা ইট ভাটা মালিক সমিতির সভাপতি শাহজাহান সরকার বলেন, ঘাটাইলের অধিকাংশ ইটভাটাই পুরনো তাই বর্তমান আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে পারছে না। তাই নানা ভোগান্তির কারণে তারা আদালতের আশ্রয় নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করে ইটভাটা পরিচালনা করছে।

টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জমির উদ্দিন বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ঘাটাইলে অবৈধ ইট ভাটার বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: