বড় দুর্নীতির তদন্ত আগে করতে হবে, দুদককে হাইকোর্ট

প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:২৬ এএম

রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডিন্স’-এর এক থেকে ২৫ নম্বরে থাকা ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আগে অনুসন্ধান ও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) দেওয়া এক রায়ে এ নির্দেশ দেন। শনিবার সংশ্লিষ্ট কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আশেক মোমেন সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ দিন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির টেকনিশিয়ান আব্দুর রহিমকে পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের মামলায় দেওয়া সাজার রায় বাতিলের নির্দেশ দেন আদালত।

আদেশে আদালত বলেছেন, সার্বিক পরিস্থিতিতে আদালতের কাছে এটি স্পষ্ট প্রতীয়মান যে, দুদক হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ৫০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকার অতি সাধারণ দুর্নীতির পেছনে জনগণের লাখ লাখ টাকা ব্যয় করছে।

আদালত আরও বলেছেন, পত্র-পত্রিকায় দেখা যাচ্ছে যে, পাঁচ হাজার টাকার একটি মোকদ্দমার জন্য দুদকের পাঁচ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ২০ লাখ টাকার মতো খরচ হয়। জনগণের কষ্টের টাকায় এই পাঁচ হাজার টাকার দুর্নীতি প্রতিরোধ, মামলা দায়ের থেকে আপিল বিভাগ পর্যন্ত আট থেকে ১০ লাখ টাকা ব্যয় করা কতটুকু সমীচীন? আমরা দেখি হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হচ্ছে এবং হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে। সুতরাং দুর্নীতি দমন কমিশনকে এই মর্মে নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে যে, আজ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন শুধুমাত্র ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডিন্স’-এর ১ থেকে ২৫ পর্যন্ত পদধারী কর্মকর্তা বা এই ধরনের সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আগে অনুসন্ধান ও তদন্ত করবে।

এরপর ব্যাংক পরিচালক, ব্যাংকের মালিক, ব্যাংকের এমডি, ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং ব্যাংকের সিইও- এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধান করবে এবং বড় আন্তর্জাতিক ক্রয় আদেশসহ রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ খাত, হাজার হাজার কোটি টাকা যেখানে সম্পৃক্ত, সেসব মামলা প্রথমে বিবেচনায় নিয়ে এখন থেকে দুদক তদন্ত করবে। এসব ক্ষেত্রে যখন আর কোনো অভিযোগ কিংবা দুর্নীতির আলামত না থাকবে তখন কেবল দুদক এই ধরনের লোকের (ক্ষুদ্র কর্মচারী) বিরুদ্ধে মামলা মোকদ্দমা গ্রহণ এবং দায়ের করবে। উপরের নির্দেশনা দুদককে এখন থেকে অনুসরণ করতে হবে।

উল্লেখ্য, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডিন্সের ২৫তম পদ পর্যন্ত আছেন মন্ত্রী, এমপি, সচিব, জেলা প্রশাসক, ইউএনওসহ আইন, বিচার ও প্রশাসন বিভাগের সম পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: