গরিবে ১৮ হাজার কম্বলে ভাগ চান এমপি, ফেরত দিলেন চেয়ারম্যানরা

প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৩৬ পিএম

শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য বরাদ্দ পাওয়া কম্বল উপজেলা পরিষদে ফেরত দিলো ইউপি চেয়ারম্যানরা। চেয়ারম্যানদের অভিযোগ স্থানীয় সংসদ সদস্য উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের দিয়ে ফোন করে বরাদ্দ থেকে নির্দিষ্ট অংশ তাকে দেবার জন্য জানায়। আর এতেই ক্ষুব্ধ চেয়ারম্যানরা বরাদ্দের সকল কম্বলই উপজেলা পরিষদে বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেরত দিয়ে দেয়। ৬ ইউনিয়ন থেকে ১৮ হাজার ৩০০ কম্বল ফেরত পাঠায় চেয়ার‌ম্যানরা। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা জানান, ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।

শাহজাদপুর উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান পরিষদের সভাপতি গালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন জানান, গত কয়েকদিন আগে প্রতিটি ইউনিয়নের শীতার্ত মানুষের জন্য ৩শ৫০টি করে কম্বল বরাদ্দ দেয় পিআইও অফিস। তারা সেগুলো বুঝে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়েও যান। কিন্তু গত মঙ্গলবার পিআইও অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন ফোন করে সকলকে জানান বরাদ্দ থেকে ২শ কম্বল স্থানীয় সংসদ সদস্যকে দিতে হবে।

তিনি নিজে এগুলো বিতরণ করবেন। পরে সকল ইউপি চেয়ারম্যান বসে সিদ্ধান্ত নেন ইউনিয়ন এলাকায় ১শ৫০টি কম্বল বিতরণ করে কোন লাভই হবেনা। যেহেতু সংসদ সদস্যও শীতার্ত মানুষের মাঝেই কম্বল বিতরণ করবেন। সেক্ষেত্রে পুরো কম্বল তার জন্য বরাদ্দ দিলেই অন্তত তার পছন্দের মানুষগুলো শীতের প্রকোপতা থেকে বাঁচতে পারবে। এজন্যই তারা গাড়াদহ ইউনিয়ন বাদে বাকি সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা কম্বল ফেরত দেবার সিদ্ধান্ত নেন। এবং সেজন্যেই বৃহস্পতিবার ৬টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা তাদের বরাদ্দকৃত কম্বল আবারো উপজেলা পরিষদে ফেরত দিয়েছেন। বাকীরা বিকেলে অথবা রোববারে ফেরত দিয়ে দেবে।

শাহজাদপুর পিআইও অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে তিনি সকল চেয়ারম্যানকে ফোন করে জানিয়েছেন, বরাদ্দকৃত কম্বল থেকে ২শ কম্বল স্থানীয় সংসদ সদস্যদের জন্য রাখতে হবে। এটি তিনি নিজে বিতরণ করবেন। আর বিষয়টি মানতে নারাজ ইউপি চেয়ারম্যানরা। আর এজন্যেই বৃহস্পতিবার সকালে ৬টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা কম্বল ফেরত দিয়ে গেছেন। সেগুলো উপজেলা গুদামে রাখা হয়েছে। তব স্থানীয় সংসদ সদস্য নিজ বাড়ি থেকে নাকি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কম্বলগুলো বিতরন করবেন এমন প্রশ্ন করা হলে পিআইও অফিসের কর্মকর্তা কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্যও জনপ্রতিনিধি। তিনিও বরাদ্দের যে কোন জিনিষ বিতরণ করতেই পারেন। তিনি কম্বলগুলো নিজহাতে বিতরণ করতে চেয়েছেন। সে জন্যেই ইউপি চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে। আর এতে হয়তো চেয়ারম্যানরা ভুল বুঝেছেন। ভুল বোঝাবুঝির কারনে হয়তো কম্বলগুলো ফেরত দিয়েছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে আমি ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে কথা বলে সমাধান করবো।

এবিষয়ে শাহজাদপুর আসনের সংসদ সদস্য অধ্যপক মেরিনা জাহান কবিতার সঙ্গে ফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেন নি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: