পুলিশের ওপর হামলা: জামায়াতের বিরুদ্ধে ডিএমপির মামলায় আসামি ৫ হাজার

প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:১৩ পিএম

রাজধানীর মৌচাক-মালিবাগ এলাকায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জামায়াতের নেতা-কর্মীদের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাতদের আসামি করে মতিঝিল ও রমনা বিভাগের চার থানায় পাঁচটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় ৩০৪ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাত পাঁচ হাজার নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। প্রতিটি মামলার বাদী পুলিশ। এখনো পর্যন্ত এসব মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) ইমরান হোসেন মোল্লা।

তিনি বলেন, শুক্রবার জামায়াতে ইসলামী অনুমতি না নিয়েই গণমিছিল শুরু করে। গণমিছিল থেকে জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত থাকা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা ও মারধর করা হয়। এতে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১১ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনার পর শুক্রবার রাতে ও শনিবার রাজধানীর চার থানায় পাঁচটি মামলা করেছে পুলিশ।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, খিলগাঁও থানায় মামলার বাদী উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম। তাঁর মামলায় ৭৫ জামায়াত নেতা-কর্মীর নামোল্লেখ করে মামলা করা হয়। রমনা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) কুমার কর্মকার বাদী হয়ে ৯২ জামায়াত নেতা-কর্মীর নামোল্লেখ করে মামলা করেছেন। শাহজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হায়াত আলী বাদী হয়ে ৭৩ জামায়াত নেতা-কর্মীর নামোল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও ৯০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।

এছাড়া এই ঘটনায় রামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মারুফ হোসেন বাদী হয়ে ৬৪ জামায়াত নেতা-কর্মীর নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও চার হাজার জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলায় ওয়ার্ড আমিরসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চার থানার পাঁচ মামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের গ্রেপ্তারের তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে জামায়াতের মিছিল থেকে হামলার ঘটনাকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আজ শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, জামায়াতে ইসলামী পুলিশের কাছ থেকে গণমিছিলের অনুমতি নেয়নি। আমরা বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি। যেহেতু তাঁরা বিনা অনুমোদনে একটা মিছিল বের করেছে, পুলিশের ওপর হামলা করেছে। সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাসহ আরও পুলিশ সদস্যরা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা-মোকদ্দমা করা হবে। অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়ার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। এভাবে বেআইনি কাজ করা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার বিষয়ে কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।

গতকাল শুক্রবার পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গোয়েন্দা নজরদারির ব্যর্থতা রয়েছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, গোয়েন্দা নজরদারি ছিল না বিষয়টি এরকম নয়। আমরা কিছু তথ্য পেয়েছিলাম। তাঁরা (জামায়াতের নেতা-কর্মীরা) বিভিন্নভাবে ছড়িয়েছে, তাঁরা বায়তুল মোকাররমের সামনে থেকে মিছিল করবে। কিন্তু তারা মালিবাগ চৌধুরীপাড়া আবুল হোটেলের সামনে থেকে মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। বাধা পেয়ে মৌচাক-মালিবাগে এসে মিছিল করে।

এদিকে গণমিছিলের সময় পুলিশের ওপর হামলার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াত। দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, গণমাধ্যমে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার বক্তব্যে আমরা বিষ্মিত হয়েছি। জামায়াত একটি নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বাংলাদেশে রাজনীতি করছে। প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। বরং জামায়াতের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে হস্তক্ষেপ করে সংবিধান লঙ্ঘন করা হচ্ছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: