যমুনা সার কারখানার জিএম লাঞ্ছনার শিকার

প্রকাশিত: ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:২২ পিএম

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যমুনা সার কারখানার জিএম (প্রশাসন)কে লাঞ্ছনা শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সিবিএ সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়। ঘটনা তদন্তে আজ ৩ জানুয়ারি তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কারখানার এমডি শহীদুল্লাহ খান।

কারখানার একটি সূত্রে জানা গেছে, গ্যাস সংকটে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ২০ ডিসেম্বর উৎপাদনে যায় যমুনা সার কারখানা। এরপর থেকে যমুনা সার কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যথা সময়ে কাজে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট। এর ধারাবাহিকতায় ২ জানুয়ারি সকালে যমুনার এমডির নির্দেশে কারখানা গেটে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাজিরা পর্যবেক্ষণ করছিলেন জিএম (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টায় কাজে যোগদানের সময় নির্ধারিত রয়েছে। তা উপেক্ষা করে ব্যাগিং সেকশনের মাষ্টার অপারেটর ও সিবিএ মঈন উদ্দিন সকাল ৯টায় কারখানা গেটে আসেন।

তখন তাকে হাজিরা খাতায় সময় উল্লেখ করে স্বাক্ষর করতে বলেন জিএম প্রশাসন। এতে ব্যাগিং সেকশনের মাষ্টার অপারেটর মঈন উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে উঠেন। শুধু তা-ই নয়। সে যমুনা সার কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক হওয়ার দাপটে সিবিএর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে এ বিষয়ে নালিশ করেন।

এতে সিবিএর সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী উত্তেজিত হয়ে উঠেন। পরে তারা অন্য শ্রমিকদের নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের পাশে জটলা তৈরি করেন। ২ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এ জটলা চলাকালে জিএম দেলোয়ার হোসেন প্রশাসনিক ভবনের নীচে নেমে আসেন। তাকে দেখে সিবিএর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। পরে তারা দেলোয়ার হোসেনকে কারখানা থেকে বের করে দেন। জিএম কারখানার গাড়ি দিয়ে বাইরে রওনা দিলে এসময় সভাপতি ও সম্পাদক তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন। কারখানার গাড়িতেও তাকে চড়তে দেওয়া হয়নি।

বিষয়টি জানাজানি হলে বিসিআইসির জিএম (পার্সেল) শহিদুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে জিএম (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন বলেন, কারখানার এমডির নির্দেশে দেরিতে কাজে যোগদানকারী শ্রমিক-কর্মচারীদের পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। আধাঘণ্টা দেরিতে কাজে যোগ দিতে আসেন মঈন উদ্দিন। এ কারণে তাকে হাজিরা খাতায় সময় উল্লেখ করে স্বাক্ষর করতে বলা হয়। এনিয়ে সিবিএর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাকে কারখানা থেকে বের করে দেয়। কারখানার গাড়ি দিয়ে বের হওয়ার সময় গাড়ি থেকে নামিয়ে লাঞ্চিত করে কারখানা থেকে বের করে দেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে যমুনা সারকারখানার শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী বলেন, ২ জানুয়ারি কারখানা গেটে সিবিএকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন জিএম দেলোয়ার হোসেন। এনিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় জিএম (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসনকে লাঞ্চিত করার কোন ঘটনা ঘটেনি। শুধু কারখানার গাড়ি থেকে তাকে নামিয়ে দিয়ে হেঁটে হেঁটে বাইরে পাঠানো হয়েছে।

যমুনা সার কারখানার (এমডি) শহীদুল্লাহ খান বলেন, লাঞ্ছিত করার ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে বিসিআইসির জিএম (পার্সেল) শহীদুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: