সেতু নির্মাণ হলেও সরু সড়ক, ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু থাকায় দূর্ভোগ

প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০২২, ০৭:০০ পিএম

১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কুশিয়ারা নদীতে রাণীগঞ্জ সেতু নির্মাণ করে রাজধানী ঢাকার সাথে সুনামগঞ্জ জেলার দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার কমিয়ে আনলেও এর সুফল ভোগ করতে পারছে না যাত্রীরা। বহুল কাঙ্খিত সুনামগঞ্জবাসীর স্বপ্নের রানীগঞ্জ সেতু নির্মাণ হলেও সরু সড়ক, সেই সাথে দুটি ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু থাকায় বিকল্প এই সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করা যাচ্ছে না। এই সেতু চালু হবার পর রাজধানীতে যেতে যাতায়াত সময় কমেছে দুই ঘণ্টা। সেই সঙ্গে যাতায়াত খরচও কমার কথা কিন্তু তাও হয়নি। গণপরিবহনের ভাড়া কমেনি। ফলে যাত্রীদের মধ্যে চরম ক্ষোব বিরাজ করছে।

গত ৭ নভেম্বর সারাদেশে একযোগে একশ সেতুর সঙ্গে সিলেট বিভাগের সবচেয়ে দীর্ঘতম সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা নদীতে রাণীগঞ্জ সেতুরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, উদ্বোধনের এক মাস পার হলেও ঢাকাগামী দূরপাল্লার বাস জগন্নাথপুর-হবিগঞ্জ সড়কে চলছে না। শুধুমাত্র কিছু কিছু পণ্যবাহী যানবাহন, ছোট ছোট গাড়ি চলাচল করছে। সরু সড়ক ও দুটি ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু যেকোনো সময় দূর্ঘটনার আশংকায় বড় যানবাহন বিকল্প এই রুট ব্যবহার করছে না। এজন্য এর সুফল এখনও ভোগ করতে পারেননি জেলাবাসী। কিছু পরিবহন বিকল্প পথে চললেও সেগুলোরও ভাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বশীলরা জানান, ৪৬ কিলোমিটার পাগলা-জগন্নাথপুর-সৈয়দপুরের সড়কে বিভাগের দীর্ঘ রানীগঞ্জ সেতুসহ ৩৬ কিলোমিটার অংশ সুনামগঞ্জ জেলার সীমানায় এবং বাকি ১০ কিলোমিটার হবিগঞ্জ জেলার সীমানায় পড়েছে।

আরও জানাযায়,২০১৬ সালের ১১ আগস্ট মাসে সুনামগঞ্জের পাগলা-জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ-সৈয়দপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীর ওপর রানীগঞ্জ সেতুর কাজ শুরু হয়। ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতু ও আড়াই কিলোমিটার সংযোগ সড়ক কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ২৪ ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড ২৪ বি এবং এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড এমবিইএল। চুক্তি অনুযায়ী ৭০২ দশমিক ৩২ মিটার দীর্ঘ এবং ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থ সেতুটির নির্মাণ কাজ ২০১৯ সালের ১০ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা ৬ বছরে এসে শেষ হয়।

সুনামগঞ্জ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেন, পাগলা-জগন্নাথপুর-সৈয়দপুরের সড়কে দুটি পুরাতন বেইলি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ, সেতুতে একটি বাস উঠলে অপর দিকে অপেক্ষা করতে হয়। এছাড়াও তিন কিলোমিটার সরু সড়কে ভোগান্তির কারণে এইপথ দিয়ে বাস চলাচল করে না। নতুন আঞ্চলিক মহাসড়কের যান চলাচলের জন্য নতুন রোড তৈরি করে ভাড়া নির্ধারিত করার পর পরিবহন গুলোতে ভাড়া কমানো হবে।

সুনামগঞ্জের সচেতন মহল বলছে, কুশিয়ারা নদীর ওপর সিলেট বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় সেতু হয়েছে। অথচ এই সড়কেরই দুটি ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু নির্মাণ কাজ সমন্বয়হীনতার কারণেই হচ্ছে না ফলে বিকল্প সড়কের সুবিধা পাচ্ছে না সুনামগঞ্জবাসী।

সুনামগঞ্জ বিআরটিএ অফিসের মোটরযান পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম জানান, নতুন সড়ক পথে কিছু সমস্যা থাকায় সেগুলো ঠিক করার পর পরিবহন মালিকরা ঢাকা অফিসে নতুন রোডের জন্য আবেদন করবেন। পরে যাচাই বাছাই করে অনুমোদন ও নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হবে।

সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম বলেন, পাগলা-জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে সুনামগঞ্জ-রাজধানী ঢাকা যাওয়ার পথে ঝুঁকিপূর্ন বেইলি সেতু ভেঙে নতুন করে করার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: