১৫ দিনেও কৃষকের লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ, অপেক্ষায় স্ত্রী-সন্তানরা

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০২২, ০৩:৩৩ পিএম

ফেনীর পরশুরাম বাঁশপদুয়া সীমান্ত এলাকায় নিহত কৃষক মেজবাহারের লাশ ১৫ দিনেও ফেরত দেয়নি ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তার মরদেহ ফেরত পাওয়ার অপেক্ষায় সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন স্ত্রী, চার কন্যা সন্তান, স্বজনরা। আতংকে রয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

এদিকে বিএসএফের সঙ্গে লাশ হস্তান্তরের ব্যাপারে যোগাযোগ ও পতাকা বৈঠকে লাশ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো ফেরত দেয়নি। তবে ভারতের সব আইনি পদক্ষেপ শেষে হয়তো লাশ ফেরত দেবে জানান, ফেনীস্থ-৪ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম আরিফুল ইসলাম।

গত ১৩ নভেম্বর বিকেলে জেলার পরশুরামের বাঁশপদুয়া গ্রামের ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ধান কাটতে যান কৃষক মেজবাহ উদ্দিন। এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ তাঁকে জোর করে ধরে নিয়ে যায়। এর তিন দিন পর ভারত সীমান্তের একশ গজের মধ্যে কাঁটাতারের পাশে তার লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। তারা মৌখিকভাবে পুলিশ ও বিজিবিকে ঘটনাটি জানান। ১১ দিনেও মেজবাহর লাশ না পেয়ে তার স্ত্রী সন্তানরা এখন নিরুপায়, আর্তনাদে দিন কাটছে তাদের।

তারা জানান, বিএসএফ জঘন্যভাবে হত্যা করেছে মেজবাহকে। তারা লাশ ফেরত চায়। বিচার চায়। আইন আদালতের মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনার সঠিক বিচার চায় তারা। পরিবার ও স্বজনের প্রশ্ন কি অপরাধ করেছে মেজবাহ? কেন এভাবে নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে? কেন তার লাশ দিতে টালবাহানা করছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

মেজবাহর বোন পারুল আক্তার বলেন, মেজবাহর ছোট্ট ছোট্ট চার কন্যাসন্তান রয়েছে। তারা হলেন, মর্জিনা আক্তার, তাজনেহার আক্তার মুক্তা, বিবি হাজেরা আক্তার রিক্তা ও জান্নাতুল নাঈম। তারা পিতার লাশের অপেক্ষায় রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। তারা চায় যেকোনো মূল্যে তাদের পিতার লাশ।

মেজবাহর স্ত্রী মরিয়ম আক্তার বলেন, ছোট ছোট শিশুকন্যাদের নিয়ে তিনি খুবই কষ্টে আছেন। অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে তার। তিনি যেকোনো মূল্যে স্বামীর মরদেহ ফেরত চান।

তিনি বলেন, আমার স্বামী সাধারণ কৃষক। তিনি কোনো অন্যায় কাজ বা অবৈধ কাজের সঙ্গে কোনো দিন সম্পৃক্ত ছিলেন না। তার নিরপরাধ স্বামীকে বিএসএফ হত্যা করেছে তা কিছুতেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। তিনি এর বিচার চান ও তার স্বামীর লাশ অল্প সময়ের মধ্যে ফেরত চান।সম্ভবত বিএসএফ আইনি প্রক্রিয়া শেষ করতে পারেনি। এজন্য লাশ দেয়নি। ফেরত দিলে আমরা নিহতের লাশ তার স্বজনদের বুঝিয়ে দিব।

ফেনীর ৪ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল একেএম আরিফুল ইসলাম বলেন, পরশুরাম বাঁশপদুয়া সীমান্তের মেজবাহারের লাশ আইনি প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে ভারতের বিএসএফ ও পুলিশ মেজবাহারের লাশ ফেরত দিলে আমরা পরিবারকে বুঝে দিব।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: