শেরপুরে কাগজের বই পড়া নিয়ে ব্যাতিক্রমি উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর ২০২২, ০৭:৪১ পিএম

শেরপুরে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের কাগজের বই পড়ার প্রতি আগ্রহ স্মৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যতিক্রমি উদ্যোগ নিয়েছেন আব্দুস সাত্তার নামে এক আইটি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠাতা। তিনি সদর উপজেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে টিফিনের সময় ঘুরে ঘুরে অলস সময় কাটানো শিক্ষার্থীদের কাগজের বই পড়ার প্রতি আগ্রহ স্মৃষ্টি করতে নানা পরামর্শ ও উপদেশ দিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি টিফিনের সময় অলস বসে থাকা শিক্ষার্থী অথবা স্কুল ছুটির পর শিক্ষার্থীদেরকে বাজিতখিলা বাজারে প্রতিষ্ঠিত ‘বাজিতখিলা পাবলিক লাইব্রেরীতে’ কাগজের বই পড়তে অনুরোধ করে আসছে। তার অনুরোধে সাড়া দিয়ে অনেক শিক্ষার্থী টিফিন এবং স্কুল ছুটি হওয়ার পর তার লাইব্রেরীতে আসছেন বই পড়তে। কিন্তু ওই লাইব্রেরীতে বড়দের পড়ার উপযোগী প্রায় ৫ শতাধিক বই থাকলেও শিশুদের বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের উপযোগী কোন বই নেই। তাই তিনি লাইব্রেরীতের আগত শিশুদের কাছে তাদের চাহিদ সম্পন্ন বইয়ের তালিকা তৈরী করছেন। পরবর্তিতে ওইসব চাহিদা সম্পন্ন বই কিনে লাইব্রেরীতে রাখবেন। যাতে স্থানীয় আশাপাশের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের চাদিদা সম্পন্ন বই পড়তে পারে।

লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠাতা এবং ডায়নামিক আইটি পরিবার ও মাল্টিসিস্টেম কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারের স্বত্বাধিকারী আব্দুস সাত্তার রনি জানান, তিনি মূলত ২০১৪ সালে গ্রামীণ যুবকরা কম্পিউটার বা আইটিতে দক্ষ হয়ে উঠতে পারে এবং পরবর্তিতে তারা তাদের কর্মজীবনে সহায়ক হতে পারে তাদের জন্য একটি আইটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলেন।

এরপর করোনাকালিন সময়ে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের মোবাইলে আসক্তি থেকে দূরে রাখতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করেন বাজিতখিলা পাবলিক লাইব্রেরী। যেখানে একাডেমিক বইসহ সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান ভিত্তিক, কম্পিউটার ও সাহিত্যের প্রায় ৫ শাতাধিক বই রাখা হয় ওই লাইব্রেরীতে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের মোবাইল আসক্তি কমিয়ে কম্পিউটার ও আইটি প্রশিক্ষনার্থীরা তাদের ক্লাসের ফাঁকে আরো জ্ঞান অর্জনের জন্য ওই পাঠাগারে বসে বই পড়তে পারে।

এক পর্যায়ে তিনি লক্ষ্য করেন যে, বজিতখিলা বাজারের পাশেই স্থানীয় একটি সরকারী প্রাথমিক ও বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা টিফিনের সময় অলস সময় কাটায়। এসময় কেউ কেউ মোবাইলে আসক্ত কয়ে গেইম খেলছে। কেউবা আবার অযথা চায়ের দোকানের টিভির পর্দায় চোখ রাখছে।

আবার কেউবা খেলাধূলায় মত্ত রয়েছে। তাই তিনি ওইসব অলস শিশুদের অন্তত টিফিনের সময়টুকুতে বই পড়ার প্রতি আগ্রহ স্মৃষ্টি করা যায় কি না। সেই চিন্তাধারা থেকেই বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করে আশানুরূপ ফল পেয়েছে। তবে বর্তমানে শিশুতোষ বই না থাকায় ওই লাইব্রেরীতে শিশুদেরকে টানতে পারছে না বলে তিনি জানান। তবে খুব তারাতারি তিনি শিশুতোষ বইয়ের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিবেন বলেও তিনি জানান। সেইসাথে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যেন এই ইন্টারনেটের যুগেও কাগজের বই পড়ার প্রতি অভ্যাস গড়ে তুলতে পারে, এটাই তার ইচ্ছা।

এ বিষয়ে জেলা সরকারী পাঠাগারে লাইব্রেরীয়ান সাজ্জাদুর করিম জানান, জেলা শহরের বাইরে প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাজিতখিলা পাবলিক লাইব্রেটি আমাদের নিবন্ধিত একটি লাইব্রেরী। ওই লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠাতা আব্দুস সাত্তার রনি খুবই উদ্যোমি একজন মানুষ। তিনি এলাকার পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদেরকে বই পড়ায় আগ্রহ স্মৃষ্টির জন্য ভালো কাজ করে যাচ্ছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: