নেতাদের ছবিযুক্ত নানা রঙ্গের টি-শার্ট টুপি পড়ে জনসভাস্থলে কর্মীরা

প্রকাশিত: ০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০১:১৬ পিএম

কক্সবাজার শহরের লাবণী পয়েন্ট শেখ কামাল স্টেডিয়ামের মাঠে আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা। সেখানে তিনি কক্সবাজারের ২৮ টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও চারটি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে ভাষণ দেবেন। জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকে নিজ নেতার ছবিযুক্ত নানা রঙ্গের টি-শার্ট আর টুপি পড়ে, ব্যানার হাতে মিছিল নিয়ে জনসভাস্থলে উপস্থিত হচ্ছেন কর্মীরা। সেখানে নিজ নেতার শক্তি জানান দিতে কর্মীরা প্রতিযোগিতা করে দখল করছেন মাঠ। তবে দুপুর ১২ টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোন অপ্রতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উখিয়া,টেকনাফ, রামু, সদর ও চকরিয়া-পেকুয়া দিয়ে নেতাকর্মীরা মিছিল করে, বাদ্য বাজিয়ে সমাবেশস্থলে আসছেন। তখন স্থানীয় নেতা থেকে শুরু করে উপজেলার নেতা ও সংসদ সদস্যেদের ছবিযুক্ত নানা রঙ্গের গেঞ্জি ও টুপি পড়তে দেখা গেছে কর্মীদের। সমাবেশস্থলে আসার আগে নেতা-কর্মী, সমর্থকেরা শহরের কলাতলী এবং বাস টার্মিনাল এলাকায় জড়ো হন। এসব স্থান থেকে মূলত তারা মিছিলসহকারে সমাবেশস্থলে আসছেন।

কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতা-কর্মীরা বাস, ট্রাক, জিপ, টেম্পো, মিনিবাসসহ বিভিন্ন গাড়িতে এসেছেন। মঙ্গল বিকেলে চকরিয়া-পেকুয়া সাংসদ জাফর আলমের অনুসারী ও সকাল সকাল ১০টায় সদর-রামুর সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের ছবিযুক্ত হলুদ টি-শার্ট, টুপি পড়ে নেতাকর্মীরা সমাবেশে এসেছেন। শুধুই যে বিভিন্ন উপজেলার নেতাকর্মী সমাবেশে আগেভাগে যোগ দিচ্ছেন তেমন নয়, জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের অনুসারী, উখিয়া-টেকনাফের সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদি, উখিয়া উপজেলা আ.লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ বিভিন্ন নেতাদের ছবিযুক্ত টি-শার্ট, টুপি পড়ে সমাবেশে আসতে দেখা গেছে কর্মীদের।

কক্সবাজার-৩ আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে কক্সবাজারবাসী প্রস্তুত। আমার নিজ এলাকা থেকে ৫০ হাজার লোক এসেছে। আরও আসছে।

কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে মহেশখালী-কুতুবদিয়ায় হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়নকাজ চলছে। এই এলাকার মানুষ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ। তাই ভোর থেকেই সবাই দল বেঁধে মিছিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় হাজির হয়েছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, ৫ বছর পর বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারে আসছেন। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ও স্থানীয় ইস্যু নিয়ে কথা বলবেন। এ কারণে কক্সবাজারবাসীর মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে।

কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম জানিয়েছেন, কক্সবাজারের সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকার উন্নয়নের মহাযজ্ঞে প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানাতে লাখো জনতা প্রস্তুত। সমুদ্র তীরের মানুষ সমুদ্রের মতো উজাড় করে ভালোবাসা জানাবে প্রিয় নেত্রীকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে ২৮টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। ১ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে ৫৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।

এদিকে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন মো. মাহাবুবুর রহমান জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার সফর ও জনসভাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে চিকিৎসা সেবাদানের জন্য সাতটি বিশেষ মেডিকেল দল গঠন করা হয়েছে।

শেখ হাসিনার কাছে কক্সবাজারবাসীর পক্ষে ১১টি দাবি জানানো হবে। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- কক্সবাজার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সংযুক্তিকরণ, কক্সবাজারের সঙ্গে মহেশখালী উপজেলার সংযোগ সেতু ও বাঁকখালী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ, কুতুবদিয়া-মগনামার মধ্যে ফেরি সার্ভিস চালুকরণ, কক্সবাজার পর্যটন গবেষণা ইনস্টিটিউট, চার লেনের মেরিন ড্রাইভ, ছয় লেনের কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, কক্সবাজার সিটি করপোরেশন, কক্সবাজার সিটি কলেজকে সরকারিকরণ, চকরিয়া উপজেলা মাতামুহুরীকে পৃথক উপজেলা ঘোষণা, ঝিনুক ব্যবসায় জড়িত উচ্ছেদকৃত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন ও স্থায়ী আধুনিক ঝিনুক মার্কেট নির্মাণ।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২ টি অনুষ্ঠানস্থলকে ঘীরে কক্সবাজার জেলা পুলিশ ৪ স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরী করেছে। পুলিশের সদস্যরা পোষাকে, সাদা পোষাকে দায়িত্ব পালন করবেন। সাজানো হয়েছে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। সাথে রয়েছে কঠোর গোয়েন্দা নজর ধারী। এই দুই টি অনুষ্ঠানস্থল ঘীরে সাড়ে ৩ হাজার পুলিশ সদস্য সহ ৪ হাজারের বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: