পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মেঘনা নদীতে পড়ে যাওয়া নোমানের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২২, ০৩:৪৮ পিএম

আরিফ হোসেন, ভোলা থেকে: ভোলার দৌলতখান উপজেলায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মেঘনা নদীতে পড়ে নিখোঁজ হওয়া যুবক নোমানের ৪ দিন পর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বজনরা তাঁর লাশ শনাক্ত করেছে। লাশের মুখমন্ডল থেঁতলানো এবং নাক ফাটা। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালের পাঠিয়েছে।

রবিবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে তাঁর ভাসমান লাশ দেখতে পান। পরে দৌলতখান থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতখান থানার ডিউটি অফিসার (এসআই) আবু হানিফ।

নোমান নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় শুক্রবার রাতে লালমোহন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জহুরুল ইসলামকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ডিবি) মো. এনায়েত হোসেন ও ভোলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল ইসলাম কামরুল। তবে কতদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদেন জমা দিতে হবে তা নিশ্চিত করতেন পারেননি কমিটিতে থাকা কেউই।

কমিটির প্রধান জানান, এ বিষয়ে শনিবার রাত ১০টা পর্যন্ত তিনি কোনো কাগজপত্র হাতে পাননি। নোমান নিখোঁজের ঘটনায় গতকাল শনিবার সকালে তাঁর পরিবার দৌলতখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। নিখোঁজের পর থেকে এ ঘটনায় ওসির গাড়ি চালক কনস্টেবল মো. রাসেল ও সজীব নামে দুই পুলিশ কনস্টেবলকে বরখাস্ত করে ভোলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

দৌলতখান থানা থেকে প্রত্যাহার করে ভোলা পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) স্বরূপ কান্তি পাল ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. সোহেল রানাকে। তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে। প্রতিবেদনের আলোকে বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল ও ক্লোজড হওয়া পুলিশ কর্মকর্তারারা বিভাগীয় শাস্তির আওতায় আসবে। ঘটনার ১ দিন পর নোমানের স্বজনরা মেঘনা নদীতে ট্রলার যোগে নোমানের লাশ খোঁজে পেতে মাইকিংও করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ২৪ নভেম্বর দুপুর ১টার দিকে দৌলতখান উপজেলার পাতার খাল মাছ ঘাট সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় নোমানসহ বেশ কয়েকজন জুয়া খেলছিল। এসময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবগত না করেই বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্য ও ক্লোজড হওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা নোমানদের জুয়ার আসরে গিয়ে তাদেরকে ধাওয়া করে। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মেঘনা নদীতে নোমানসহ আরো কয়েকজন পড়ে যায়।

তাদের মধ্যে সবাই সাঁতরে তীরে উঠে আসতে পারলেও নোমান উঠে আসতে পারেনি। এরপরই নিখোঁজ হয় নোমান। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, নোমান নদীতে পড়ে যাওয়ার পর পুলিশ তাকে উদ্ধার না করে উপর থেকে তাকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করতে থাকে। তাদের ধারণা পুলিশের ইটের আঘাতে নোমান নদী থেকে সাঁতরে তীরে উঠে আসতে পারেনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: