'বহিরাগতদের দখলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস'

প্রকাশিত: ১৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:১৩ এএম

মোঃ আবু দারদা লিমন, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঢাকা শহরের অদূরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি। এই সৌন্দর্যের টানেই ছুটির দিনে অসংখ্য দর্শনার্থী ক্যাম্পাসে ছুটে আসে। তবে গত কয়েকদিন থেকে ক্যাম্পাসে অসংখ্য বহিরাগত এর আনাগোনা দেখা যাচ্ছে।

বিশেষ করে আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে মাত্রাতিরিক্ত দর্শনার্থী চোখে পড়ে। তাদের ক্যাম্পাসের কোনো নিয়ম মানতে দেখা যায়নি। তারা যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলছিল এবং মাত্রাতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলো। ক্যাম্পাসের সর্বত্র বহিরাগত দর্শনার্থী এর আনাগোনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিড়ম্বনার স্বীকার হচ্ছেন বলে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।

ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তাহজিব নূর তৌনিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'বহিরাগতদের কারনে আমার নিজের ক্যাম্পাসেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বহিরাগতদের কারনে যেকোন সময় বহিরাগত দ্বারা কোনো দূর্ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার কে নেবে? বহিরাগতরা যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলছে দেখলাম, যা ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিবেশ নষ্ট করতেছে। এছাড়া, বহিরাগতরা ক্যম্পাসে মাত্রাতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছে যা শিক্ষার্থীদের জন্য চড়ম হুমকিস্বরুপ।'

পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মঈনুর রহমান বলেন, 'ক্যাম্পাসে মেলার ব্যবস্থা করে বহিরাগতদের নিমন্ত্রণ দিয়ে ডেকে নিয়ে আসা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ক্যাম্পাসকে অফিসিয়ালি বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত করেছে প্রশাসন। বহিরাগতদের কারনে ক্যাম্পাসে ঠিকমতো চলেফেরা করা যাচ্ছে না। এত বহিরাগতদের মাঝে নিজেকেই বহিরাগত মনে হয়েছে আজকে। প্রশাসন এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে ক্যাম্পাসকে শিক্ষার্থীদের চলাফেরার উপযুক্ত করে তুলবেন বলে আশা করছি।'

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, 'ক্যাম্পাসে বহিরাগত ঢুকতে আটকাতে হবে এমন কোনো আদেশ বা আইন আমাদের উপর নেই। আমি ভিসি মহোদয়ের কাছে ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জন্য আপিল জানিয়েছিলাম। কিন্তু তার ফলাফল এখনো পাইনি। আমাদের উপর কোনো আদেশ নেই যে বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া যাবেনা। তবে ক্যাম্পাসের মধ্যে বহিরাগতরা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটালে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যাবস্থা আমরা নিব এবং নিচ্ছি।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ-উল-হাসান এর কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'তারা বিনোদনের জন্য আসলে অবশ্যই তাদের আটকাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কোনো বিনোদন কেন্দ্র না।'

আজকে বহিরাগতদের কেন আটকানো হলো না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আজ তো আমরা হলে ব্যাস্ত ছিলাম, বাইরে যাওয়ার সুযোগ হয়নাই। আগামীকাল থেকে ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশে বাঁধা দেওয়া হবে।'

এর আগে, গত ১২ ডিসেম্বর মুক্তমঞ্চে কনসার্টকে কেন্দ্র করে অসংখ্য বহিরাগত প্রবেশ করে। সেদিন কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে এবং কয়েকজন বহিরাগত ও শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল থেকে চিকিৎসাও নেয় বলে জানা যায়। এছাড়া, সম্প্রতি ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আনাগোনা আগের তুলনায় অনেকগুন বেড়ে গেছে বলে দৃষ্টিগোচর হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: