সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা, পাঁচ আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০২২, ০৮:৩৩ পিএম

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর জবাই করে হত্যার ঘটনায় ৫ আসামিকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় দেন। রায় ঘোষনার সময় ৪ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলো। এক আসামি আলমগীর দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, গঙ্গাচড়া উপজেলার নরসিংহ মর্ণেয়া গ্রামের শামসুল আলমের ছেলে আবুজার রহমান (২৮), হান্নানের ছেলে আলমগীর হোসেন (২৭), মতিয়ার রহমান মুন্সির ছেলে নাজির হোসেন (৩২), আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল করিম (২৯) এবং আমিনুর রহমান (২৯)। এদের মধ্যে আলমগীর হোসেন পলাতক। পরে তাদের সরাসরি রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার নরসিংহ গ্রামের আইয়ুব আলীর কিশোরী কন্যার সাথে একই গ্রামের সামসুল আলমের ছেলে আবুজার রহমানের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরই এক পর্যায়ে কিশোরী মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়লে আবুজারকে বিষয়টি জানায়। ২০১৫ সালের ১৪ মে তারিখে নিহত কিশোরীর বাবা মা এক আত্মীয়র বাড়িতে দাওয়াত খেতে যায়। বাসায় কিশোরী মেয়েটি ও তার ভাগ্নি সান্তনা ছিলো।

এ সুযোগে আসামি আবুজার তাদের বাসায় এসে নিহত কিশোরীকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর আসামি আবুজার ও তার অপর ৪ বন্ধু আলমগীর, নাজির হোসেন, করিম বাদশা ও আমিনুর পুর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৫ আসামি মিলে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে কিশোরী গুরতর অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং সব ঘটনা তার বাবামাকে জানাবে বলে প্রকাশ করলে আসামিরা কিশোরীটিকে হাচুয়া দিয়ে জবাই করে নৃশংস ভাবে হত্যা করে লাশ বাড়ির অদুরে ধঞ্চা ক্ষেতে ফেলে চলে যায়। এ ঘটনায় নিহত কিশোরীর বাবা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে গঙ্গাচড়া থানায় মামলা দায়ের করে।

এলাকাবাসি আসামি আবুজারকে ধরে পুলিশে সোপর্দ্দ করে। পরে পুলিশ তার দেয়া জবানবন্দির উপর ভিত্তি করে অপর ৩ আসামি নাজির হোসেন, করিম বাদশা ও আমিনুরের নাম বলে। পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করে। আসামির সকলেই অাদালতে ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করে। তারা গনধর্ষন করে জবাই করে হত্যৗার কথাও অকপটে জবানবন্দিতে জানায়। মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে ৫ আসামিকে দোষি সাব্যস্ত করে আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন। পলাতক আসামি আলমগীর গ্রেফতার হবার পর সাজা কার্যকর করা হবে বলেও বিচারক রায়ে উল্লেখ করে।

প্রায় সাত বছর মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন বলেন, সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত পাঁচ আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: