শ্রমিক লীগ নেতাকে মারধর করে ‘আব্বা’ ডাকাল দুই তরুণ!

প্রকাশিত: ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০১ এএম

বরগুনা সদরে এম বালিয়াতলী ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন গাজী (৪৮) মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার (১ জানুয়ারি)  রাত আটটার দিকে স্থানীয় বাপ্পি (২৪) ও হাসিব (২২) নামের দুই তরুণের নেতৃত্বে চালিতাতলী বাজার থেকে দেলোয়ার গাজীকে ডেকে নিয়ে একটি মাঠে তাঁকে মারধর করা হয়। মারধরের একপর্যায়ে বাপ্পিকে ‘আব্বা’ ডাকিয়ে ভিডিও ধারণ করা হয়েছে।

ভারাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, দেলোয়ার গাজীকে ঘিরে কয়েকজন যুবক দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন একটি পাইপ দিয়ে তাঁর শরীরে আঘাত করছেন। এ সময় ‘বাপ্পি আমারে আর মারিস না’ বলে আকুতি করছেন দেলোয়ার গাজী। এ সময় বাপ্পি নামের ওই যুবক তাঁকে আব্বা ডাকতে বলছেন। মারধর থেকে রেহাই পেতে দেলোয়ার গাজী তখন আব্বা ডাকছেন।

ভুক্তভোগী শ্রমিক লীগ ও যুবলীগ নেতা দেলোয়ার গাজী জানান, ‘ইউনিয়নের উড়বুনিয়া এলাকার বিন্দু চৌকিদারের ছেলে বাপ্পি এবং একই এলাকার বাদল চৌকিদারের ছেলে হাসিবের নেতৃত্বে চালিতাতলীতে একটি গ্যাং বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মাদক সেবন ও ব্যবসার পাশাপাশি ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ইভ টিজিংসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড করে এই বাপ্পি-হাসিব গ্রুপ। এরা মাদক পকেটে ঢুকিয়ে দিয়ে মোবাইল ও টাকাপয়সা ছিনতাই করে। আমি এসবের প্রতিবাদ করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল (রোববার) রাত আটটার দিকে কথা বলার জন্য বাজার থেকে আমাকে পাশের একটি মাঠে ডেকে নেয়। '

পরবর্তীতে বাপ্পি, হাসিবসহ ৭–৮ জন মিলে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে ও আমাকে এলাকা ছাড়তে বলে। ওই সময় আমার জীবন বাঁচাতে আমাকে যা বলেছে, তখন তাই করেছি।’দেলোয়ার গাজী আরও বলেন, ‘আমি চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছি। সুস্থ হয়ে ফিরে এসে আইনের আশ্রয় নিতে চাই।’

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, গত বছরের অক্টোবর মাসে সুমন নামের এক যুবককে একই প্রক্রিয়ায় ধরে নিয়ে চালিতাতলী নদীর পাড়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন অভিযুক্তেরা। এ সময় সুমনকেও কান ধরে ওঠবস করিয়ে ভিডিও ধারণ করে বাপ্পি ও হাসিব গ্রুপের সদস্যরা। ওই ঘটনার ভুক্তভোগী চালিতাতলী এলাকার মো. সুমন মিয়া বলেন, ‘বাপ্পি ও হাসিব এলাকায় মাদক কারবার থেকে শুরু করে নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তাদের অপরাধ কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় আমাকে মারধর করে কান ধরে ওঠবস করিয়েছিল বাপ্পি ও হাসিব গ্যাং। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে বরগুনা সদর থানায় মামলা করেছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাপ্পি ও হাসিব গ্রেপ্তার হয়নি।’

এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ জানান, ‘দেলোয়ার গাজীকে মারধরের একটি ঘটনা শুনেছি। এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ বা মামলার জন্য কেউ আসেনি। মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এর আগে ভুক্তভোগী সুমনের মামলা প্রসঙ্গে ওসি বলেন, ‘ওই ঘটনার তদন্ত চলছে। আসামিদের ধরতে একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তবে এখনো আটক সম্ভব হয়নি।’

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: