মারা গেছেন চীনের সাবেক প্রেসিডেন্ট

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০২২, ০৬:১০ পিএম

তিয়েনআনমেন স্কয়ারে আন্দোলনের পর প্রায় এক দশক ধরে চীনের নেতৃত্ব দেয়া দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াং জেমিন মারা গেছেন। লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে যাওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে চীন। বুধবার (৩০ নভেম্বর) চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে সাংহাইতে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৯৬ বছর।

এমন সময়ে জেমিনের মৃত্যু হলো, যখন তিয়েনআনমেন স্কয়ারের পর সবচেয়ে সহিংস আন্দোলন চলছে চীনে। করোনা বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে সেখানে বিক্ষোভ করছেন হাজার হাজার মানুষ। তার মৃত্যুর পর এক বিবৃতিতে জেমিনকে 'উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন একজন অসাধারণ নেতা' ও 'দীর্ঘ পরীক্ষিত কমিউনিস্ট যোদ্ধা' হিসেবে আখ্যা দিয়েছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি।

১৯৮৯ সালে চীনের তিয়েনআনমেন স্কয়ারে বিক্ষোভকারীদের ওপর রক্তাক্ত দমন-পীড়নের পরপরই ক্ষমতায় আসেন জেমিন। সেসময় এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তোপের মুখে পড়েছিল চীন। তিয়েনআনমেন স্কয়ারের পর কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ পর্যায়ে প্রতিক্রিয়াশীল ও সংস্কারপন্থীদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এরই মধ্যে ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন আমলা হিসেবে পরিচিত জেমিন। কট্টরপন্থী ও উদারপন্থীদের মধ্যে সমন্বয় করার আশায় তাকে নেতা হিসেবে বেছে নেয়া হয়।

জেমিনের নেতৃত্বে চীনের অর্থনীতি শক্তিশালী হয়ে ওঠে, ক্ষমতার ওপর কমিউনিস্ট পার্টির দখল আরও শক্ত হয় এবং অন্যতম বিশ্বশক্তির তালিকায় চলে আসে চীন। ১৯৯৭ সালে হংকংয়ের শান্তিপূর্ণ হস্তান্তর ও ২০০১ সালে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের অন্তর্ভুক্তির সময় ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। এরপরই বিশ্ব অর্থনীতির মূল ধারায় চলে আসে চীন। তবে রাজনৈতিক সংস্কারকে পাশে রেখে তাইওয়ান ইস্যুতে অভ্যন্তরীণ মতবিরোধকে কঠোর হাতে দমন করেন জেমিন। কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি হুমকি হিসেবে বিবেচিত ধর্মীয় গোষ্ঠী ফালুন গংয়ের ওপর ১৯৯৯ সালে চালানো দমন-পীড়নের জন্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন তিনি।

কমিউনিস্ট পার্টিতে নিজের অবস্থান নিরাপদ করতেও আগ্রহী ছিলেন জেমিন। সে লক্ষ্যে দ্য থ্রি রিপ্রেজেন্টস থিওরি নামের নিজ রাজনৈতিক আদর্শ প্রবর্তন করেন তিনি। ক্ষমতায় থাকাকালীন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে চেষ্টা করেছিলেন তিনি। জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন নাইন ইলেভেন হামলার পর সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি।

জেমিনের উত্তরসূরি হু জিনতাও ও শি জিনপিং তার শেষকৃত্যে অংশগ্রহণ করবেন বলে এক চিঠিতে জানানো হয়েছে। তবে 'চীনা চর্চার' সাথে সঙ্গতি রেখে সেখানে বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হবে না বলে সেখানে বলা হয়েছে। সূত্র: বিবিসি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: